August 13, 2025, 7:46 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
নোয়াখালীতে জেলা শ্রেষ্ঠ যুব সংগ-ঠকের পুরস্কার পেলেন রেইনবো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন সুমন র‌্যাব-১৩ এর অভি-যানে মা-দক উ-দ্ধার নারীসহ আ-টক ৫ ময়মনসিংহ সদরের শিক্ষার্থীদের মৌলিক দ-ক্ষতা যা-চাই প্রতিযোগিতা- ২০২৫ অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে বাস ও কোচ কাউন্টার মালিক ও শ্রমিক সমিতির ক-মিটি গঠন ত্রিশালের চকরামপুর কামিল মাদ্রাসায় কামিল ক্লাসের শুভ সূচনা ও হাফেজদের পা-গড়ী প্রদান তারাগঞ্জে রুপলাল ও তার জামাই নিহ-তের ঘটনায় দুই এসআইসহ ৬ পুলিশ কনস্টেবলকে ক্লো-জ জামায়াত সরকার গঠ-ন করলে সকল সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দেব – মাওলানা এমরুল ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলে জিংক ধানের সম্প্রসারণে নীতি নির্ধারণ ও প্রকল্প অংশী-দারগণের মতামত সভা তানোরেন বিলকুমারী বিলেন অভ-য়াশ্রমে মাছের পোনা অ-বমুক্ত গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন জেলার শ্রেষ্ঠ অফি-সার ইনচার্জ
গোদাগাড়ীতে দেড় শ-তাধিক পরিবার গৃ-হহীন, ১ হাজার বিঘা জমির ধান পানিতে ত-লিয়ে গেছে

গোদাগাড়ীতে দেড় শ-তাধিক পরিবার গৃ-হহীন, ১ হাজার বিঘা জমির ধান পানিতে ত-লিয়ে গেছে

রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলী : রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এতে নদীর তীরবর্তী জেগে ওঠা চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের জমি ও বসতবাড়ি। গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় মালামাল সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন চরবাসীরা।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৯ টায় রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৭.৪৩ মিটার, যা বিপৎসীমা ১৮.০৫ মিটারের মাত্র ০.৬৬ মিটার নিচে। পানি বৃদ্ধির কারণে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি এড়াতে টি-বাঁধ এলাকায় প্রবেশ ও পরিদর্শন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাশাপাশি নদীর পাড় সংলগ্ন ব্যবসায়ী ও দোকানিদেরও স্থানত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পানি বৃদ্ধির ধারা
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৪ জুলাই রাজশাহীতে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করে। ওইদিন পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৩৫ মিটার। পরবর্তীতে পানি কিছুটা কমলেও ৩১ জুলাই থেকে আবারও বৃদ্ধি শুরু হয় এবং এখনও তা অব্যাহত আছে।
গত ১০ আগস্ট সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৭.১৩ মিটার, যা একই দিনের সন্ধ্যায় বেড়ে দাঁড়ায় ১৭.২২ মিটারে। ১১ আগস্ট সকালে তা হয় ১৭.৩২ মিটার এবং সন্ধ্যায় পৌঁছায় ১৭.৩৯ মিটারে। পানি বৃদ্ধির ফলে রাজশাহী ও সংলগ্ন বিভিন্ন চরের ওপরের অংশ ডুবে গেছে। চর খিদিরপুরের বাসিন্দা মাসুদ বলেন, “নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় চরগুলো তলিয়ে গেছে। আমরা গবাদিপশু ও মালামাল লোকালয়ে নিয়ে এসেছি, কিন্তু খাওয়ানোর জন্য এখন গোখাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে।” আরেক বাসিন্দা রাকিব জানান, প্রতিদিন নৌকায় করে চরবাসীরা মালামাল সরাচ্ছেন। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে, কেউ ভাড়া বাসায় উঠছেন। গবাদিপশু সরাতে গিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন, কারণ চর এলাকায় এখনও বহু পশু রয়ে গেছে।

পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে ব্যাপকহারে নদীভাঙন ও বন্যা দেখা দিয়েছে। চর আষাড়িয়াদহ, চর বয়ারমারী, চর নওশেরা, হবুপাড়া, জামাইপাড়া, চর দিয়ার মানিকচকসহ আশপাশের এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে ধান, করলা, পাটসহ মৌসুমি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন নতুন বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বিশেষ করে চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের ১নং ও ২ নং ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশী ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে।

চর বয়ারমারী গ্রামের বাবুর বাড়ি (পিতা আলম) সম্পূর্ণ নদীতে তলিয়ে গেছে। একইসঙ্গে তার ৮ বিঘা ধানের জমিও নদী গিলে নিয়েছে। ১নং চর নওসাড়া ও ২নং চর দিয়ার মানিকচক পশ্চিমপাড়ার পরিস্থিতিও একই রকম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষক। প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। গবাদিপশু হারানো ও আবাদি জমি নষ্ট হওয়ায় অনেক পরিবার ভবিষ্যতের জীবিকা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।

ভাঙনের ভয় ও পানিবন্দি পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে অনেক পরিবার গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গোদাগাড়ীর অভ্যন্তরীণ গ্রামগুলোতে চলে গেছে। সেখানে তারা আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বা অস্থায়ী আশ্রয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। প্রতিবছর বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন শুরু হয় এবারও ব্যাতিক্রম হয় নি। এবার ব্যাপকহারে বন্যার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গন শুরু করেছে।

মরণবাঁধ ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মিত হয়েছে আবহমানকাল ধরে প্রবাহিত গঙ্গা-পদ্মা নদীর ভারতের অংশ ফারাক্কায় । ১৯৬৮-১৯৬৯ সালে ফরাক্কা ব্যরেজটি একতরফাভাবে নির্মাণ করে ভারত। কিন্তু ভারত কৌশলগতভাবে ব্যারেজটি তখনই চালু করেনি । তখন পাকিস্থানে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথানের ১৯৭০ সালের জেনারেল ইয়াহিয়া সামরিক শাসন জারি এবং সবশেষে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বধীনতা অর্জনের কাল। তারপরেও ভারত অপেক্ষা করে এবং অবশেষে ১৯৭৫ ইং সালের ২১ এপ্রিল ভারত ফারাক্কা চালু করার পর থেকে অব্যাহতভাবে মরণদশা শুরু হয়েছে দেশের নদীর উপর।

শুস্ক মৌসুমে ফারাক্কা ব্যরেজের সব কয়টি গেট বন্ধ করে নদী শাসন করে মেরে ফেলা হয় অসংখ্য নদ নদীকে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে পরিবেশ জীবন জীবিকায় নেমে এসেছে প্রচন্ড ধ্বস। দেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকা ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয় । গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নীচে নেমে যাওযায় উত্তাঞ্চলের বেশীর ভাগ নলকূপে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায় । দেখা দেয় তীব্র পানির সংকট । উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের জীবনে অভিশাপ বয়ে এনেছে এই ফারাক্কা ব্যারেজ; এসব এলাকার মানুষ যাকে মরণ ফাঁদ বলে জানেন ।
আবার বর্ষা মৌসুমে বিমাতৃসুলভ অচারণ করে ফারাক্কার সব কয়টি গেট খুলে দেশের মানুষকে ডুবিয়ে মারেন ভারত।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মাজরুল ইসলাম বলেন, । চর আষাড়িয়াদহ, চর বয়ারমারী, চর নওশেরা, হবুপাড়া, জামাইপাড়া, চর দিয়ার মানিকচক প্রভূতি এলাকার দেড় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ১ হাজার বিঘা জমির ধান ও অন্যান্য ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করে পাঠিয়েছি কোন ত্রান পাওয়া যায় নি।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম ভোলা বলেন, প্রতিদিনই নদী ভাঙ্গন বন্যা তীব্র হচ্ছে, ১ হাজার বিঘা জমির মৌসুমী ধান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। আমরা ৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় কেন্দ্র করেছি সেখানে লোকজনকে যাওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু বাড়ী ঘর রেখে যেতে চাচ্ছে না। পাঠানোর চেষ্ট করচ্ছি। গত বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ। আমরা ক্ষয়ক্ষতি তালিকা করে জমা দিয়েছি। বন্যা ও নদী ভাঙনের বিপরীতে কোন ত্রান পায় নি। বরাদ্ধও নেই। আগামীতে পেলে ক্ষতিগ্রস্থদের ঠিকভাবে বিতরন করা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. তাহিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনই নদী গিলে খাচ্ছে আমাদের জমি-বাড়ি। আজ যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, হয়তো কয়েকদিন পর সেটিও থাকবে না। সরকারি সহযোগিতা না পেলে আমরা কোথায় যাব জানি না।

উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এসডি রাশেদুল ইসলাম বলেন, রবিবার পানি বিপৎসীমার নিচে ৩১ সেন্টিমিটার থাকলেও সোমবার তা ১২ সেন্টিমিটার ও মঙ্গলবার ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

গোদাগাড়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একে এম মোমিনুল হকের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করে মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ জানান, ২০ টন জিআর চাউল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, প্রচুর শুকনা খাবার আছে। যাদের ঘর, বাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের তালিকা অনুয়ায়ী টিন দেয়া হবে। অস্থায়ীভাবে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

৩৭ বছর নদীতে থাকার অভিজ্ঞতার স্মৃতি থেকে আরমান মাঝি বলেন, “পদ্মার অনেক শাখা নদীও গত ৫০ বছরে শুকিয়ে গেছে। আগে পদ্মা কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত ছিল। শুষ্ক মৌসুমে এখন অনেক যায়গায় সরু খালের মতো পানি প্রবাহিত হচ্ছে।” বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কার সব কয়টি গেট খুলে আমাদের ভাসিয়ে দেয়। এবার বন্যা ও নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

চর আষাদিয়াদহ কাঁনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসগর আলী বলেন, গত বছর পদ্মার নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছিল জেলে পাড়ার একটি পাঁকা মসজিদ, ব্রীজসহ রাস্তা নদীগর্ভে চলে গেছে। কয়েক দিন ধরে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে তাদের এলাকায় কয়েকটা রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে টমেটো ও ধানের খেত। চর বয়ারমারি গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়ি সরিয়ে নিতে হয়েছে। চর বয়ারমারির পাশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার জেলেপাড়া গ্রামেও তীব্র নদীভাঙন চলছে। পোলাডাঙ্গা এলাকায় একটি সেতু ছিল। এই সেতুও ভেঙে গেয়েছিল নদীভাঙনের কারণে।

এদিকে,
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা, মহানন্দা, পূণর্ভবাসহ প্রধান নদীগুলোতে পানিবৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। এতে পদ্মাতীরবর্তী ১২টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র বলছে, আগামী দুই-একদিনের মধ্যে পানিবৃদ্ধি বন্ধ হতে পারে। অবস্থা আর খারাপ হবে না বলে মনে করছে সংস্থাটি। আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পদ্মায় পানি বিপৎসীমার মাত্র ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ২১.৭৩ মিটার সমতলে প্রবাহিত হচ্ছিল।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে দ্বিতীয়বারের মতো পানি বাড়ার কারণে বসতবাড়ির চারদিক ও ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মাতীরবর্তী হাজার হাজার পরিবার। তাদের অনেকে মানবেতর অবস্থায় রয়েছে। গবাদি পশুও নাজেহাল।

সদরের নারায়ণপুর, আলাতুলী, ইসলামপুর, দেবীনগর, শাজাহানপুর, চরবাগডাঙ্গা, সুন্দরপুর অর্থাৎ সাতটি এবং শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি অর্থাৎ দুর্লভপুর, পাঁকা, মনাকষা, উজিরপুর ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পদ্মার পানি প্রবেশ করে নিমজ্জিত, অর্ধনিমজ্জিত ও আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও বাগান। পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। গ্রামীণ সড়কে পানি ওঠায় মানুষের চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে ভোগান্তি। প্রশাসনের কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শনের পর জানিয়েছেন, দুই উপজেলায় পদ্মার পানিবৃদ্ধিজনিত কারণে অন্তত সাড়ে আট হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। পাঠদান বন্ধ রয়েছে অন্তত ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তবে কিছু প্রতিষ্ঠানের চারদিকে পানি থাকলেও পাঠদান বন্ধ হয়নি। এছাড়া আক্রান্ত সব ইউনিয়নে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মানুষ পানিবন্দি হয়নি।

পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, উজানে ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানি ও বৃষ্টিপাতের কারণে পানি বাড়ছে। ভারতে গঙ্গার সব পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
তবে আশা করা হচ্ছে পনি আর তেমন বাড়বে না। স্থির হয়ে কমতে শুরু করবে। এর পরও সার্বক্ষণিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় মহানন্দায় বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচে ১৯.৭৫ মিটার এবং পূণর্ভবায় বিপৎসীমার ১.৬৬ মিটার নিচ দিয়ে ১৯.৮৯ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। অর্থাৎ জেলার সব বড় নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচেই রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এখনও বন্যার পূর্বাভাস দেয়নি বলেও জানান প্রকৌশলী আহসান।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম বলেন, সব ইউনিয়নের সার্বিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তথ্য সংগ্রহের কাজ ছলছে। উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি। অন্তত ১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ। বুধবার ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে। ফসলি জমিতে পানি ওঠায় কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত।

মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD