September 5, 2025, 5:25 pm
আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
জুলাই অভ্যুত্থান ঘিরে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন দেয়ালের মতো জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনের সীমানা প্রাচীরেও আঁকা হয়েছিল গ্রাফিতি। তবে সীমানা প্রাচীর সংস্কার কাজের সময় সেসব গ্রাফিতি মুছে ফেলা হলে সমালোচনা শুরু হয় এবং অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, গত ৫ আগস্ট জেলা প্রশাসকের বাংলো, সীমানা প্রাচীর, বাসভবন, ভবনের গেইট এবং পাঁচটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া যায়। ওই বরাদ্দের অর্থ দিয়ে ভবন ও দেয়াল মেরামত, চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া বসানোসহ নানা সংস্কার কার্যক্রম চলছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘এই জীর্ণশীর্ণ দেয়ালের মধ্যে কিছু গ্রাফিতি ছিল। এগুলো রেখে সংস্কার কাজ করা সম্ভব ছিল না। গণপূর্ত অধিদফতর জানিয়েছে, কাজের সময় দেয়ালে সিমেন্টের আঁচড় পড়ায় গ্রাফিতির কিছু অংশ নষ্ট হয়েছে। এতে কিছুটা বেমানান লাগছিল। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই জানিয়ে তিনি পোস্টে আরও বলা হয়, ভবনের নিরাপত্তার স্বার্থে দেয়াল উঁচু করা হয়েছে এবং কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার পর পূর্বের চেয়েও সুন্দরভাবে নতুন গ্রাফিতি আঁকানো হবে বলেও আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘এই নির্মাণ ও সংস্কার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে পরিচালনা করছে গণপূর্ত অধিদফতর, ময়মনসিংহ। ঠিকাদার নিয়োগও করেছে তারা। এতে জেলা প্রশাসকের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘আমি নিজেও ২৪’কে ধারণ করি ও লালন করি। ২৪-এর আদর্শকে সমুন্নত রাখতে চাই। এর পরিপন্থি কোনো কাজ আমার দ্বারা হবে না এ ব্যাপারে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই।’
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়- জেলা প্রশাসনের বাংলোর নিরাপত্তা, সৌন্দর্য, এবং কাঠামোগত অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে বাংলোর চারপাশের সীমানা প্রাচীর বা দেয়াল মেরামত করা হয় যেখানে ভাঙা অংশ মেরামত করা, ফুটো ভরাট করা, এবং প্রয়োজন হলে পুনরায় প্লাস্টার বা রঙ করার মতো কাজ অন্তর্ভুক্ত থাকে।সংস্কারের প্রক্রিয়া হিসাবে ১. মূল্যায়ন: প্রাচীরের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখতে হয় কোথায় কোথায় ফাটল ধরেছে, ভাঙা অংশ আছে, নাকি প্লাস্টার খসে পড়েছে।২. পরিষ্কার করা: দেয়ালের ভাঙা অংশ বা আলগা প্লাস্টার সরিয়ে একটি পরিষ্কার পৃষ্ঠ তৈরি করা হয়।৩. ফাটল ভরাট: ফাটলগুলো সিমেন্টের মর্টার বা উপযুক্ত ফিলার দিয়ে ভরাট করা হয়।৪. প্লাস্টার ও ফিনিশিং: প্রয়োজন হলে নতুন প্লাস্টার করা হয় এবং দেয়াল মসৃণ করার জন্য ফিনিশিং করা হয়। ৫. রঙ করা: সব কাজ শেষে দেয়ালের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং সুরক্ষার জন্য রঙ করা হয়।
এই সংস্কার বাংলোকে আরও মজবুত এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। সেই আকর্ষণ বৃদ্ধির লক্ষেই ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের বাংলোর প্রাচীরে সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে যা নিয়ে জেলা প্রশাসককে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
তবে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদরা আমাদের প্রেরণার বাতিঘর। তাদের চেতনা আমরা লালন করি। তারা আমাদের জাতীয় সম্পদ। তারা যে উদ্দেশ্যে জীবন দিয়েছেন আমরা যেন তাদের সম্মান সমুন্নত রাখতে পারি সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি আগামীতে করে যাবো।