August 15, 2025, 6:58 pm
রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর পবা উপজেলায় ঋণের চাপে এবং অভাবের তাড়নায় দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন মিনারুল ইসলাম (৩০) নামের এক ব্যক্তি। ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে লিখেছেন, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম।’
আজ শুক্রবার ১৫ আগষ্ট সকাল ৯ টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামনশেখর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন মিনারুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী সাধিনা বেগম (২৮), ছেলে মাহিম (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (দেড় বছর)। মাহিম খড়খড়ি উচ্চ বিদয়ালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
জানা গেছে, মনিরুল ইসলাম কৃষি কাজ করতেন। তার ঋণ রয়েছে ছিল জানা গেছে। তারা মাটির ঘরে বসবাস করতেন।
রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনিরুল ইসলাম কৃষি কাজ করতেন। তার ঋণ রয়েছে ছিল জানা গেছে। তারা মাটির ঘরে বসবাস করতেন।
পুলিশ জানায়, পরিবারের চারজন সদস্যই মারা গেছেন। এর মধ্যে এক ঘরে মা ও মেয়ে এবং অন্য ঘরে ছেলে ও বাবা মিনারুল ফ্যানের সাথে ঝুলছিলেন। এ সময় একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের কারণ উল্লেখ করে ওই চিরকুটে মিনারুল আরো লেখেন, ‘এই কারণে যে আমি যদি মরে যাই, তাহলে আমার ছেলেমেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো।’
“আমরা চারজন পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছি, আর দেখা হবে না খোদা হাফেজ। আমি মিনারুল নিচের যেসব লেখা নিজ হাতে লেখব। সব আমার নিজের কথা। আমরা চারজন মারা যাব। এই মরার জন্য কারো কোনো দোষ নেই…।
আমি প্রথমে আমার বউকে মেরেছি। পরে মাহিনকে এবং তারপর মিথিলাকে মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি। চারজনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলের বউ বাচ্চা না দেখে…এবং জানাজায় না যায়। আমাদের চারজনকে ঢাকতে আমার বাবাটা যেন টাকা না দেয়…। ’
‘কারো কাছে কিছুই চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে কারো কাছে ছোট হতে হবে না। আমার জন্য আমার বাবা অনেক লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’
মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।