July 24, 2025, 10:51 pm
মোঃ শহিদুল ইসলাম
বিশেষ প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা এলাকায় রান্নাঘর মেরামত নিয়ে পারিবারিক কলহ থেকে প্রাণ গেল এক গার্মেন্টকর্মীর। ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ডের ছয়দিন পর অবশেষে মূল ঘাতক দেবর রনি (২৮) ও তার সহযোগী সোলাইমান (৪৮)–কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পতেঙ্গা মডেল থানা সূত্র জানায়, নিহত ফেরদৌসি আক্তার (৩২) স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। ২০১৩ সালে মোঃ লোকমান হোসেন (৪৫) এর সঙ্গে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক তার বিয়ে হলেও, লোকমানের পরিবার সেই সম্পর্ক কখনও মেনে নেয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই স্বামী ও দেবরের হাতে নির্যাতিত হয়ে আসছিলেন ফেরদৌসি।
পুলিশের ভাষ্য মতে, ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রান্নাঘর সংস্কার নিয়ে ফেরদৌসির সঙ্গে স্বামী লোকমানের কথা কাটাকাটি হয়, যা পরে শারীরিক নির্যাতনে রূপ নেয়। সেই উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় ১৩ জুলাই রাতে ফের ঝগড়া বাঁধে স্বামী-দেবরের সঙ্গে। রাত ১১টা ৩০ মিনিটে প্রতিবেশী আবু বক্করের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ফেরদৌসিকে তার দেবর মোঃ রনি ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। বুকে-পিঠে ছুরির গভীর আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান হতভাগ্য এই নারী।
পরদিন নিহতের ভাই মোঃ মামুন খান (৩৬) বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা (নং-১২, তারিখ: ১৪/০৭/২০২৫; ধারা: ৩০২/৩৪ পেনাল কোড) দায়ের করেন।
বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আমিরুল ইসলামের নির্দেশে এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সোহেল পারভেজ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার জামাল উদ্দিন চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে, থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই এইচ এম হারুনুজ্জামান রোমেলসহ পুলিশের একটি দল অভিযানে নামে।
একটানা নজরদারির পর ২০ জুলাই, চড়িহালদা মোড় এলাকার একটি বাসা থেকে হত্যা মামলার ১নং আসামী মোঃ রনি এবং ৩নং আসামী সোলাইমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পতেঙ্গা থানা পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পেছনে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে পারিবারিক সহিংসতা ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে জনসচেতনতা ও আইনি সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পাঠকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হলো এইঃ
একটি রান্নাঘর ঘিরে শুরু হওয়া-
পারিবারিক কলহ এমন ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে—এই হত্যাকাণ্ড তার জ্বলন্ত উদাহরণ। ঘরে ঘরে এমন সহিংসতা বন্ধ করতে পরিবার ও সমাজকে হতে হবে আরও সতর্ক ও মানবিক।