August 2, 2025, 5:40 pm
রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহী – চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভিতর পাস (পুরাতন সড়কের) বিদিরপুর – প্রেমতলী রাস্তায় সামান্য বৃষ্টিতে হাটুপরিমান পানি জমে থেকে । প্রেমতলী বাজার থেকে প্রেমতলী হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তার উপর দিয়ে পানি গড়ার কারণে কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ হালকা ভারী যানবাহন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করছেন। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
বিদিরপুর – প্রেমতলী সড়কের পানি নিষ্কাশনের ভাল ব্যবস্থা না থাকায়, বালির ভারী ড্রাম ট্রাক চলার কারণে রাস্তার বেহালদশা সৃষ্টি হয়েছে।
হাটুপরিমান পানির উপর দিয়ে ঝুকি নিয়ে চলছে আটো রিকসা, ভ্যান, মাইক্রো, বালির ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন।
উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী হাসপাতালের পাঁকা রাস্তাটি বৃষ্টির পানিতে ভেঙ্গে গেছে। ফলে বিপাকে বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। প্রেমতলী হাসপাতাল, গৌরঙ্গবাড়ী মন্দির, প্রেমতলী বালিকা বিদ্যালয় যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি এখন চলাচলের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একমাত্র এ সড়কটি ব্যবহার করে ছাত্র-ছাত্রী, ডাক্তার, রোগি, শিক্ষসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন। এলাকাবাসী জানান, ডাক্তার, রোগি, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, কৃষক, কৃষি শ্রমিক, কামার, কুমার জেলে ভ্যান ও টেম্পু চালকসহ সাধারন মানুষ এখন সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে, প্রতিদিন ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
শেখের পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামরুজ্জামান বিদ্যুতৎ জানান, বিদিরপুর – প্রেমতলী পর্যন্ত সড়ক উপর সামান্য বৃষ্টিতে হাটুপরিমান পানি জমে। আমাদের স্কুলের সামনে একই অবস্থা স্কুল, কলেজ মাদ্রাসার শ শ শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের বড় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহনের কাঁদাময় ছিটানো পানিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক পথচারীদের পোশাক পরিচ্ছেদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ছাড়া রোগি ও সাধারণ মানুষ দারুন আতঙ্কিত হয়ে চলাচল করেন। ছোট খাট দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। সকলের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাস্তাটি মেরামতসহ পানি নিস্কাশনে জোরদাবী জানাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ হাসানুল জাহিদ বলেন, প্রবল বৃষ্টির পনি রাস্তার উপর দিয়ে চলার কারনে রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে, বিষয়টি গোদাগাড়ী উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা গ্রহন করা কথা বলেছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মুনসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তা পরিদর্শনে লোক গেছে। আসলে কিভাবে মেরামত করা যায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ইনসাল্লাহ।
মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা সোহেল রানার সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করে মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
এদিকে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পালশা গ্রামের রাস্তাটি সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় জমে হাটু পরিমান পানি। বৃষ্টি কৃষি কাজের জন্য উপকারী, জনজীবনে স্বস্তি দিলেও কিছু জায়গায় তৈরি করে জনদুর্ভোগ। যদিও এর দায় বৃষ্টির নয়, মানুষের। স্বস্তির বৃষ্টি উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পালশা গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াত করার প্রধান রাস্তা বৃষ্টি শুরু হলে বর্ষাকালে হাঁটাচলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ রাস্তা দিয়ে যানবাহন, ভ্যান, সাইকেল, বাইক, মানুষ, শিক্ষার্থীগণ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এলাকাবাসী জানান এ রাস্তা পাঁকা করার জন্য মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ খাইরুল ইসলাম, সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী নিকট অনেকবার যোগাযোগ করেছেন এবং প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি। ফলে জনগনের কষ্টের সীমা নেই। এলাকাবাসী আরও জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত শুধু প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, বাস্তবে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে নি রাস্তাটিতে।
এ ব্যাপারে মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ খাইরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আগামীতে রাস্তা প্রথমে এইচবিবি করে দেয়া হবে সমস্যার হবে ইনসাল্লাহ।
এলাকার শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও এ রাস্তায় কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে নি। উন্নয়ন বৈষম্যের স্বীকার গ্রামের মানুষ। যাতায়াত করার প্রধান রাস্তা বৃষ্টি শুরু হলে বর্ষাকালে হাঁটাচলার অনুপযোগী হয়ে ওঠে। রাস্তায় জমে হাটুপরিমান পানি ও কাঁদা। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য উদ্ধোর্তন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ দিকে উপজেলার গোদাগাড়ী ইউনিয়নের, ৬ নাম্বার ওয়ার্ড (ধনঞ্জয়পুর) পাহাড়পুর থেকে সাফিনা পার্ক সংযোগ সড়ক সড়কের বেহালদশা এমনভাবে কাঁদাময় হয়েছে যেন ধান রোপন করা যাবে। সাফিনা পার্ক দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন কেন্দ্র যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ শ শ গাড়ীতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন। সেই রাস্তা এমন অবস্থান দেখে সবাই অবাক। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর রাস্তা নির্মান ও সংস্কার কাজ না করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মাসুদুল গনি মাসুদের দিকে আঙ্গুল তুলছেন এলাকাবাসী।
দীর্ঘদিন সংস্কারের কাজ হাতে না নেয়ার ব্যপারে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মাসুদুল গনি মাসুদের সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা তিনি রিসিভ করেন নি তাই বক্তব্য পাওয়া সম্ভাব হয় নি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, চেয়ারম্যান মাসুদ সাহেব সবসময়ই এমপি ফারুক চৌধুরীর সাথে সুসম্পর্ক করে লুটপাটে ব্যস্ত ছিলেন এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। রাস্তা নির্মান না হলেও তার পকেট ঠিকই মোটা হয়েছে। সাধারণ মানুষ, ছাত্রছাত্রী কাদার মধ্যে দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের কষ্টের শেষ নেই। অবিলম্ব রাস্তাটি ঠিক করা জরুরী।
মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী