July 12, 2025, 5:44 pm
আজিজুল ইসলাম, যশোরঃ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যশোর-৮৫/১ শার্শা আসনে রাজনীতির মাঠ এখন গরম। তফসিল ঘোষণার আগেই বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ৪ প্রার্থী নির্বাচনী এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেই সাথে জামায়াতের একক প্রার্থী তো রয়েছেনই। শার্শা আসনে এবার আওয়ামী লীগ অনুপস্থিত, নেই জাতীয় পার্টি ও এনসিপির প্রচার প্রচারণা বা সাংগাঠনিক কার্যক্রম। তাই নির্বাচনী প্রতিযোগিতা হবে এবার বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্য। তাও তীব্র প্রতিযোগীতা হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএনপির চারজন নেতা মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন। তারা সক্রিয় ভাবে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আর কোনো দলের প্রার্থী মাঠে না নামলেও জামায়াতের একক প্রার্থী শুরু থেকেই মাঠে রয়েছেন। তারা খুব দৃঢ়তার সাথে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন যশোর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করেছিলেন। সেই নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী কেন্দ্র দখল করে বিজয়ী হয়েছিলেন। মফিকুল হাসান তৃপ্তি এর আগেও কয়েকবার মনোনয়ন পেয়েছেন। সে সময় সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনিই জয়লাভ করতেন।
বর্তমান সময়ের আলোচিত ব্যাক্তি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন। তার দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে।
দুঃসময়ে দলের পাশে থাকা এবং তৃণমূল সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। এছাড়াও তিনি শার্শা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দু’বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান লিটন এবং উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি ও দলের প্রধান উপদেষ্টা খায়রুজ্জামান মধু মনোনয়ন পেতে মাঠে সক্রীয় রয়েছেন। তাদেরও দলে সাংগঠনিক কার্যক্রমে যথেষ্ট ভুমিকা রয়েছে।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে একক প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান।২০০৮ সালের জোট ভিত্তিক নির্বাচনে তিনি মাত্র ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দীনের কাছে হেরেছিলেন। তিনি জামায়াতের প্রার্থী হলেও তার সর্বদলীয় জনপ্রিয়তা রয়েছে এলাকায়। তার সাথে প্রতিদন্ধিতা করা যে কোনো প্রার্থীর পক্ষে কঠিন হবে।
যশোর-১ আসনে বর্তমান ২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯২ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৬ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৪৭ হাজার ১১৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ২ জন।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিএনপি যদি যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দিতে পারে এবং দলীয় ঐক্য বজায় থাকে, তবে এই আসনটিতে তাদের জয়ের সম্ভাবনা থাকবে।
এই আসনে এর আগে আওয়ামী লীগ ৭ বার, বিএনপি ৩ বার, ও জামায়াত ১ বার করে জয়ী হয়েছেন।
তবে জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে শার্শা উপজেলায় আওয়ামী লীগ কার্যত অনুপস্থিত ও নিষ্ক্রিয়। ফলে এবারের নির্বাচন জামাত ও বিএনপির জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং মর্যাদার লড়াই হয়ে দাঁড়াবে।