September 17, 2025, 7:31 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
রংপুর হা-রাগাছে আলেফ উদ্দিন প্রিমিয়ার লীগের মেগা ফুটবল খেলার ফাইনাল অ-নুষ্ঠিত পঞ্চগড়ে যৌ-থবাহিনীর অ-ভিযানে জা-ল টাকা সহ ১ জুয়ারী আ-টক ইউপি সদস্যের দ-খলে সওজের কোটি টাকার স-ম্পত্তি শাল্লায় জায়গা সং-ক্রান্ত বি-রোধের জেড়ে প্র-তিপক্ষের হা-মলায় আহ-ত-২ থানায় মামলা দা-য়ের সুজানগরের তঁাতিবন্দে বিএনপির কর্মী স-মাবেশ অনুষ্ঠিত ইয়্যুথ ভ-লান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড পেলেন (রাবি) শিক্ষার্থী ও সুজানগরের কৃতি সন্তান দ্বীপ মাহবুব ঝিনাইদহে তু-চ্ছ ঘট-নাকে কেন্দ্র করে সংঘ-র্ষে আহ-ত ১৯ ফরিদপুরের সালথায় টিএমএসএস’র নতুন শাখা উ-দ্বোধন ও ঋ-ণ বিত-রণ শুরু ঝিনাইদহে জমি অ-ধিগ্রহণ কর্মকর্তার বিরু-দ্ধে গা-লিগালাজ ও হুম-কির অভি-যোগ জমির মালিকদের রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ৪৫০ টি খা-স পুকুরের রিট বা-তিল
আসন্ন শীত মৌসুমে সাগরে মাছ ধরতে যেতে পাইকগাছার জে-লে পল্লীতে প্র-স্তুতি চলছে

আসন্ন শীত মৌসুমে সাগরে মাছ ধরতে যেতে পাইকগাছার জে-লে পল্লীতে প্র-স্তুতি চলছে

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা (খুলনা )।।

আসন্ন শীত মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য পাইকগাছার জেলে পল্লীগুলোতে এখন ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। নতুন ট্রলার তৈরি এবং পুরাতন ট্রলার মেরামত, জাল বুনা ও জাল শুকানোর কাজের ধুম পড়ে গেছে। জেলে পল্লীর নারী-পুরুষ ও শ্রমিকরা সুন্দরবনের দুবলার চরে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র গোছাতে কর্মব্যস্ত দিন কাঁটাচ্ছে। মহাজনের চড়াসুদে দাদনে টাকা নিয়ে জীবিকার তাগিতে আশা-হতাশায় সাগর যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলেরা।
পাইকগাছা উপজেলার বোয়ালিয়া, হিতামপুর, মাহমুদকাটী, নোয়াকাটি, কপিলমুনি, কাটিপাড়া, রাড়লী, শাহাপাড়া, বাঁকাসহ বিভিন্ন গ্রামের জেলে পল্লী থেকে প্রায় ২৫০টি ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সব কাজে বাড়ীর ছোট বড় সবাই সহযোগীতা করছে। নতুন ট্রালার তৈরি, পুরাতন ট্রলারগুলো সংস্কার, জালবুনা, লোহার নোঙ্গর/গ্রাফি, ট্রলারের রং করা, জালে গাবকুটে রস লাগানো ছাড়াও সমুদ্রে যাওয়ার বিভিন্ন কাজ কর্ম নিয়ে জেলে পল্লীর নারী-পুরুষরা ব্যস্ত দিন কাঁটাচ্ছে।
উপজেলার বোয়ালিয়া মালোপাড়া সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মালোপাড়ায় ৩টি নতুন ট্রলার তৈরী করার কাজ চলছে ও ৩০ টি পুরাতন ট্রলার মেরামতের কাজ চলছে। মিস্ত্রীরা দিন রাত ট্রলার তৈরী কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ট্রলার তৈরী নিয়ে মালোপাড়ায় তৈরি হয়েছে উৎসব মূখর পরিবেশ। মালোপাড়ার সজ্ঞয় বিশ্বাস নতুন ট্রলার তৈরী করছেন, তিনি জানান, নতুন ট্রলার তৈরী করতে প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তাছাড়া সুবোল বিশ্বাস, সিতেরাম বিশ্বাস, তাপস বিশ্বাস, দয়াল মন্ডল তাদের পুরাতন ট্রলারগুলি মেরামত করছে। কপোতাক্ষ নদের তীরে বোয়ালিয়া ব্রীজের দুই পাশে ট্রলার তৈরী ও মেরামতের কাজ চলছে। বোয়ালিয়া মালোপাড়ার বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানায়, সমুদ্রে মাছ ধরতে য়েতে ১টি ট্রলার তৈরি করছে। মহাজনের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়েছে, সাগরে মাছ ধরে তা বিক্রি করে টাকা শোধ করবে বলে তিনি জানান।
ট্রালার তৈরি করতে বিভিন্নস্থান থেকে ৪-৫ জন মিস্ত্রী আনতে হয়। মিস্ত্রীদের থাকা খাওয়া বাদে প্রতিটি নতুন ট্রলার তৈরী বাবদ মজুরী ১ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। ৬০ ফুট লম্বা ১৭ ফুট চওড়া একটি ট্রলার তৈরি করতে প্রায় ৫শত সেফটি কাঠ লাগছে। প্রতি সেফটি খৈ বাবলা ও চম্বল কাঠ ৬শ টাকা থেকে ১৫শ টাকা দরে ক্রয় করেছে। পুরাতন ট্রলার মেরামত করতে ২০-৮০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ট্রালার তৈরি পর ইঞ্জিন বসাতে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। প্রতিটি ট্রলারে জাল ধরার জন্য ২টি করে নোঙ্গর প্রয়োজন হয়। লোহার তৈরী নোঙ্গর তৈরী করতে খরচ পড়ছে প্রায় ২৮ হাজার টাকা। প্রতিটি মাছ ধরার জাল তৈরি করতে তাদের খরচ হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে ১লাখ টাকা। সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য প্রতি ট্রলারে ২টি জাল প্রয়োজন হয়। প্রতি ট্রলারে জাল ধরার জন্য ৮/১০ জন কর্মচারীর প্রয়োজন হয়। তাদের থাকা-খাওয়া বাদে প্রতি মাসে ১৫/২০ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য ট্রলার প্রতি ৫/৬ মাসে সব কিছু মিলে খরচ পড়ে প্রায় ৭/৮ লাখ টাকা।
মালোপাড়ার সিতেনাথ বিশ্বাস জানান, শীত মৌসুমে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন হয়। ৫ থেকে ৬ মাসের জন্য দুবলার চরে অস্থায়ী জেলে পল্লীতে বাসা বেধে থাকা ও মাছ শুকানোর আড়ত তৈরী করতে হয়। এর জন্য অনেক টাকার দরকার পড়ে। সব টাকা নিজের না থাকায় এলাকার বিভিন্ন মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা দাদন নিতে হয়। ৫ থেকে ৬ মাসের জন্য তারা দাদন নিলেও ১ বছরের হিসাবে টাকা দিতে হয়। প্রতি ১ লাখ টাকায় মহাজনদের প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা সুদ দিতে হয়। জেলেপাড়ার অজয় বিশ্বাস জানান, সরকার আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে লোনের ব্যবস্থা করত তাহলে মাছ ধরে উপার্জিত টাকা ঘরে ফিরে আনতে পারতাম। তা না হলে মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া চড়া সুদের টাকা শোধ করার পর উপার্জিত টাকা ঘরে ফিরে আসে না। তাই জেলে পরিবাররা সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছে, শীত মৌসুমে মাছ ধরতে যাওয়া সময় জেলেদেরকে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে তারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা ফিরে পাবে।
বোয়ালিয়া জেলে পল্লীর জেলেরা দূর্গা পূজার পর উপজেলার সকল ট্রলার এক সঙ্গে রওনা দিবে। জেলেরা বিভিন্ন মহাজনের অধীনে থেকে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। মহাজনরা জেলেদের পাস পারমিট করে রাখে। তারা মংলা হয়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে গিয়ে বাসা বেঁধে অবস্থান নিবে। জীবিকার জন্য প্রতি বছর সুমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বনদস্যু ও জলদস্যুদের সাথে জেলেদের জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। মাছ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে ভয়ংকর, বিক্ষুদ্ধ উত্তাল ঢেউয়ের সংগে যুদ্ধ করে জেলেদের জাল ফেলে মাছ ধরতে হয়। এতো বিপদের সংগে লড়াই করে তাদের জীবিকা অর্জন করতে হয়। জেলে পল্লী মানুষের আয়ের প্রধান উৎস্য সমুদ্রে মাছ ধরা। তবে এটা যেন তাদের নেশা ও পেশা হয়ে দাড়িয়েছে। তাই জেলে পল্লীর নারী-পুরুষ সবাই মিলে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র তৈরী ও গোছাতে দিন রাত কাজ করছে। এই নিয়ে জেলে পল্লীগুলোতে সাগর যাত্রার মহাকর্মযজ্ঞর প্রস্তুতি চলছে।

প্রেরকঃ
ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা খুলনা।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD