June 22, 2025, 9:00 pm
মো. সেলিম মিয়া ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : দিন, মাস, বছর, যুগ পেরিয়ে গেলেও আশ্বাসের কোনদৃশ্যমান সাড়া না পাওয়া যায় হতাশ স্থানীয়রা। বলছিলাম ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১১ নং রাধাকানাই ইউনিয়নের বয়ারমারা টু আছিম সড়কের কথা। জনপ্রতিনিধিরা কথা না রাখলেই বা ভোক্তভোগিদের কী করার আছে? তবে বৈষম্যহীন বাংলাদেশে কী ঐ এলাকার মানুষ কোন আলোর দেখা পাবে?
জানা যায়, রাধাকানাই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামের নাম পলাশতলী। পলাশতলীর সুনাম জাতীয় পর্যায় ছাড়িয়ে এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অপেক্ষায়। খ্যাতির উন্নয়ন যদি এমন হয়, তাহলে বিষয়টা কেমন হয়ে গেল নাহ! এ গ্রামের লাল চিনি জিআই পন্য হিসাবে শুধু প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায়। কৃষকের কাছে মওজুত চিনি সারা বছর বিক্রি হয়। কৃষকেরা ভালো দামের আশায় প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় এটি বিক্রি করে থাকে। আর পাইকাররা তা গ্রাম হতে সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে। রাস্তা খারাপ হওয়ায় চিনির দাম প্রান্তিক পর্যায় থেকে ভোক্ত পর্যায়ে অনেক পার্থক্য হয়। কারণ সংগ্রহ খরচ অনেক বেশি হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, গ্রামে-গঞ্জে অহরহ গাড়ী চলাচলের কারণে আমাদের রাস্তাগুলো এত খারাপ হয়ে যায়। এ রাস্তা গিয়ে আমাদের এলাকার প্রাচীনতমবাজার পলাশতলী বাজারে যেতে হয় হাজার হাজার মানুষকে। পলাশতলী বাজারে ২টি হাই স্কুল, ১টি মাদ্রাসা, ১ টি প্রাইমারি স্কুল সহ বেশ কয়েকটি কিন্ডার গার্ডেন রয়েছে। প্রতিদিন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার ছেলে মেয়েরা আসা যাওয়া করে। চলাচল অনুপযোগি রাস্তায় অনেক মেয়েরা ইভটিজিং এর শিকার হয়। কারণ কাঁদা মাড়িয়ে যাওয়ার সময় পড়নের ড্রেস অনেক সময় এলোমেলো হয়। এতে এক শ্রেণির ছেলেরা মেয়েদের সাথে কথা বলার সুযোগ পায়। প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি পলাশতলী বয়ারমারা মোড় থেকে শুরু করে
পলাশতলী বাজার পর্যন্ত অন্যদিকে বয়ারমারা মোড় থেকে ফুলবাড়ীয়া টু আছিম রাস্তায় মেইন সড়কে সংযোগ। যা বর্তমানে খানাখন্দে ভরা। বর্ষার সময় কাদা-পানিতে রাস্তাটি এতটাই নাজুক হয়ে পড়ে, স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে ওঠে। লাল মাটি অধ্যুষিত রাস্তায় বর্ষা মৌসুমে, এই রাস্তার ছোট বড় গর্তে পানি জমে যায়। তখন গাড়ি চলাচল তো দ‚রের কথা, পায়ে হেঁটেও চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। শুকনো মৌসুমে ধুলাবালিতেও চলাচল করা কঠিন। তা ছাড়া রাস্তার ছোট-বড় গর্তে ঘটছে দুর্ঘটনা। অসুস্থ রোগিকে জরুরি অবস্থায় হাসপাতালে নিতে গেলে কোন প্রকার যানবাহন পাওয়া যায় না। এ রাস্তার পাশেই পলাশতলী পুর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
স্থানীয় নাজমুল হোসেন জানান, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুঘর্টনা ঘটছে। দোকানের মালামাল আনতে অটোরিকশা পাওয়া গেলেও গুনতে হয় অতিরিক্তি ভাড়া। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ-সবল মানুষেরও নাভিশ্বাস ওঠে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল এহেসান উজ্জল বলেন, রাস্তাটি চলাচলে মানুষের দুর্ভোগের স্বীকার। রাস্তাটি হেরিংবোন বন্ড (ইটের সোলিং) করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
পলাশতলী আমিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম সায়ফুল ইসলাম কাজল বলেন, বহু বছর ধরে এই রাস্তাটি উন্নয়ন কর্মকা- থেকে বঞ্চিত। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন কাঁদা-পানিতে ভিজে স্কুলে আসে, অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়, আবার অনেক সময় স্কুলে পৌঁছানোই সম্ভব হয় না। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ হাতে জুতা নিয়ে পায়ে হেঁটে স্কুলে আসে ।