গোদাগাড়ীতে নানা আয়োজনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পা-লিত

রাজশাহী মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫ অক্টোবর, রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টার উপজেলা অডিটরিয়ামে এ আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মুনমুন সুলতানা, মাটিকাটা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক কামারুজ্জামান, মহিশালবাড়ী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল মালেক
শাহসুলতান রহ. কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম, বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান প্রমূখ।
শিক্ষাকতা পেশাঃ মিলিত প্রচেষ্টার প্রীপ্তি এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিক্ষকেরা মানুষ গড়ার কারিগর, জাঁতি গঠনে তাদের ভূমিকা বেশী। দেশের ৯৫ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেসরকারী শিক্ষকগন শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়ন, পাসের হার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছেন কিন্তু সত্যি তারা বেতন বৈষম্য, মেডিকেল, ৫০ ভাগ ঈদ বোনাস, বাড়ীভাড়াসহ নানামূখি সমস্যায় মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। তাদের নুন আন্তে পান্তা ফুরায় অবস্থা তারা শিক্ষা দিবে কিভাে। আমরা চাই এদের অবস্থার উন্নতি করা, সমস্যা গুলির সমাধান করা।

শিক্ষকদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে। আদর্শ শিক্ষক হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে হবে। পরিকল্পিত পাঠ উপস্থাপন করতে হবে, আদর্শ নাগরিক তৈরিতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে। শিক্ষকদের অনেক কম বেতনে পড়াতে হয়, যার কারণে শিক্ষকতা পেশার বাইরে গিয়েও অন্য কাজে জড়িত হতে হয় শিক্ষকদের। অনেক সময় শিক্ষকদের পেনশনের অর্থ পেতে অফিসে অফিসে ঘুরতে হয়, এতে প্রায় ৪ বছর সময় লেগে যায়। অনেক ভোগান্তি হয়। এ ভোগান্তি যেন না হয় সে জন্য উর্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বক্তারা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ সভাপতি বক্তব্যে বলেন, বেতন বৈষম্য, মেডিকেল, ৫০ ভাগ ঈদ বোনাস, বাড়ীভাড়াসহ নানামূখি সমস্যায় মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। আমরা চাই সরকার এদের অবস্থার কথা বিবেচনাসহ সমস্যা গুলির সমাধান করে বেসরকারী শিক্ষকদের জীবন মানের উন্নয়ন করা।
তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সালে সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রে শিক্ষার অগ্রগতি, মানবজাতির ক্রমোন্নতি এবং আধুনিক সমাজের বিকাশ সাধনে শিক্ষক সমাজের অপরিহার্য ভূমিকা ও অবদানের কথা জোরের সাথে ঘোষণা করে শিক্ষকগণ যাতে এসব ভূমিকা পালনের জন্য উপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদা ভোগ করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করার অঙ্গীকার ঘোষণা করা হয়েছে।

১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর ইউনেস্কোর উদ্যোগে শিক্ষকদের মর্যাদা সম্পর্কে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক বিশেষ আন্তঃসরকার সম্মেলন বিশ্বব্যাপী শিক্ষকদের অধিকার, কর্তব্য ও মর্যাদা বিষয়ক আন্তর্জাতিক দলিল ‘ইউনেস্কো/আইএলও সনদ’ স্বাক্ষরিত হয়। ওই দিবসটি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে দেশের সার্বভৌমত্ব হস্তান্তরের আগে ২৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হত। পিপালস রিপাবলিক অফ চাইনাকে দেশের সার্বভৌমত্ব হস্তান্তরের পর ১০ সেপ্টেম্বর পালিত হতে শুরু করে শিক্ষক দিবস।

ইন্দোনেশিয়া- ইন্দোনেশিয়ান টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠার দিনটি হল ২৫ নভেম্বর। সে দিনটিকেই জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইরান- মোরতেজা মোতাহারির স্মৃতিতে ২ মে তারিখে শিক্ষক দিবস পালিত হয়।

মালয়েশিয়ায় দিনটিকে ‘হরি গুরু’ নামে ডাকা হয়। নেপাল- আশাদ পূর্ণিমার দিনে নেপালে শিক্ষক দিবস পালিত হয়। জুলাই মাসের মাঝামাঝি আসাদ শুক্ল পূর্ণিমা পড়ে। নেপালে এই দিনটিকে বলা হয় গুরু পূর্ণিমা।
এর আগে শিক্ষক কর্মচারী, সুধিজনদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে উপজেলা শাপলা চত্ত্বরে এসে শেষ হয়। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক দিবস উপলক্ষে
র‌্যালী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *