ডাঃ জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের পদন্নোতিতে কুমিল্লা বাসী আনন্দিত

কুমিল্লা থেকে তরিকুল ইসলাম তরুন ।।

চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কুমিল্লার মফস্বল ও শহর অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসা ডা. জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর সম্প্রতি কুমেকের সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর এই পদোন্নতিতে চিকিৎসক সমাজ,সাংবাদিক সমাজ,রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সহকর্মী, শিক্ষার্থী, রোগী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবং কুমেক সূত্রে জানা যায়
ডা. বাবর এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (চর্ম ও যৌন) ডিগ্রিধারী। তিনি ডার্মাটো সার্জারিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ভারত, থাইল্যান্ড ও দুবাই থেকে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি শিক্ষক ও চিকিৎসক—দুই ভূমিকাতেই সমানভাবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর আন্তরিকতা ও শিক্ষণপদ্ধতি একাডেমিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত। তাঁর শিক্ষার্থীরা বলেন, “ডা. বাবর স্যার কেবল একজন শিক্ষক নন, তিনি আমাদের অভিভাবকও বটে। তিনি সবসময় রোগীর কষ্ট বুঝতে শেখান এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চিকিৎসা করতে উদ্বুদ্ধ করেন।”
রোগীদের কাছেও তিনি একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে সমানভাবে পরিচিত। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, অসহায় ও প্রান্তিক মানুষের প্রতি তাঁর সহানুভূতিশীল আচরণ তাঁকে কুমিল্লা অঞ্চলের জনপ্রিয় চিকিৎসকদের মধ্যে অনন্য করেছে। বিভিন্ন সময়ে তিনি সংগঠনের উদ্যোগে ও নিজস্বভাবে “ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প” আয়োজন করে হাজার হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রেই তিনি রোগীর আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে চিকিৎসা ফি নেননি। চিকিৎসা সেবাকে তিনি শুধুমাত্র পেশা নয়, এক মানবিক দায়িত্ব হিসেবেই দেখেন।
ডা. জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বর্তমানে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)-এর কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে সংগঠনটি নিয়মিতভাবে চিকিৎসক কল্যাণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সেবামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে তিনি সহকর্মী চিকিৎসকদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে গিয়ে সরাসরি চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন এবং অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
চিকিৎসা কার্যক্রমের পাশাপাশি তিনি সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে তিনি দরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়ান, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেন এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত বক্তৃতা দেন। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ত্বক পরিচর্যা, যৌনস্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে তাঁর উদ্যোগ প্রশংসিত।
মানবিক গুণাবলি, পেশাদারিত্ব এবং সমাজসেবার মনোভাবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ডা. বাবর চিকিৎসা পেশায় এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। সহকর্মীদের মতে, তিনি সবসময় রোগী, সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখেন। তিনি বিশ্বাস করেন, “একজন চিকিৎসকের প্রকৃত সফলতা তখনই আসে, যখন তাঁর রোগী শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবে আশ্বস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারে।”
পদোন্নতির পর এক প্রতিক্রিয়ায় ডা. জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, “এ অর্জন শুধু আমার নয়, এটি আমার সহকর্মী, শিক্ষার্থী, রোগী এবং পরিবার— সবার যৌথ প্রেরণার ফসল। চিকিৎসা মানে কেবল রোগ সারানো নয়, এটি এক মানবিক দায়িত্ব, এক আজীবনের অঙ্গীকার।”
স্থানীয় চিকিৎসক সমাজ ছাড়াও ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহ নানা পেশার মানুষ তাঁর পদোন্নতিতে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, “ডা. বাবর এমন একজন চিকিৎসক, যিনি নিজের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি সমাজের প্রতি ও দায়বদ্ধ। তাঁর মতো মানবিক ও সৎ চিকিৎসকরা দেশের গর্ব।”
ডা. বাবর শুধু চিকিৎসক হিসেবেই নয়, একজন সফল শিক্ষক ও নেতৃত্বগুণসম্পন্ন সংগঠক হিসেবেও পরিচিত। তাঁর নেতৃত্বে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে গবেষণা, সেমিনার ও চিকিৎসাবিষয়ক কর্মশালার পরিসর বেড়েছে। তরুণ চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের তিনি নিয়মিতভাবে গবেষণা ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে উৎসাহিত করেন।
ডা. জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের শিকড় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল উত্তরপাড়া গ্রামে। তিনি এক শিক্ষিত ও সম্মানিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা অধ্যাপক আমীর হোসেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ এবং কুমিল্লা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিশিষ্ট শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর বাবার অবদান এবং মানবিক মূল্যবোধই ডা. বাবরের জীবনে প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।
শৈশবে তিনি শংকুচাইল হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরবর্তীতে কুমিল্লা হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে বরিশাল মেডিকেল কলেজ থেকে মেধার স্বাক্ষর রেখে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তিনি ২৫তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এবং এরপর ধাপে ধাপে তাঁর কর্মনিষ্ঠা ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাঁর আন্তরিকতা, সামাজিক সচেতনতা এবং জনকল্যাণে নিরলস কাজ তাঁকে কুমিল্লার মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে দিয়েছে। সহকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ— সবার কাছেই তিনি একজন “মানবিক ডাক্তার” হিসেবে পরিচিত। আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা বিস্তারে তিনি সরাসরি ও পরোক্ষভাবে একাধিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
কুমিল্লার চিকিৎসা অঙ্গনে যাঁরা ডা. বাবরকে কাছ থেকে চেনেন, তাঁরা বলেন— “তিনি শুধু ভালো চিকিৎসক নন, একজন ভালো মানুষও। তাঁর আচরণ, কর্মনিষ্ঠা ও মানবিকতা আগামী প্রজন্মের চিকিৎসকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”
সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে তাঁর এই পদোন্নতি কেবল ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ এবং জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য এক গৌরবের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *