মাগুরার শ্রীপুরের একটি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অ-নিয়ম ও অ-ভিযোগে কারণে প্রধান শিক্ষক সাময়িক ব-রখাস্ত

জিল্লুর রহমান,

মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরার শ্রীপুরের নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
বিভিন্ন অনিয়ম, আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল মান্নানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

রবিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় বলে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সূত্রে জানা গেছে।

বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শেখ আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগগুলো হলো—বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে নগদে রেখে খরচ করা, অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন, দায়িত্বে অবহেলা ও বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতা। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হন।

পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাকে সাময়িক বরখাস্তব করা হয় এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে পরিচালনা পরিষদের এতদ্বিষয়ক কমিটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না দিলে এবং তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।

এছাড়া আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাগজপত্র, আয়-ব্যয়ের হিসাবসহ সব দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য, ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলা অবসরে যাওয়ার পর সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তৎকালীন সভাপতি ও শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমাউনুর রশিদ মুহিত কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই তাকে বরখাস্ত করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সহকারী শিক্ষক সুবর্ণা জামানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেন।

একইদিনে গঠিত নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে শেখ আবদুল মান্নানকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। দায়িত্বের প্রথম দশ মাসে তিনি বিদ্যালয়ের ফান্ডের ২৪ লাখ ২৪ হাজার ৪৮৩ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে বিভিন্ন কাল্পনিক ভাউচারের মাধ্যমে তসরুপ করেছেন বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *