জনগণের আকাঙ্ক্ষা নয়, নিজেদের সে-ফটির চিন্তায় ব্যস্ত সর-কার: সারজিস

মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় প্রতিনিধি :
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, জুলাই সনদ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়সারাভাবে কাজ করছে। এতে জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত না হয়ে সরকারের নিজেদের সেফটির চিন্তাই বেশি ফুটে উঠেছে।

শুক্রবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে টুনিরহাট জুনিয়র ফুটবল একাডেমির আয়োজনে টুনিরহাট গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আজকের খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, সকাল বেলায় আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নিজে প্রেস ব্রিফিংয়ে চার দফা দাবি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। এগুলো শুধু এনসিপির নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই দাবিগুলোর বিষয়ে একটা দায়সারাভাব দেখা গিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ‘সেফ এক্সিট’ মানে দেশ ছেড়ে পালানো বুঝাই না। বরং আমরা চেয়েছি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি স্পষ্ট হোক, যাতে পরবর্তীতে কোনও দল ক্ষমতায় এসে তা অকার্যকর ঘোষণা না করতে পারে। কিন্তু এসব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এখনো অনির্দিষ্ট।

এনসিপি নেতা আরও বলেন, আমাদের আহ্বায়ক আগেই বলেছিলেন, আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি। কিন্তু এখন দেখছি ঘোষণাপত্র শুধু নামকাওয়াস্তে রয়ে গেছে, কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই। এমন চলতে থাকলে যারা অভ্যুত্থানের যোদ্ধা ছিলেন, ভবিষ্যতে তাদেরই রাষ্ট্রদ্রোহী বানানোর চেষ্টা হতে পারে।

আজকে জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মানিত অতিথি হিসেবে রাখা উচিত ছিল। কিন্তু সেখানে রাজনৈতিক দলের মিলনমেলার মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। এতে ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। অথচ প্রশাসন লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে—যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।

তিনি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাইলে বিষয়টি সংলাপের মাধ্যমে বা অন্যভাবে সামাল দিতে পারত। এখন প্রশ্ন হলো, এই ঘটনার দায় তারা কিভাবে নেবে?

উপদেষ্টাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে তাদের অবস্থান থেকে চেষ্টা করছেন, কিন্তু প্রত্যাশামতো ফল আসছে না। এজন্যই রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি। সবাই আলোচনা করেছে, কিন্তু সরকার তাড়াহুড়ো করে দায়সারাভাবে স্বাক্ষর করেছে।

তিনি আরও যোগ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের নিরাপত্তা নয়, নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বেশি আগ্রহী। তাদের লক্ষ্য শুধু নির্বাচনের দিন পর্যন্ত টিকে থাকা, দেশের প্রকৃত সংস্কার নয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব ও ক্রীড়া বিভাগের সভাপতি তোফায়েল প্রধান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, বোদা টু-স্টার ফুটবল একাডেমির পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বিপুল, টুনিরহাট ফুটবল একাদশের সভাপতি নুর ইসলাম নুরু এবং সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল্লাহ প্রধান জুয়েল প্রমুখ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *