গরিব-দুঃখী মানুষের স-মস্যার কথা শুনে তাৎক্ষণিক সমা-ধান করেন ডিসি মুফিদুল আলম

স্টাফ রিপোর্টারঃ
সাধারণত দরিদ্র ও অসুস্থ মানুষ তার কাছে ছুটে আসেন। নানা জনের নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি দরিদ্রদের সব ধরনের সহায়তা দেন। আবার কেউ কোন সমস্যা নিয়ে আসলে মনোযোগ সহকারে শুনে তাৎক্ষণিক প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেন এজন্য সবার পছন্দের মানুষ ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুফিদুল আলম।

মানবিক সেবা দেওয়ায় অসুস্থ মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছেন মুফিদুল আলম । ক্রমেই জেলা কার্যালয়ে এসব মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। কারও কিডনিতে সমস্যা, কারও ক্যানসার, কারও বিষব্যথা, কারও চোখে সমস্যা, কারও জটিল সমস্যা। এসব সমস্যা নিয়ে সবাই ডিসির কাছে হাজির হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম দরিদ্র অসুস্থ মানুষের কথা শুনছেন। কাউকে ঢাকায় পাঠাচ্ছেন ক্যানসার হাসপাতালে, কাউকে কিডনি চিকিৎসার জন্য হাসাপাতালে পাঠাচ্ছেন। কাউকে পাঠাচ্ছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে।

প্রতিনিয়ত সেবা দেওয়ার জন্য অসংখ্য মানুষ হাজির হচ্ছেন জেলা প্রশাসকের কাছে। জানাচ্ছেন তাদের সমস্যা। ছোট ছোট অসুস্থতাজনিত সমস্যার জন্য জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম নিজ উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন। সেবাপ্রার্থীদের দু’চারজন আবার অর্থ নিতে অনিচ্ছুক। তাদের দাবি ওষুধ কিনে দিতে হবে। জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিক তাদের ওষুধ কিনে দিচ্ছেন। জটিল রোগীদের চিকিৎসায় বেশি টাকা খরচ হতে পারে; তাই সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করছেন।

সম্প্রতি জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এর কাছে হাজির হয়েছেন এক গরীব অসহায় মানুষ। ময়মনসিংহ জেলা সদরের একটি ইউনিয়নের বাসিন্দা। কাজকর্ম করতে পারেন না। জায়গাজমি নেই। কোনোমতে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার পেলেও তার অসুস্থতার চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাই তিনি জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের কাছে হাজির। জেলা প্রশাসক তার কথা শুনে ও দেখে তাকল আর্থিক সহায়তা দেন। এভাবে মানবিক সেবা দেওয়ায় অসুস্থ মানুষের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছেন মুফিদুল আলম। শুধু অসুস্থতা নয়,যে কোন ধরণের সহযোগীতা জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে পাওয়া যায় বলে তাকে মানবিক ডিসিও বলছেন ময়মনসিংহের মানুষ।

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, একটা সময় অফিস কক্ষে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হতো। এ শুনানিতে জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসতেন। এদের কেউ অল্প বয়সী, কেউ বয়স্ক।

তিনি বলেন, অফিস কক্ষের মধ্যে ছিমছাম পরিবেশে অনেকে কথা বলতে সংকোচ করতেন, কেউ কেউ তাদের সকল সমস্যা খুলে বলতে পারতেন না। এখন প্রকাশ্যে গণশুনানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে সংকোচ থাকছে না। তাদের মনের কথা খুলে বলছেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সুশাসনে গড়ি, বৈষম্যমুক্ত বাংলা’ স্লোগান সামনে রেখে কাজ করছি আমরা। চেষ্টা করছি, সাধারণ মানুষের কথা শুনে সেবা দিতে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত এক বছরে গণশুনানিতে অসংখ্য মানুষ তাদের সমস্যা নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের সবার সমস্যা সমাধান করেছেন জেলা প্রশাসক। দিয়েছেন আর্থিক সহায়তা।

প্রকাশ্যে গণশুনানির ব্যবস্থা করেছেন ডিসি মুফিদুল আলম-

জেলা প্রশাসক হিসেবে ময়মনসিংহে মুফিদুল আলম যোগদানের পর থেকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। এরই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক শুরু করেছেন প্রকাশ্যে গণশুনানি। নিজের অফিস কক্ষের বাইরে খোলা জায়গায় গণশুনানিতে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনে সমাধানের পথ বলে দিয়ে আপনজনে পরিণত হয়েছেন। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে সমস্যার সমাধান মিলছে হাজার হাজার মানুষের।

তার অফিসে গ্রামের একজন সাধারণ কৃষক কিংবা দিনমজুর গেলেও হাসিমুখে কথা বলেন। ময়মনসিংহে যোগদানের পর থেকে একের পর এক ব্যতিক্রমী চিন্তা চেতনায় আকৃষ্ট করলেও এবার এক অকল্পনীয় নজির স্থাপন করেছেন এই জেলা প্রশাসক। সপ্তাহের বুধবার বেশি সময় নিয়ে প্রকাশ্যে তিনি সাধারণ মানুষের কথা শোনেন। সেই সঙ্গে তাৎক্ষণিক সমাধানের চেষ্টা করেন।

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম সাধারণত প্রতিদিন জনসাধারণের কথা শোনেন-
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম সাধারণত প্রতিদিন জনসাধারণের কথা শোনেন। তবে বিশেষভাবে প্রতি বুধবার দীর্ঘ সময় নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জমির একসনা বন্দোবস্ত প্রাপ্তি, আইনগত সহায়তা, আর্থিক সহায়তা, টিআর, জিআর. সরকারি ডেউটিন, চিকিৎসা সহায়তা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রাপ্তি, প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্তি, বিধবা ভাতা প্রাপ্তি, বাল্যবিয়ে রোধ, জমিজমা বিরোধ সংক্রান্ত, ঘর মেরামত, পড়ালেখার খরচ চালানো, শীতের পোশাক প্রাপ্তি, ধর্মীয় কার্যাদিসহ বিভিন্ন বিষয় জেলা প্রশাসককে জানান গরিব-দুঃখী মানুষ। জেলা প্রশাসক সবার সমস্যা সমাধান করে দেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *