August 25, 2025, 6:12 pm
আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
১২ বছর ধরে শিকলবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিলো কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের গণেরগাঁও গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর ফজলু মিয়ার সন্তান আছমা খাতুন (২৮) ও জাহাঙ্গীর (২৫) নামের আপন দুই ভাই-বোন৷ দরিদ্র পিতার পক্ষে ছিলোনা চিকিৎসা করানোর মতো অবস্থা। মানসিক ভারসাম্যহীন ভাই বোনকে নিয়ে পরিবার ছিলো বিপাকে৷ এমনি দূর্বিষহ অবস্থায় নিদারুন কষ্টে নিরুপায় দিন কাটছিলো তাদের৷
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে তাদের শিকল খুলে এম্বুল্যান্সে তুলে দেন। এছাড়াও সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে তাদের হাতে নগদ আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়েছে।
মানসিক ভারসাম্যহীন দুই সন্তানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় ইউএনও’র প্রতি খুশী দরিদ্র পিতা ফজলু মিয়া। খুশীতে আত্মহারা হয়ে ইউএনও মাইদুল ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানানোসহ ইউএনওর এমন আন্তরিকতায় গ্রামবাসীও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ফজলু মিয়া৷
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দরিদ্র দিনমজুর পিতা ফজলু মিয়ার চার মেয়ে ও এক ছেলে। এর মধ্যে দুজন মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনবেলা খাবার যোগাড় করতে হিমসিম অবস্থা এর মধ্যে তাদের নিয়ে বাড়তি চিন্তার শেষ ছিলোনা তাদের। ছেড়ে দিলেই অসংলগ্ন নানান ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার চেষ্টা করতো দুজন৷ ফলে নিরুপায় হয়ে শিকলবন্দী করে আটকিয়ে রাখা হতো তাদের৷ প্রশাসনের এই সহায়তায় তাদের চিন্তা কিছুটা হলেও কমেছে বলে জানায়৷ ইউএনওর এমন আন্তরিকতায় গ্রামবাসীও সন্তুষ্ট৷
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী মাসুম পাঠান বলেন, আমি ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করি৷ ওনিও শুনে দ্রুত তাদের বাড়িতে এসে দেখে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার আশ্বাস দেন এবং পরে তাদের সহায়তা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে৷
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনা জানার পর সাথে সাথে গিয়ে তাদের মানবিক বিপর্যয় দেখে তাৎক্ষণিক সহায়তার চিন্তা করি৷ ঢাকায় মানসিক ইন্সটিটিউটে ভর্তির ব্যাবস্থা করেছি৷ নগদ আর্থিক সহায়তা তুলে দিয়েছি। সরকার ও প্রশাসন জনগণের জন্য সবসময়ই আন্তরিক।
এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) লাবনী আক্তার তারানা ও উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন।