আজিজুল ইসলাম।
যশোরে রীতিমতো নাটকের জন্ম দিয়েছেন এক নারী ও তার দুই স্বামী। এক নারীকে নিয়ে দুই পুরুষের প্রকাশ্যে এই টানাহেঁচড়া দেখতে সেখানে ভিড় জমিয়েছিল উৎসুক জনতা। এই দৃশ্য দেখে অনেকেই মন্তব্য করেন, এ যেন বিখ্যাত গানের সেই লাইন, বিধি তুমি বলে দাও আমি কার, একটি মানুষ দুইটি মনের দাবিদার।মঙ্গলবার দুপুরে যশোর কোতোয়ালি থানা চত্বরে এই ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
জানা যায়, ফরিদপুরের কানাইপুরের বাসিন্দা বিকাশ অধিকারী, যার সঙ্গে সীমা অধিকারীর প্রায় ৩৬ বছরের সংসার। এই সংসারে তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। কিন্তু সেই সাজানো সংসার ছেড়ে সীমা অধিকারী সম্প্রতি ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা পলাশ কুন্ডুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়, বিকাশ অধিকারীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে পলাশের হাত ধরে তিনি ভারতে চলে যান এবং সেখানে তারা বিয়েও করেন। এরপর গতকাল রাতে তারা যশোরে এসে একটি হোটেলে ওঠেন। বিষয়টি জানতে পেরে বিকাশের সন্দেহ হয় এবং তিনি সেই হোটেলে হানা দেন। এরপরই ত্রিমুখী এই ঝামেলা গড়ায় থানা পর্যন্ত। আইনি সহায়তা নিতে বিকাশ, সীমা ও পলাশ তিনজনই কোতোয়ালি থানায় হাজির হন। আর সেখানেই শুরু হয় চরম উত্তেজনা। হাতাহাতি থেকে তিনজনের মধ্যে মারামারিতেও রুপ নেয়।
এসময় দ্বিতীয় স্বামী পলাশ কুন্ডু জানান, সীমার সঙ্গে তাঁর তিন বছরের সম্পর্ক। তাঁরা দুজনেই স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন এবং এখন একসাথে থাকতে চান। কিন্তু তাদের পথের কাটা হয়ে দাড়িয়েছেন বিকাশ।
যশোরে রীতিমতো নাটকের জন্ম দিয়েছেন এক নারী ও তার দুই স্বামী। । ছবি : শিমুল ভূইয়া
স্ত্রী সীমা অধিকারী বলেন, বিকাশের সংসারে তিনি নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে বিকাশকে ছেড়ে পলাশকে বিয়ে করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি আর বিকাশের সঙ্গে সংসার করবেন না।
প্রথম স্বামী বিকাশ অধিকারী দাবি করেন, সীমার পরকীয়ায় কারণে তাঁদের সাজানো সংসার ভেঙে যাচ্ছে। সীমা শুধু বাড়ি ছাড়েননি, বরং পালিয়ে যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও গয়নাও নিয়ে গেছেন। তিনি সীমাকে যেকোনো মূল্যে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চান।
এই বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল জানান, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে আছেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply