স্টাফ রিপোর্টারঃ
৩০ লাখ টাকার চুক্তিবদ্ধ হয়ে অধ্যক্ষসহ পাঁচ পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হবার আট মাস পর সেই নিয়োগ পরীক্ষার কাগজপত্রে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর দেখিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এক উপ পরিচালক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা আইসিটি অফিসার ও গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
পটুয়াখালীর সদর উপজেলাধীন মরিচবুনিয়া ইসলামিয়া নেছারিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষসহ পাঁচ পদের নিয়োগে এমন অভিযোগ উঠেছে।
আট মাস আগে স্থগিত হওয়া এই নিয়োগ পরীক্ষা খাতা কলমে নিয়োগ দেখিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করিয়ে এমপিওভুক্ত করার জন্য ৩০ লাখ টাকার চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন খোদ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদার। এরমধ্যে কোয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে একটি হোটেলে বসে ১০ লাখ টাকা অগ্রিম নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন অর্থ দেওয়া নিয়োগ প্রত্যাশী অধ্যক্ষ প্রার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পটুয়াখালীর সদর উপজেলাধীন মরিচবুনিয়া ইসলামিয়া নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসার দাতা, অভিভাবক সদস্য ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব পালন নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের আলোকে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করার ৮ মাস পর অসম্পন্ন নিয়োগ পরীক্ষা খাতা কলমে সম্পন্ন দেখিয়ে এবং ব্যাকডেটে স্বাক্ষর দিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আর এই জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধদিপ্তরের ডিডি আরিফুর রহমান মজুমদার, পটুয়াখালীর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফফাত আরা জামান উর্মি, মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফাতেমা ইয়াসমিন, মাদ্রাসার সাবেক গভর্নিং বডির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা কাউছার মাহমুদ ও উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মোঃ শাহ মুসাব্বির মিরাজ এই নিয়োগ কার্যক্রমে ৭০ লাখ টাকার ঘুস লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে । এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নিজে ও অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রত্যাশী আলমগীর হোসাইনের সাথে নিয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র অধিদপ্তরে ডকেট (জমা) করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২ আগষ্ট নামসর্বস্ব জাতীয় দৈনিক ‘আজকের প্রভাত’ ও স্থানীয় দৈনিক গণদাবী পত্রিকায় অধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম-হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে অতি গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। নিয়োগ বোর্ডে ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি মনোনয়ন দেওয়া হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে মরিচবুনিয়া ইসলামিয়া নেছারিয়া আলিম মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফফাত আরা জামান উর্মির কার্যালয়ে এই নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। অবৈধ লেনদেন, গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পূর্ব নির্ধারিত প্রার্থী সিলেক্ট করে ড্যামী প্রার্থীদের দিয়ে আবেদন করানো হয়েছে মর্মে অভিযোগ তুলে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে মাদ্রাসাটির জমিদাতা, অভিভাবক সদস্য ও মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী উপস্থিত হয়ে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গভর্নিং বডির সভাপতি ইফফাত আরা জামান উর্মি। পরের দিন স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে কেন নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছেন তার এক ভিডিও স্বাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বলেন ইউএনও। নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হলে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রেখে নিয়োগ বোর্ডের ডিজি প্রতিনিধিসহ সকল সদস্য স্থান ত্যাগ করেন।
নিয়োগ পরীক্ষা আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমে স্থগিত করার ঘোষণা দিলেও সম্প্রতি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো পাঁচ পদের নিয়োগের কাগজপত্রে ইউএনও প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের প্যাডে ইউএনও ইফফাত আরা জামান উর্মি স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্রে উল্লেখ করা হয়, “প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইসলামিয়া নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসার নিন্মলিখিত (পাঁচ পদে) সৃষ্ট ও শুন্য পদে বিগত ০১ ফেব্রুয়ারি-২০২৫ খ্রি. তারিখ সকাল ১০ টায় ইউএনওর কার্যালয়ের তাঁর সভাপতিত্বে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি প্রতিনিধির এবং সদস্য সচিবসহ নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যগণের উপস্থিতিতে বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়।”
মাদ্রাসা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলছে, এই নিয়োগ নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় গত জুন (২০২৫) মাসে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি (অতিরিক্ত সচিব) আব্দুল মান্নান, পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ আবুল কালাম তালুকদার অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ইউএনও’র কাছে ফোন করেন। তিনি ইউএনও’র কাছে জানতে চান তিনি ব্যাকডেটে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেছেন কি’না, ইউএনও সে সময় স্থগিত নিয়োগের কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেননি বলে জানালেও পরবর্তীতে নিয়োগের কাগজ পত্রে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর দিয়ে এবং সঠিক ভাবে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন পত্র দেন।
এই নিয়োগ পরীক্ষায় অধ্যক্ষ পদে প্রার্থী হওয়া পটুয়াখালী সদর উপজেলাধীন দক্ষিণ কেওয়াবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ভোকেশনা ইন্সটিটিউটের সুপার মো. আলমগির হোসাইন, নিয়োগ প্রত্যাশী আবু তাহের, জান্নাতি ও তরিকুল ইসলাম স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষায় তারা নির্বাচিত হয়েছেন দাবি করে এবং দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করতে নিয়োগ পরীক্ষার দেড় মাস পর অর্থ্যাৎ গত ১৬ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে মহামান্য হাইকোর্টে রীট করেন (রিট পিটিশন নং- ৩১৬২/২০২৫)।
নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে নিয়োগ সম্পন্ন করার এবং দুই মাস অতিবাহিত হলে পুনঃ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ফের নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করার বিধান থাকলেও চলতি মাসের শুরুর দিকে আট মাস আগে স্থগিত হওয়া এই নিয়োগ পরীক্ষার কাগজপত্রে ব্যাকডেটে নিয়োগ বোর্ডের ডিজি প্রতিনিধি বাদে সকল প্রার্থীর স্বাক্ষর দিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এমনকি স্থগিত হওয়া এই নিয়োগে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর না করার কারণে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের ডিজি প্রতিনিধির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রত্যাশী এবং প্রথম নির্বাচিত দাবি করা মো. আলমগীর হোসাইন।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো ব্যাকডেটে স্বাক্ষরিত স্থগিত নিয়োগের কাগজপত্র ও নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার দেড় মাস পর পদ প্রত্যাশী প্রার্থীরা হাইকোর্টে মামলায় সংযুক্ত করা কাগজপত্রে উঠে এসেছে এই জালিয়াতি। একই ব্যক্তির আদলতে দেওয়া কাগজপত্র একটি এবং মাদ্রাসা অধিদপ্তরে দেওয়া কাগজপত্র আলাদা। এছাড়া নিয়োগ পরীক্ষা যে স্থগিত হয়েছে তা নিয়োগ পরীক্ষার আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রেফ ব্রিফিংয়ের ভিডিওতে সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে। এছাড়াও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে প্রথম নির্বাচিত দাবি করে মামলা করা তরিকুল ইসলামকে বাদ দিয়ে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের প্রেরিত কাগজপত্রে ওভার রাইরিং ব্যবহার করে ইসরাত জাহান নামের প্রার্থীকে প্রথম দেখানো হয়েছে।
১. স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষার নিরাপত্তা কর্মী পদের হাজিরা শিটে (হাইকোর্টে জমা দেওয়া) সব প্রার্থীই উপস্থিত আছেন, অন্যদিকে নিয়োগের আট মাস পরে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হাজিরা শিট তিন নম্বর প্রার্থী অনুপস্থিত।
২. স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষার আয়া পদের হাজিরা শিটে (হাইকোর্টে জমা দেওয়া) সব প্রার্থীই উপস্থিত আছেন, অন্যদিকে নিয়োগের আট মাস পরে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হাজিরা শিটে দুই নম্বর প্রার্থী অনুপস্থিত।
৩. স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদের হাজিরা শিটে (হাইকোর্টে জমা দেওয়া) সব প্রার্থীর তারিখসহ স্বাক্ষর রয়েছে অন্যদিকে নিয়োগের আট মাস পরে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হাজিরা শিটে তারিখ ছাড়া স্বাক্ষর।
৪. স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষার অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদের হাজিরা শিটে (হাইকোর্টে জমা দেওয়া) সব প্রার্থীই উপস্থিত আছেন, অন্যদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হাজিরা শিট দুই নম্বর প্রার্থী অনুপস্থিত।
৫. অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে নিয়োগে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর ছাড়াই চূড়ান্ত ফলাফল তৈরি করে মাদ্রাসা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম দেখানো হয়েছে পটুয়াখালী সদর উপজেলাধীন দক্ষিণ কেওয়াবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ভোকেশনা ইন্সটিটিউটের সুপার মো. আলমগীর হোসাইনকে। এই আলমগীর হোসাইন কেওয়াবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ভোকেশনা ইন্সটিটিউটের ভোকেশনাল শাখায় ০৪ (চারজন) ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে ভুয়া ডিজি প্রতিনিধি ও নিয়োগের কাগজপত্র তৈরি করে এবং জাল সনদ দিয়ে নিয়োগ দেন এবং এমপিওভুক্ত করান। পরবর্তীতে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (শিক্ষা মন্ত্রনালয় স্বারক নং -ডিআইএ/পটুয়াখালী/৬১-এম/খুলনা ৩৫২ তারিখ ১৪/০৮/২০০৮ ইং) পরিদর্শনে চার জনের এই নিয়োগ জালিয়াতি প্রমাণিত হয় এবং উক্ত ০৪ জন ল্যাব সহকারীদের ইনডেক্স কর্তন করে ও তাদের প্রাপ্ত বেতন ভাতার ৭,৬০,৯৪২/-টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় (স্মারক নং শিম / সা:- ১৪/ অবি- ১/১০৫/৪০৮ তারিখ ২২/৭/২০০৯) সুপার আলমগীর হোসাইন কর্তৃক অবৈধ উপায় জাল সনদ দিয়ে নিয়োগ প্রদান করার কারণে তার এমপিও বন্ধের আদেশ প্রদান করেন। তবে আজ অবধি সেই আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি। এই আলমগীর হোসেইন মরিচবুনিয়া ইসলামিয়া নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হলেও তাকে নিয়োগ ও এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে না মর্মে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলেও তিনি আজ অবধি দক্ষিণ কেওয়াবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ভোকেশনা ইন্সটিটিউটের সুপার পদে বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই নিয়োগ কমিটির পদাধিকার বলে সদস্য সচিব ছিলেন মাদ্রাসাটির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফাতেমা ইয়াসমিন। গত ২৮ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে তাকে সহকারী অধ্যাপক পদ থেকে প্রভাষক পদে পদাবনিত করা হয় (যার স্বারক নম্বর- ৫৭.২৫.০০০০.০০২.২৩.০০১.২৮-১০২ তারিখ: ২৮-১১-২০২৪খ্রি)। অন্যদিকে গত ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এক চিঠিতে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মোঃ সাইদুর রহমান এর বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার (হাইকোর্টের রায়ের আলোকে) পূর্বক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব প্রদান এবং বেতন/ভাতাদি বিলে স্বাক্ষর প্রদানের বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পটুয়াখালী সদরকে নির্দেশ প্রদান করেন (যার স্বারক নম্বর ৫৭.২৫.০০০০.০১০.০০৫.২২.৮১৮ তারিখ: ০৪-১২-২০২৪খ্রি. (এই চিঠিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন)। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, মাদ্রাসাটির পাঁচ টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে। এ সময়ে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মোঃ সাইদুর রহমান এবং নিয়োগ কমিটির পদাধিকার বলে সদস্য সচিবও তিনি। অথচ নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন ফাতেমা ইয়াসমিন যা বিধিবহির্ভূত।
জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষার দিন ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার আগেই তা স্থগিত করা হলেও এই ব্যবহারিক পরীক্ষার ফলাফল দেখানো হয়েছে এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে না থাকলেও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফলাফল সীটে পটুয়াখালী সদর উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মোঃ শাহ মুসাব্বির মিরাজের স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে (বর্তমানে মোঃ শাহ মুসাব্বির মিরাজ মির্জাগঞ্জ উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন)। নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার আগেই তা স্থগিত হওয়া এবং নিয়োগ বোর্ডে সদস্য না হয়েও কিভাবে স্থগিত পরীক্ষার ফলাফল সীটে স্বাক্ষর করলেন জানতে চাইলে তিনি শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, ঐ দিন পরীক্ষা স্থগিত হয়েছিল আমি ইউএনও’র নির্দেশে ফেব্রুয়ারির শেষে কিংবা মার্চের প্রথম দিকে আমার রুমেই এই পরীক্ষা হয়েছিল।’
নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল কেউ স্বাক্ষর না দিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে আসেন। তাহলে আপনি কিভাবে পরবর্তীতে পরীক্ষা নিয়ে স্বাক্ষর করলেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ইউএনও মহোদয় বললেন সব ঠিক আছে তাই আমি স্বাক্ষর দিয়ে এসেছি। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে বাংলায় ৫০, ইংরেজিতে ৫০ ও আরবিতে ৫০ নম্বরসহ মোট ১৫০ নম্বরের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এখানে তিন পদের কোনো প্রার্থীই আরবিতে টাইপিং পারেন না। তাহলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় এত নম্বর কিভাবে পেলেন প্রার্থীরা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলা আর ইংরেজি নিয়েছি আরবি পরীক্ষা নেই নাই।’ তাহলে আরবি পরীক্ষা না নিয়েও ফলাফল শিটে কিভাবে আরবির নম্বর দিয়ে স্বাক্ষর করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারব না এখন ব্যস্ত পরে কথা বলছি।’ এর মিনিটে দশেক পরে তিনি মুঠোফোনে কল করে বলেন, ‘আরবি এক্সপার্ট দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল তিনি এই নম্বর দিয়েছে।’
মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এই নিয়োগ পরীক্ষার অন্যতম কারিগর ছিলেন মাদ্রাসাটির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা কাওছার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফাতেমা ইয়াসমিন আর এই কাজে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছেন ইউএনও ইফফাত আরা জামান উর্মি। স্থানীয়রা জানান, যেহেতু কাওছার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আর ইউএনও ইফফাত আরা জামান উর্মি আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানের ভাগ্নী হওয়ায় ও মোটা অংকের অর্থ পাওয়ায় কাওছারকে সহযোগিতা করতে গিয়ে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর করেছেন।
গত ১৫ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য মো. নুরুজ্জামান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে স্থগিত হওয়া এই নিয়োগ পরীক্ষা খাতা কলমে সম্পন্ন করে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর মজুমদার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রত্যাশী মোঃ আলমগীর হোসাইন ও এই নিয়োগ জালিয়াতি চক্রের সাথে ৩০ লাখ টাকার চুক্তি করে দশ লাখ টাকা নগদ গ্রহণ করেছেন। দূর্গা পূজার ছুটিতে মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদার পটুয়াখালীর কুয়াকাটার একটি হোটেলে বসে এই ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। ফলে এই নিয়োগ সম্পন্ন করে এমপিও দিতে তিনিই সবচেয়ে বেশি দৌড়ঝাঁপ করছেন।
জানতে চাইলে অভিভাবক সদস্য মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, “এই মাদ্রাসার নিয়োগে ব্যাপক অর্থ লেনদেন হয়েছে এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পক্ষপাতিত্ব করেছেন। অবৈধ নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ অবস্থান নিলে ইউএনও সকল শিক্ষকদের বেতনভাতা বন্ধ করে রেখেছেন। তিনি সব স্বাক্ষর করে দিয়েও যখন এই পাঁচ পদের নিয়োগ সম্পন্ন ও এমপিও করাতে ব্যর্থ হয়েছেন তখন মাদ্রাসা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আরিফুর মজুমদারের সাথে ৩০ লাখ টাকার চুক্তি করা হয়েছে এবং পটুয়াখালীর কুয়াকাটার হোটেলে বসে তাকে ১০ লাখ টাকা নগদ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই নিয়োগ সম্পন্ন করতে তিনিই সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। এই অর্থ অধ্যক্ষ পদে প্রথম হয়েছেন দেখানো আলমগীর হোসাইন দিয়েছেন তাকে।”
মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমান বলেন, নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগে এলাকাবাসীর সম্মুখে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। অবৈধ নিয়োগ নিয়ে অত্র মাদ্রাসার শিক্ষকরা প্রতিবাদ করার কারণে ইউএনও আমাদের বেতন ভাতা বন্ধ করে রেখেছেন। এমনকি তাঁর জন্য কয়েকমাস যাবত মাদ্রাসার গভর্নিং বডি গঠন করতে পারছিনা। আমরা এই অবৈধ নিয়োগ কখনোই মেনে নিবো না। নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ইউএনওসহ চারজনের বিরুদ্ধে নিয়োগ জালিয়াতির মামলা হয়েছে। বাকীটা মহামান্য আদালতে ফয়সালা হবে।
সাইদুর রহমান আরোও বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার একদিন পূর্বে মাদ্রাসায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মহামান্য আদালত আমাকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা প্রদান করে। উক্ত আদেশ মাদ্রাসার সভাপতি ও ডিজি প্রতিনিধিকে দেখালে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে।
অভিভাবক সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, “যে গভর্নিং বডি গঠন করা হয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগের লোকজনকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্যাস্টিট দের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন এবং তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাদারীপুরের সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানের ভাগ্নী। তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করবেন এটাই স্বাভাবিক।”
নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হলেও অধ্যক্ষ পদে প্রথম নির্বাচিত দাবি করা এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা আলমগীর হোসাইন তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সেটা বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে পরে কিভাবে ব্যাকডেটে স্বাক্ষর করলেন জানতে চাইলে ইউএনও ইফফাত আরা জামান উর্মির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে তিনি স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে বলেন, রাজনৈতিক কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। পরে ফলাফল অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তর যদি সঠিক মনে করে তাহলে নিয়োগ দেবে না হলে বাদ দিবে। ঐ গণমাধ্যম তাকে ‘স্থগিত নিয়োগ পরীক্ষা কিভাবে স্বাক্ষর করে ফাইল পাঠালেন’ জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো সুদত্তর দিতে পারেননি।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ না হয়েও কিভাবে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পেলেন এবং নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হলেও আট মাস পর এসে ফলাফল সীটে কিভাবে স্বাক্ষর করলেন জানতে চাইলে ফাতেমা ইয়াসমিন শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, যে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে সেটা নিয়ে কথা বলে কি লাভ। আপনার স্বাক্ষরে আট মাস পরে মাদ্রাসা অধিদপ্তরে ও কোর্টের মামলায় প্রমাণক হিসেবে স্থগিত নিয়োগের স্বাক্ষরিত কাগজপত্র কিভাবে গেলো জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি কোনো কাগজপত্র প্রেরণ করিনি।
এ বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরীর মুঠোফোনে কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ডিজি প্রতিনিধি জাকির হোসাইনকে নিয়োগ পরীক্ষা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ ও উক্ত মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠান প্রধান কে হবে এ সংক্রান্ত মামলার রায়ের কপির প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস কক্ষে এলাকাবাসীর সম্মুখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আমি নিয়োগ বোর্ডের কার্যক্রম স্থগিত করি এবং বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। পরবর্তীতে এই নিয়োগ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
দশ লাখ টাকা ঘুস গ্রহণ করে এই অবৈধ নিয়োগ সম্পন্ন করার অভিযোগ ও ৩০ লাখ টাকার চুক্তি করার প্রসঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আরিফুর মজুমদার শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নই আসে না। আমি কুয়াকাটা হোটেলে আমার পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম এখানে তাদের কারও সাথে কথা হয়নি।
মাদ্রাসা অধিদপ্তরে অন্যান্য কর্মকর্তা থাকলেও এই নিয়োগ জালিয়াতির বিষয়ে আপনার বিরুদ্ধেই কেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ গেল প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি পটুয়াখালীতে দুই মাস আগে একটা নিয়োগ পরীক্ষা নিতে গিয়েছিলাম তখন একজন জামায়াত নেতা আমাকে বিষয়টি জানায় এবং কথা বলতে চান। আমি বলি অধিদপ্তরে আসেন। পরে তাদের জোরাজুরিতে তাদের সাথে বসেছিলাম এবং বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলাম। এখানে কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি।
ইউএনও এই পরীক্ষা স্থগিত করেছিলেন তাঁর ভিডিও আছে সেটা দেখাতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে ভিডিও দেখতে হবে না। ইউএনও নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন সেটা আমার কাছে আছে আমি সেটা দেখব।
ব্যাকডেটে স্বাক্ষর দিয়ে জাল জালিয়াতি করা হয়েছে তার কিছু প্রমাণ দেখালে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছ থেকেই প্রথম দেখলাম। আমাকে কেউ বিষয়টি জানায় নাই।
ইউএনও যে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছেন সেটা আপনার অধিদপ্তরের আগের মহাপরিচালক আব্দুল মান্নান এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) আবুল কালাম তালুকদার গত জুন মাসে ইউএনওর মুঠোফোনে কল করলে তিনি স্বাক্ষর করেননি মর্মে তাদের কাছে স্বীকার করেন। এ বিষয়টি তার নজরে আনলে তিনি প্রশ্ন করেন, এটা আপনি জানলে কিভাবে? তাদের সাথে কথা না বললে কি জানা যায় ? বললে, তিনি বলেন আমার জানা নেই।
মরিচবুনিয়া আলিম মাদ্রাসার পাঁচ পদের নিয়োগ প্রসঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) আবুল কালাম তালুকদার শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, মরিচবুনিয়া মাদ্রাসার নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র দুইটা দু ধরনের হওয়ায় আমাদের সন্দেহ হয় এবং ডিজি স্যারের নির্দেশে স্যারের সামনেই ফোন লাউড স্পীকারে দিয়ে ২৪জুন ২০২৫ তারিখে আমি ইউএনও, সদর পটুয়াখালীকে উক্ত মাদ্রাসায় নিয়োগের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন স্যার নিয়োগ পরীক্ষাটা ওইদিন হয় নাই। তাহলে নিয়োগের ফলাফল শিটে স্বাক্ষর করেছেন কীনা তা জিগ্যেস করলে ইউএনও স্বাক্ষর করার বিষয় টি অস্বীকার করেন এবং বলেন ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর যেখানে নেই সেখানে আমার স্বাক্ষর করার প্রশ্নই আসেনা। ডিজি স্যারের কাছেও ইউএনও ফলাফলশীটে স্বাক্ষর করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। কথা বলার সময়ে অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা ডিজি স্যারের কক্ষে উপস্থিত ছিলো। পরবর্তীতে আমি তার হোয়াটসআপে সকল ডকুমেন্টস পাঠিয়ে দিই। এরপর তিনি নোটেড লিখেন। এরপর তিনি আমাকে আর কিছু জানাননি। ডিজি মান্নান স্যার ডিজি প্রতিনিধিকে ফোন করলে এলাকাবাসীর অভিযোগে নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছিল বলে জানাই।
Leave a Reply