বরগুনার তালতলীতে ভাবীকে হ-ত্যার ১০ বছর পর ভাতিজিকে পি-টিয়ে হ-ত্যা

মংচিন থান বরগুনা প্রতিনিধি।।
বরগুনার তালতলী উপজেলায় ভাবী তানিয়া বেগমকে গলাকেটে হত্যার ১০ বছর পর এবার ছয় বছর বয়সী ভাতিজি নাহিল আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খাঁন। ঘটনার পরপরই হাবিলকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে নিহত শিশুর বাবা মো. দুলাল খান বাদী হয়ে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগে একই দিন দুপুর ২ টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ইদুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত হাবিব ওরেফে হাবিল খান মামলার বাদী দুলাল খানের আপন ছোট ভাই হওয়ায় তাঁরা একই বাড়িতে বসবাস করতেন। তবে হাবিব সার্বক্ষণিক নেশাগ্রস্ত থাকায় প্রায় সময়ই পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ করাসহ মারধর করতেন। ঘটনার দিন মঙ্গলবার দুপুরে শিশু নাহিল বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকানে রুটি কিনতে যায়। এসময় হঠাৎ হাবিব পিছন থেকে এসে একটি লাঠি দিয়ে নাহিলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। 

এসময় শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক বাবা দুলাল খান ও স্বজনেরা শিশুটিকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শিশুটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকায় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মৃত্যু হয়। 

ঘটনার পরপরই চাচা হাবিব ওরেফে হাবিলকে স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করে। এসময় হাবিল একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়। হাবিল খান এ ঘটনার আগে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে নিহত শিশুর বাবা বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। ওই মামলায় তাঁর ৯ বছর সাজা হয়। সাজা ভোগ শেষে ২০২৪ সালের শুরুরদিকে জামিনে মুক্তি পান। ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ঘাতক হাবিল বড় ভাই দুলাল খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যা নাহিলকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।

শিশুর বাবা দুলাল খান কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছে। তখন ওর বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে ৯ বছর সাজা ভোগ করে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জামিনে মুক্তি পায়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার দেড় বছরের মাথায় আমার শিশুকন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমার শিশুকন্যা কী অপরাধ করেছিল? আমি এর বিচার চাই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. টুকু শিকদার ও সালাম হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। হাবিল এর আগে তাঁর ভাইয়ের প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছেন।’

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির মাথার ডান পাশে এবং বাঁ হাতের কনুইয়ে গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। তাৎক্ষণিক শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে জানা যায়, শিশুটি বরিশালে নেওয়ার পথেই মারা গেছে।’

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ‘হাবিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে। আজ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।

মংচিন থান
বরগুনা প্রতিনিধি।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *