শহিদুল ইসলাম,
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নিউমুরিং সাংগঠনিক ওয়ার্ডে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত উঠান বৈঠক শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠককে ঘিরে স্থানীয় এলাকাবাসীর ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়। পাড়া-মহল্লার গণ্যমান্য ব্যক্তি, তরুণ-যুবক, নারীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথি জামায়াত মনোনীত চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জনাব মোঃ শফিউল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন—“এই দেশকে দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে হলে ন্যায়পরায়ণ নেতৃত্ব প্রয়োজন। ইসলাম যে ইনসাফভিত্তিক শাসনের দিকনির্দেশনা দিয়েছে, তা আজ অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসনামলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি, প্রশাসনের দুর্নীতি ও নির্বাচনী কারচুপির মাধ্যমে দেশকে অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।”
নারীর অধিকার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন—“ইসলামই নারীর প্রকৃত সম্মান ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান শাসকগোষ্ঠী নারীর সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিদিন নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এই শাসনব্যবস্থা জনগণকে ভয়ভীতির মধ্যে রেখে টিকে আছে। তাই সময় এসেছে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ব্যর্থ শাসকগোষ্ঠীর অবসান ঘটানোর।”
চট্টগ্রাম মহানগর মজলিসের শূরা সদস্য ও ইপিজেড থানা আমীর জনাব আবুল মোকাররম বলেন—“ভোটাধিকার হরণ করে গড়ে তোলা রাষ্ট্র জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে শফিউল আলমকে বিজয়ী করতে হবে।”
থানা শূরা সদস্য মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন—“জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে কোনো সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। জনগণই রাষ্ট্রের মালিক। তাই এখনই সময় সরকারকে বাধ্য করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায়ের।”
৩৯ নং ওয়ার্ড জামায়াত মনোনীত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোঃ শাহেদ স্থানীয় উন্নয়ন ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বলেন—
“রাস্তা-ঘাট সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ জনসেবামূলক কাজে চরম অনিয়ম চলছে। সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে তাদের ন্যায্য সেবা থেকে।”
এছাড়া বক্তব্য রাখেন—আবদুর রহিম বিশ্বাস, আবুল কালাম, গাজী ওমর ফারুক, জি এম রাসেল, মোঃ আনিসুর রহমান, মাষ্টার আলী নেওয়াজ ও মোঃ মোনাব। বক্তারা সবাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানান।
বৈঠকের মূল আলোচনায় উঠে আসে—১) দুর্নীতিমুক্ত ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার,২) নারীর অধিকার সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার হুঁশিয়ারি,৩) বর্তমান শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা,৪) জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক,৫) ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের উঠান বৈঠক জনগণের মধ্যে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের চেতনা জাগ্রত করছে। বক্তাদের কঠোর বার্তা ভবিষ্যতের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
দোয়া ও শপথের মধ্য দিয়ে বৈঠকের সমাপ্তি ঘটে। বক্তা ও অংশগ্রহণকারীরা একযোগে শপথ নেন—“ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্ব ছাড়া জাতির মুক্তি নেই। দুর্নীতিগ্রস্ত শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণকেই রাস্তায় নামতে হবে।”
Leave a Reply