মংচিন থান
তালতলী(বরগুনা)প্রতিনিধি।।
বরগুনার তালতলী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মিয়া. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ জনপ্রিয় নাম। তিনি দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভরসা ও আশ্রয়স্থল। মানবিক এই নেতার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালন করে আসছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, দলের দুঃসময়ে সাহসী নেতৃত্ব, আইনি সহায়তা ও আর্থিক সহযোগিতায় পাশে ছিলেন তিনি। তাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জনপ্রিয় বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার চান উপজেলা বিএনপি ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে মিয়া. মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির হাতেখড়ি হয়। পরে তালতলী ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ-সম্পাদক ও আহ্বায়ক -এর দায়িত্ব পালন করেন। বরিশাল বি.এম. কলেজ ছাত্রলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, তালতলী উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ-সম্পাদক, বরগুনা জেলা ছাত্রদলের সদস্য ও বরগুনা জেলা বিএনপির সদস্য হন। এরপর বিপুল ভোটের ব্যবধানে তালতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০২৪ সালের ৫ জুন চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। কিন্তু দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হলেও ৫ আগষ্ট পূর্ববর্তী কালীন সময়ে ১দফাসহ দলীয় নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয় তার নেতৃত্বে। বর্তমানেও দলীয় যেকোন কর্মসূচিতে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে তার রয়েছে স্বরব উপস্থিতি। তিনি দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে ২০০৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ওয়ান ইলেভেন সরকার ও ফ্যাসিষ্ট সরকার কতৃক ২৫ টি মামলায় আসামি হয়ে ৪ বার কারাবরণ করেন।
তৃণমূল নেতাকর্মীরে ভাষ্য মতে, তিনি ফ্যাসিবাদ বিরোধী দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে জেল-জুলুম, নির্যাতন, গ্রেপ্তার, মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। তার নেতৃত্বে হাজার হাজার তৃণমূল নেতাকর্মীরা রাজপথে থেকে বিভিন্ন সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন সচল রেখেছিলেন। বারবার কারাবরণ করেও তিনি কখনো আপস করেননি। অনেক সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আহতকর্মীরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, জেলহাজতে থাকা পরিবারগুলোকে আইনি সহায়তা করেছেন। এ কারণেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা বেশি। এছাড়াও দলীয় আনুগত্য এবং জিয়া পরিবারের প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন, ভালোবাসা, বিরামহীনভাবে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর নেওয়ার যে মানসিকতা তা জিয়া পরিবারের মানবিক রাজনীতির মতোই উজ্জ্বল। প্রতিহিংসামুক্ত রাজনৈতিক সংস্কৃতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের কারণে সাধারণ মানুষ ও বিরোধী মতের মানুষও তার প্রতি সন্তুষ্ট। তাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের প্রাণভোমরা, জনপ্রিয় ও মানবিক বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার চান উপজেলা বিএনপি ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
তালতলী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান সুমন, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মিয়া. রিয়াজুল ইসলাম, শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আল-আমিন হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসলাম আকন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিয়া. শামীম আহসান, মিঃ মংসেলেন, লিটন মোল্লা বলেন, ‘তার নেতৃত্বে আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করেছি। এ সময় আমরা জেল-জুলুম, নির্যাতন, গ্রেপ্তার, মামলা, হামলার শিকার হয়েছি। তিনি দলের দুঃসময়ে উপজেলা বিএনপি ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। তাই আমরা উপজেলা বিএনপি, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ তৃনমূলের সকল নেতাকর্মীরা বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারী মিয়া মোস্তাফিজুর রহমানের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাই। তার মতো নির্যাতিত নেতা বিএনপিতে প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে মিয়া. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রয়াত বাবা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের একনিষ্ঠ কর্মী ও সমর্থক ছিলেন। বাবার হাত ধরেই আমার বিএনপির রাজনীতিতে পদার্পণ। রাজনীতি করতে হলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের নানান প্রত্যাশা থাকে। আমি কর্মী-সর্মকদের প্রত্যাশা ও জনগণের চাপে পড়ে নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছিলাম। তবে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করা আমার ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। যেহেতু দলের দুঃসময়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি আশা করি দল আমার এই ভুল শুধরানোর সুযোগ দিবেন। আমি আমার প্রয়াত বাবার দেখানো পথে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’তে অমৃত্যই থাকব।’
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা বলেন, ‘মোস্তাফিজুর রহমানের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে দলের হাইকমান্ডে আবেদন দেওয়া আছে। আশা করি, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করবে।
মংচিন থান
তালতলী প্রতিনিধি।

Leave a Reply