September 9, 2025, 2:01 am
খলিলুর রহমান খলিল , নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
অমূল্য পুরাতত্ত্বের লোভ দেখিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত ফাঁস হয়েছে রংপুরের তারাগঞ্জে। পুলিশের অভিযানে একটি কালো ধাতব মূর্তি, যাকে প্রতারকরা ৪২০ কোটি টাকা মূল্যের ‘কষ্টি পাথর সদৃশ নারায়ণ মূর্তি’ বলে দাবি করেছিল-মূর্তিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই যুবক প্রতারণা এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে তারাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানা যায় রবিবার বিকেলে তারাগঞ্জ থানাধীন শিয়ালডাঙ্গা ব্রিজের পাশে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই চক্রকে ধরতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মোঃ খলিল ফকির (৭৫), শ্রী সুবাস শীল (৩০), মোছাঃ মমতা বেগম (৩৬) এবং শ্রীমতি জোসনা রানী (৬০)—সবাই নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার হাজারীহাট এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, মূর্তিটির ওজন প্রায় ৩ কেজি, লম্বায় ১০ ইঞ্চি, এবং এটি একটি সাধারণ ধাতব বস্তু, যার অনুমানিক মূল্য মাত্র ৫ লক্ষ টাকা। তবে প্রতারকরা এটিকে অতি মূল্যবান পুরাতন ধাতব মূর্তি বলে প্রচার করে ভুক্তভোগীকে ফাঁদে ফেলেছিল।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার বগুলাগাড়ী মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা ভুক্তভোগী মোঃ পারভেজ হোসেনের দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, ৪ মাস আগে তার প্রতিবেশী চাচা মোঃ আলেফ হোসেন (৩২) খলিল ফকিরের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মূর্তির কথা জানতে পারেন। খলিল কবিরাজ পারভেজকে মূর্তিটি দেখিয়ে লোভ দেখান। প্রথমে পূজার নামে ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়, পরে ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রির লোভ দেখিয়ে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
পারভেজ জানান, “আসামিরা আমাকে বিশ্বাস করিয়ে টাকা নিয়েছে, কিন্তু মূর্তিটি দেখে সন্দেহ হলে স্থানীয়দের কাছে খোঁজ নিই। খলিলের চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতারণা করে আসছে বলে জানতে পারি। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যও একই কাজে জড়িত। গ্রেপ্তারও হয়েছেন কেউ কেউ। রবিবার বিকেলে শিয়ালডাঙ্গা ব্রিজের কাছে লেনদেনের কথা বলে খলিলকে ডাকি। কৌশলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় চক্রের বাকি সদস্যদেরও ডেকে আনি। এরপর মূর্তিসহ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের আটক করে পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মূর্তিটি জব্দ করে এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করে।”
তারাগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক জানান, “এটি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্রের কাজ। আসামিরা পুরাতন মূর্তির লোভ দেখিয়ে অনেককে ঠকিয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগীর সতর্কতায় এই চক্রটি ফেঁসে গেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগের সম্ভাবনা রয়েছে, সে দিকেও তদন্ত চলছে।”