August 2, 2025, 6:40 pm
পুঠিয়া(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ৩ নং বানেশ্বর ইউনিয়নে ‘বিএনপির প্রধান কার্যালয়’ নামে নতুন একটি অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে। এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। অনুষ্ঠানে স্থানীয় নেতার উপস্থিতি না থাকায় প্রশ্ন উঠেছে প্রকৃত নেতৃত্ব এবং দলে সমন্বয়হীনতা নিয়ে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়কসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।জানা যায়, কার্যালয় উদ্বোধনের ঘোষণাটি কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে ছড়ালেও ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হযরত আলী সরকার ও সদস্য সচিবকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। তাদের দাবি ৩নং বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির কোন অফিস হতে হলে সেটি আমাদের মাধ্যমে হতে হবে। তাছাড়া অন্য কেউ ইউনিয়ন বিএনপির অফিস করতে পারে না।এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হযরত আলী এবং সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ জানান, “আমরা কেউই এ অফিস উদ্বোধনের বিষয়ে জানতাম না। আমাদের কোনো মতামত বা অনুমতি ছাড়াই এটা করা হয়েছে। এ ধরনের আচরণ রাজনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, “আমার কোনো অনুমতি বা জানার বাইরে এই অফিস খোলা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি ও দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী।” তিনি আরও বলেন, “এই অফিসের নামে কোনো চাঁদাবাজি বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় ইউনিয়ন বিএনপি নেবে না।” আমরা এই বেআইনি কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।স্থানীয় বিএনপি নেতা আলম মেম্বার বলেন, “যারা উদ্বোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, তারা কেউই ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে নেই। এমনকি যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই মতিউর রহমান মতি একজন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক মাত্র। বিএনপির কোনো পদেই নেই।” অথচ তারা নিজেদের উদ্যোগে প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন করেছে। এটা কীভাবে সম্ভব?পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশে বিএনপির কোন প্রধান কার্যালয় বলে কোন কার্যালয়ের অনুমোদন নেই। যারা ৩ নং বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির প্রধান কার্যালয় বলে যারা কার্যালয় করেছে তারা কাজটা ঠিক করেনি। দলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্যই এমন কাজ করেছে। আর কোন বিএনপির অফিস করতে হলে আমাদের বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি আছে তারা করবে। অথচ আমার আহবায়ক কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিবসহ কেউ এই বিষয়ে জানেনা। যেখানে পার্টির কোন প্রধান কার্যালয় নেই সেখানে এই ধরনের কাজের কোন অনুমোদন বা গ্রহণ যোগ্যতা নেই।বানেশ্বর বণিক সমিতির আহবায়ক মতিউর রহমান মতি জানান, ইউনিয়ন বিএনপিকে দাওয়াত দিয়ে, প্রয়াত নাদিম মোস্তফার ছেলের উদ্যোগে অফিসটি উদ্বোধন করা হয়। বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব কে দুই দিন আগে মুঠোফোনে বলা হয়েছে। তারা কেন আসেনি সেটা আমার জানা নেই। আর এখানে বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির প্রধান কার্যালয় দীর্ঘদিন থেকে ছিলো। বিভিন্ন নেতা কর্মী বসেন ও মত বিনিময় করেন।বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি আপনাদের নিয়ে অফিস উদ্বোধন করবে। সেখানে আপনারা তাদের দাওয়াত দিয়ে প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন বিষয়টি কেমন দেখায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে থেকে ছিলো তাই করেছি কোন অভিযোগ থাকলে আমরা তা পরিবর্তন করবো। স্থানীয় নেতারা এই অনুমোদনহীন অফিস উদ্বোধনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত এ বিষয়ে দলীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেনউল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে বানেশ্বর পেট্রোল পাম্পের উত্তর পাশে ৩ নম্বর বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন প্রয়াত এমপি অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফার পুত্র জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময়।
ঘটনাটি বিএনপির স্থানীয় নেতৃত্বে দ্বন্দ্ব ও সমন্বয়হীনতার স্পষ্ট প্রতিফলন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝেও বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে এখনো কেন্দ্রীয় বিএনপির কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। #
মাজেদুর রহমান (মাজদার)
পুঠিয়া, রাজশাহী।