আদর্শ গ্রামের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন রোটারিয়ান ইকবাল হোসেন

দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্নে বিভোর একজন তরুণ সমাজকর্মী ও সংগঠক সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের রাজনপুর গ্রামের ক্লিন ভিলেজ গ্রীণ ভিলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কানাডা প্রবাসী রোটারিয়ান মোঃ ইকবাল হোসেন। যিনি ইতিমধ্যে তার মরহুম বাবার নামে “আবুল হোসেন ফাউন্ডেশন ” ও গঠন করেছেন যা মুলত শিক্ষা, স্বাস্থ্য,সমাজ উন্নয়ন নিয়ে কাজ করবে।

গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও একটি আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রযুক্তি ও নৈতিকতা—এই পাঁচটি স্তম্ভকে ভিত্তি করে তিনি গড়ে তুলতে চান একটি টেকসই ও মানবিক সমাজ।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে রাজনপুর গ্রামে উপস্থিত হয়ে দেখা যায় ইকবাল হোসেন এর নিজস্ব অর্থায়ন ও পরিকল্পনায় চলছে আদর্শ গ্রামের কাজ। আদর্শ গ্রামের পরিকল্পনায় রয়েছে গ্রামের প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে প্রতিটা বাড়ির ঘর পর্যন্ত সৌন্দর্য বর্ধন। পরিষ্কার পরিছন্ন রাস্তাঘাট নির্মান ও ঘর বাড়ি নির্মান এবং মেরামত। রয়েছে যাত্রী ছাউনি, বাথরুম, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়াশরুম, প্রতি বাড়ী ও নির্দিষ্ট স্থান সমুহে ডাস্টবিন স্থাপন,রাস্তার পাশে প্রবীনদের জন্য বসার জায়গা, যুবকদের বসার জায়গা ,বাচ্চাদের খেলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা।

কর্মসংস্থানের লক্ষে সেলাই প্রশিক্ষণ, ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করা। ফ্রি কোচিং এর ব্যবস্থা করা। গরীব অসহায়দের ঘর নির্মাণ,সাকো, কালভার্ট,নৌকা ইত্যাদির ব্যবস্থা, খাদ্য সহায়তা করার ব্যবস্থা, লাইব্রেরী ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র, গ্রামকে শতভাগ শিক্ষিত করা।

ইকবাল হোসেনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা একটি প্রত্যন্ত গ্রামে হলেও, তার চিন্তা ও কর্মে ফুটে উঠেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। তিনি সুদূর কানাডায় বসেও নিজের গ্রামকে নিয়ে ভাবেন।

ইতিমধ্যে তিনি তার ছোট ভাই মো. সাখাওয়াত হোসেন এর মাধ্যমে পরিবারের অন্যান্য ও গ্রাম বাসীদের সহায়তায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
দায়িত্ব শীলদের অক্লান্ত পরিশ্রমে রাজনপুর আদর্শ গ্রামের ৩০% কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করতে দ্রুত গতিতে চলছে রাজনপুর আদর্শ গ্রামের কাজ।
রাজনপুর গ্রামের হবিবুর রহমান বলেন, শুধু আদর্শ গ্রামই নয় ইকবাল হোসেন আমাকে বসবাসের জন্য একটি ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। আমার ঘর ছিল না, ভাঙা ঘরে মাথা গুজে থাকতাম। আমি তার সুন্দর জীবন কামনা করি।

সাংবাদিক আলাউদ্দিন বলেন, ইকবাল হোসেন একজন পরোপকারী মানুষ। সবসময় তিনি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। করোনা কালিন সময় ইকবাল হোসেন হাজার হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা ,মাস্ক,ওষুধ ,পিপিই সহ নানাবিধ সহায়তা করেছেন।
২০২২ এর বন্যায় পানি বন্ধী লাখ লাখ মানুষকে তিনি খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি ঔষধ সামগ্রী, শাড়ি, লুঙ্গি ও অনেক গৃহহীন পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন। বাংলার প্রতিটা ঘরে ঘরে একজন ইকবাল হোসেন এর প্রয়োজন।

আব্দুল কাদির বলেন, স্বপ্নেও ভাবিনি আমাদের গ্রাম এতো সুন্দর হবে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, দেশে বহু মানুষ দেখেছি, টাকা হলে শহরে গাড়ি, বাড়ি বানায়।আমাদের ইকবাল হোসেন এর নেশা সমাজের সবাই ভালো থাকা,সবাইকে নিয়ে ভালো থাকা। উপজেলা গরীব দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানো।এছাড়াও গরীবের হাসপাতাল,তালগাছ রোপন করে রাস্তা সুন্দর করন সহ দোয়ারাবাজার উপজেলায় আর ও অনেক জায়গায় কাজের পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা ,খেলাধুলার মান বাড়াতে যুবকদের উৎসাহী করতে ইতিমধ্যে কর্মপরিকল্পনা করেছেন বলে আমাদের জানান।

আদর্শ গ্রাম নিয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন বলেন, “আমি চাই এমন একটি গ্রাম গড়ে তুলতে, যেখানে মানুষ হবে স্বাবলম্বী, শিক্ষিত ও নৈতিকতাসম্পন্ন। শুধু আমার বাড়ী বাগান বাড়ি নয় আমার পুরো গ্রামই হবে বাগান বাড়ী।শুধু অবকাঠামো নয়, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনই আমার মূল লক্ষ্য।”

আদর্শ গ্রাম প্রসংগে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরূপ রতন সিংহ বলেন, কাজ শুরু হওয়ার পর আমি ঐ এলাকায় যাইনি। তবে সময় পেলেই তরুণ সমাজ কর্মী ইকবাল হোসেন এর আদর্শ গ্রাম দেখতে যাবো।

স্থানীয়দের ধারনা ইকবাল হোসেনের স্বপ্ন, একদিন তার এই আদর্শ গ্রামের ভাবনা ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে।একটি প্রত্যন্ত জনপদে কিভাবে উন্নয়নের ছোয়ায় এগিয়ে নেওয়া যায় তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ রোটারিয়ান মো ইকবাল হোসেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *