July 14, 2025, 9:32 pm
আমিরুল ইসলাম কবির,
স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ৫ বছরের এক কন্যা সন্তানের জননী সম্পা আক্তার (২১)’র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে না হত্যা করে মুখে কীটনাশক ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৩ই জুলাই) বিকেলে পৌর এলাকার শিমুলিয়া গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায়।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়,পলাশবাড়ী উপজেলার ১নং কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের কাতুলী গ্রামের ইসলাম মিয়ার মেয়ে সম্পা আক্তারের সাথে পৌর এলাকার শিমুলিয়া গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে মোনারুল ইসলাম মামুনের সাথে প্রায় ৭ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখেই কাটছিল।
এরই মধ্যে তাদের সংসারে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু স্বামী মামুন ক্যাসিনো,জুয়া ও মাদকে আসক্ত হয়ে যৌতুকের টাকার জন্য এবং কারণে অকারণে তাদের সংসারে পারিবারিক কলহসহ অশান্তির সৃষ্টি বলে সম্পার বাবা মা সহ পরিবারের লোকজন দাবী করে । আর ঘটনার দিন বিকেলে গৃহবধু সম্পা আক্তার বাড়ীর সকলের অজান্তে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে বলে তার স্বামী,শ্বশুর শ্বাশুড়ি অপপ্রচার চালায়। কিন্তু এলাকার অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,স্বামী মামুন তার স্ত্রী সম্পা’কে বেদম প্রহার করে। এসময় সম্পা মরণাপন্ন হলে অবস্থা বেগতিক দেখে তার মুখে কীটনাশক ঢেলে দিয়ে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার চালায় স্বামী ও স্বামী পরিবার। পরে স্বামী ও শ্বশুর শ্বাশুড়ি সম্পাকে পলাশবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তড়িঘড়ি করে লাশ ধুরন্ধর স্বামী ও শ্বশুর শ্বাশুড়ি তাদের বাড়িতে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে,সম্পার মৃত নিশ্চিত হওয়ায় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বাড়ির মূল্যবান মালামাল কৌশলে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে বলে এলাকার অনেকেই সহ সম্পার পিতার পরিবার দাবী করেন। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রভাবের জন্য মোটা অংকের নগদ নারায়ণ ইতিমধ্যেই ধুরন্ধর মামুন ও তার পরিবার ঢেলেছেন বলে তারা বিভিন্ন সূত্রে খবর কানে আসছে বলেও জানান।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানা অফিসার ইনচার্জ মো.জুলফিকার আলী ভূট্টো বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,সম্পা আত্মহত্যা করেছে না তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই তা জানা যাবে।
সম্পার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও তার পিতা ও পরিবারের লোকজন জানান।
পরদিন সোমবার সম্পার মরদেহ পিতার বাড়িতে আনলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে ও জানাজা শেষে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে লা#শ দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা না হলেও সম্পার ভাই /পিতা ও নিকটজনরা থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।।