August 25, 2025, 5:51 pm
বিশেষ প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ছালেহা বেগম (৫৭) ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার অভিযোগে গত বছর (১১ আগস্ট ২০২৪) এলাকাবাসীর পক্ষে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, এলাকায় অবাধে হেরোইন, ফেনসিডিল ও ইয়াবা বিক্রির কারণে কিশোর-কিশোরীসহ যুবসমাজ সহজেই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৮ জুন ২০২৫ টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ৮-১০ সদস্যের একটি টিম ভূঞাপুর উপজেলার বাহাদীপুর গ্রামের ছালেহা বেগমের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় তাদের বাড়ি থেকে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের দিনকার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ছালেহা বেগম নিজেই তার ঘর থেকে মাদক উদ্ধারের বিষয়টি স্বীকার করেন এবং তল্লাশির সময় কিছু খোয়া যায়নি বলেও স্বীকারোক্তি দেন।
কিন্তু অভিযানের এক সপ্তাহ পর তিনি অভিযোগ করেন, ঘর তল্লাশির নামে কর্মকর্তারা আলমারি, শোকেস ও ড্রয়ার ভেঙে তার ও তার ছেলের জমানো ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, তিন ঘণ্টার তল্লাশির পর মাত্র ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখানো হয়েছে এবং জোরপূর্বক মিথ্যা জবানবন্দি ভিডিও করে নেওয়া হয়েছে।
পরে ২ জুলাই তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্ত শেষে জেলা পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহ চার জনকে
শাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত সোমবার (৭ জুলাই) রাতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
তবে এরপর ভিন্ন চিত্র সামনে আসে। অভিযোগকারী ছালেহা বেগম অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিংয়ে শোনা যায়, তিনি বলেছেন ১০ লাখ টাকা দিলে অভিযোগ প্রত্যাহার করবেন।
এলাকাবাসীর দাবি, ছালেহা বেগমের ছেলে রনি দীর্ঘদিন ধরে তার মামা দুলাল চকদারের প্রভাব খাটিয়ে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন। তারা বলেন, ছালেহার বাড়িতে মাদক পাওয়া গেছে এটা সত্য। তবে টাকা খোয়ার বিষয়ে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেনি। উল্টো কর্মকর্তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। মাদক ব্যবসার কারণে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, অথচ ভয়েই অনেকে মুখ খুলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সেদিন শুধু মাত্র ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছি, যা এলাকাবাসীর সামনেই প্রমাণিত। কিন্তু আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করতে এবং তার ছেলে রনিকে মাদক মামলা থেকে বাঁচাতে ছালেহা বেগম মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছেন।