গোদাগাড়ীতে প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মেরিনার বিদা-য়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

রাজশাহী মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী ডিগ্রী কলেজে আজ ৩০ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার
সকাল ১০ টায় সমাজকর্ম বিভাগের স্বনামধন্য সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান জ মেরিনা বেগমের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কলেজের অধ্যক্ষ ( ভারপ্রাপ্ত ) মোঃ জামিউল আরিফ
​সভাপতিত্বে ​প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি এহসানুল কবির

সম্মান জানাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বনামধন্য শিক্ষাবিদগণ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, প্রফেসর ড. জোবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা ,
রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, (সমাজকর্ম), প্রফেসর ড. সেলিম রেজা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের
প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ,
রাজশাহী কলেজের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান, সমাজকর্ম, প্রফেসর বেগম রোকেয়া প্রমূখ।

জানা গেছে বিদায়ী মেরিনা বেগমের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ যাঁরা ছিলেন ব্যক্তিগত জীবনে সহপাঠী, বন্ধু ও ক্লাসমেট ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কলেজের প্রভাষক মেহেদী মনজুর।

​ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ বিদায়ী অধ্যাপক সম্পর্কে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন, কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগ সহকারী অধ্যাপক ড. উম্মে নাহার, সহকারী অধ্যাপক অবসরপ্রাপ্ত,
মোঃ আসাদুজ্জামান, সহকারী অধ্যাপক মোঃ এখলাসুর রহমান: , হিসাববিজ্ঞান বিভাগ।

​কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মোঃ আনোয়ারুল করিমের
সঞ্চালনায় বক্তরা বলেন,​প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, স্বনামধন্য সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান জনাব মেরিনা বেগম — যিনি তাঁর মেধা, প্রজ্ঞা ও অনন্য কর্মদক্ষতা দিয়ে প্রতিষ্ঠানে সর্বদা জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন। মেরিনা বেগম ১ নভেম্বর, ১৯৬৫ সালে রাজশাহী মিশন হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন শ্রদ্ধেয় পিতা মোঃ মুসলেম উদ্দিন ও মাতা জেবুন নাহার বেগমের ঘর আলো করা কনিষ্ঠতম সন্তান।

জন্মলগ্ন থেকেই অসম্ভব মেধার অধিকারী মেরিনা বেগমের শিক্ষাজীবনের শুরু রাজশাহীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ সরকারি পিএন গার্লস হাইস্কুলে। সেখান থেকে ১৯৮০ সালে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করে তিনি ভর্তি হন বাংলাদেশের সেরা শিক্ষাঙ্গনগুলির অন্যতম রাজশাহী কলেজে। রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে এইচএসসি-তে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে ভর্তি হয়ে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

​তাঁর কর্মজীবনের শুরু ১৯৯৩ সালে প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজে সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক হিসেবে। দীর্ঘ পথচলায় ২০১৭ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান এবং যোগদানের পর থেকে তিনি একই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দায়িত্বকালে তিনি স্বীয় নিষ্ঠা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সমাজকর্ম বিভাগকে কলেজের অন্যতম সেরা বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

শিক্ষার্থীদের মাঝে কেবল গতানুগতিক একাডেমিক জ্ঞান নয়, তিনি সর্বদা বাস্তব সমাজসম্পর্কিত গভীর জ্ঞান সঞ্চারিত করেছেন। ব্যক্তি, দল ও সমষ্টি পর্যায়ে সমাজকর্মের জ্ঞানকে কিভাবে কাজে লাগিয়ে কার্যকরভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়, সেই মূল্যবান দীক্ষা তিনি নিরন্তর প্রদান করে গেছেন।

​পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতে ছিল তাঁর গভীর অনুরাগ। রাজশাহী শহরের ‘সুরবাণী সঙ্গীত বিদ্যালয়ে’ তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেন। প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজের প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানে তাঁর সুরময় কণ্ঠের গানে মুগ্ধ হতেন সকলে।

​ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৯০ সালে তিনি ইকবাল আহমেদুল কবিরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং বর্তমানে তিনি দুই মেধাবী কন্যা সন্তানের জননী। মায়ের পথ অনুসরণ করে তাঁর বড় মেয়ে মনিকা কবির রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে বিএসসি ও এমএসসি সম্পন্ন করে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন এবং বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার মারডগ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণারত আছেন। তাঁর ছোট মেয়ে আনিকা কবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে মার্কেটিং বিভাগ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছেন।

প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজের পক্ষ থেকে আমরা এই গুণী শিক্ষাবিদের সর্বাঙ্গীন কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করা হয়। তাঁর কর্মময় জীবনের মতো প্রাজ্ঞ ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক তাঁর অবসর জীবনও, আপনার প্রতি রইল প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা, বিদায়ী সংবর্ধনা ও অজস্র শুভকামনা করা হয়েছে।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *