কে এম সাইফুর রহমান,
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
অসুস্থতার ভুয়া অজুহাতে বছরের উল্লেখযোগ্য সময় সুদুর ইউরোপীয় দেশ ইতালিতে স্বামী ও সন্তানের সাথে সময় কাটান গোপালগঞ্জের ১৩৫ নং রঘুনাথপুর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনীষা বিশ্বাস।
সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) তার ত্রিশ দিনের ছুটি শেষ হলেও তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসে কাজে যোগদান করেননি। এতে বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পাঠদানে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা উত্তরা বিশ্বাস। তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষিকা মনীষা বিশ্বাস গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখ থেকে অসুস্থতার কথা বলে উপপরিচালকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে ইতালি চলে যান। তবে তিনি তার অসুস্থতার স্বপক্ষে কোনো প্রমাণপত্র দাখিল করেননি। ত্রিশ দিন ছুটি শেষ হলেও তিনি ফিরে আসেননি। তিনি ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই কাজে যোগদান করেন। ওই সময় তিনি মোট ২৪৯ দিন ছুটি ভোগ করেন। তিনি ছুটি না বাড়িয়ে বিদেশে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে রহস্যজনক উপায়ে ছুটি মঞ্জুর করিয়ে নিতে সক্ষম হন। এরপর তিনি ২০২৫ সালের জুলাই মাসের ৩১ তারিখে কাজে যোগদান করেন। সেপ্টেম্বর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত কাজ করে আবার ৯ সেপ্টেম্বর তারিখ থেকে ফের এক মাসের ছুটি মঞ্জুর করিয়ে ইতালি চলে যান। অদ্যাবধি তিনি কাজে যোগদান করেননি। ওই শিক্ষক কাজে যোগদান না করায় আমি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে হিমশিম খাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানার জন্য ওই সহকারী শিক্ষক মনীষা বিশ্বাসের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি ছুটি বৃদ্ধির আবেদন করেছি ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে। আমার ছুটি মঞ্জুর হয়ে যাবে। আমি প্রকৃতই অসুস্থ। তবে বাংলাদেশে শিক্ষকদের অসুস্থতাজনিত কারনে ছুটি নিতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র বা অন্যকোনো প্রমানাদির প্রয়োজন পড়ে না। তবে আমার কাছে সব প্রমানাদি আছে। বাংলাদেশী কর্মকর্তারা দেখতে চাইলে তাদের দেখাবো।” সাংবাদিকরা এসব কাগজাদি দিয়ে কি করবে? বলে তিনি প্রশ্ন রাখেন।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোছাঃ জোৎস্না খাতুনকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি বলেন, একজন শিক্ষক মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলে পাঠদান বিঘ্নিত হয়। এটাই স্বাভাবিক। তবে তিনি অসুস্থতার স্বপক্ষে কোনো কাগজাদি ছুটির আবেদনের সাথে সংযুক্ত না করে কি করে ছুটি পান বা কিভাবে বিদেশে বসেই মর্জি মাফিক ছুটি বৃদ্ধি করতে পারেন তা বোধগম্য নয়। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যাপারে আমি উদ্যোগি হবো।
Leave a Reply