ঝিনাইদহের ৫ যুবককে কম্বোডিয়ায় বিক্রির অভিযোগ

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতাঃ
আদম পাচারকারী চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে ঝিনাইদহে বহু পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। আর্থিক সংগতি হারিয়ে পরিবারগুলোতে চলছে কষ্ট আর শোকের মাতম। আদাম পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেও তারা রয়েছে বহাল তবিয়তে। প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে দালালরা সব কিছু ম্যানেজ করছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।

ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনই অভিযোগ করেন হালিমা খাতুন নামে এক অসহায় নারী। তার ছেলে শাহীনকে থাইল্যান্ডে নিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম্বোডিয়ায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। শহীনের মতো আরো ৮ যুবককে চক্রটি প্রতিশ্রুত দেশে না পাঠিয়ে কম্বোডিয়া পাঠিয়ে ঝুকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার শাখারীদহ গ্রামের কুয়েত প্রবাসি আলতাফ হোসেনের স্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে ফজলুল করিম ফয়জুল, তার ছেলে ফয়সাল আহমেদ, স্ত্রী জাহানারা খাতুন ও পুত্রবধু তারানা হক রথী (২০) বিদেশ পাঠানোর নামে এলাকার বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও ঠকবাজীর মাধ্যমে কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হালিমা খাতুন দাবী করেন, তার ছেলে শাহীন ছাড়াও নাথকুন্ডু গ্রামের মোঃ আকরাম আলী, একই গ্রামের সিফাতুল্লা, হলিধানী গ্রামের মোঃ রাহুল আহমেদ, প্রতাপুপর গ্রামের রানা মিয়া, সদর উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের সবুজ, ঝিনাইদহ পৌর এলাকার কলাবাগানপাড়ার নাজিব ও বেড়াদি গ্রামের আব্দুল গাফ্ফারের কাছ থেকে মাথাপ্রতি ৭ লাখ টাকা করে মোট ৫৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এরমধ্যে সবুজ, নাজিব ও আব্দুল গাফ্ফার নেপাল বিমান বন্দর থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।

প্রতারণার শিকার নাজিব ও সবুজ নামে দুই যুবক জানান, থাইল্যান্ডে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেওয়ার জন্য ফজলুল করিম ফয়জুলসহ আসামীগণ তাদের প্রলুদ্ধ করে। তাদের কথা বিশ্বাস করে ঝিনাইদহ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জনপ্রতি সাত লক্ষ টাকা করে দেন।

টাকা নেওয়ার পর তাদের থাইল্যান্ডে না পাঠিয়ে কম্বোডিয়ার স্ক্যাম্প কোম্পানীতে ১৮ ঘন্টা শ্রমের চুক্তিতে বিক্রি করে দেন। ফলে সেখানে তারা নিদারুন কষ্টে আছেন। মাসে মাসে কোন টাকা টাকা পাঠাতে পারছেন না। তাই ব্যাংক ঋণ দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌচেছে যে, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো তো দূরের কথা এখন তারা জীবন নিয়ে ফিরতে পারবে কিনা তা নিয়ে পরিবার শংকা প্রকাশ করেছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে মহব্বত হোসেনের অবস্থা গুরুতর হলে তাকে ফরিদপুরে স্থানান্তর করা হয়। দুপুরে ফরিদপুর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল হাওলাদার বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।

আতিকুর রহমান
ঝিনাইদহ।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *