January 29, 2025, 2:56 am
মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি : জুলাই-আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে অন্যদের মত সক্রিয় ছিলো পঞ্চগড়ের ফাতেমা আক্তার (২৪)। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শেখ হাসিনা সরকারের পতন পর্যন্ত রাজপথেই ছিলো ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা এই তরুনি। সবশেষ করেছেন বিজয়োল্লাসও। তবে আন্দোলনে বিজয়ী এই নারী যোদ্ধা এখন হারতে বসেছেন জীবনযুদ্ধে।
ফাতেমা আক্তারের দুটি কিডনিই বিকল হয়েছে। বর্তমানে তিনি লড়ছেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে তার। এ যাত্রায় বাঁচতে চান তিনি। কিন্তু ব্যয়বহুল চিকিৎসা ভার বহন করতে পারছেনা তার হতদরিদ্র পরিবার। এ অবস্থায় সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা চান তিনি।
ফাতেমা আক্তারের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের সর্দারপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম হাচেন আলী। তার মা নেই, মারা গেছেন ৬ বছর আগে। ৪ বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ফাতেমা বর্তমান ঢাকার এক স্বজনের বাসায় থেকে শ্যামলীর কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ফাতেমা ২০১৬ সালে স্থানীয় চাকলাহাট কে.পি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে পঞ্চগড় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে ডিপ্লোমা ইন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হন। ২০২০ সালে তার কোর্স শেষ হয়। এরপর দীর্ঘদিন পরিবারের সঙ্গেই থাকলেও গত একবছরের বেশি সময় ধরে চাকরির সন্ধানে গাজীপুরে অবস্থান করছিলেন। সেখানে থেকেই নিচ্ছিলেন বিভিন্ন চাকরির প্রস্তুতি। ফলে সেখানেই জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে অংশ নেন।
এদিকে, ফাতেমার চিকিৎসা ভার বহনে দিশেহারা তার দরিদ্র পরিবার। কৃষক বাবার উপার্জনে যেখানে পরিবার চালানোই কঠিন, সেখানে ব্যয়বহুল চিকিৎসা খরচ যোগানোর সাধ্য একেবারেই নেই তাদের।
মুঠোফোনে কথা হয় ফাতেমার সঙ্গে। তিনি বলেন, ডিপ্লোমা পাশের পর বাড়িতেই ছিলাম। ২০২৩ সালে গাজীপুরে যাই চাকরীর প্রস্তুতির জন্য। এতদিন সেখানেই ছিলাম। সেখানে থেকেই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অংশ নেই। এরমধ্যে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হই। পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানতে পারি আমি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত, আমার রক্তের হিমোগ্লোবিন অনেক কম। তবে তখন কিডনির কোন পরীক্ষা করা হয়নি। গত বছরের নভেম্বরের দিকে আবার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে কিডনির টেস্ট দেয় চিকিৎসক। তখন জানতে পারি আমার দুটি কিডনিই বিকল।
ফাতেমা আরো বলেন, এখন ডায়ালাইসিসের ওপর বেঁচে আছি। সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস করতে হয়। যা আমার পরিবারের কাছে অনেক ব্যয়বহুল। এভাবে কতদিন বাঁচবো জানিনা।
কিডনি প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত আছে কি-না জানতে চাইলে ফাতেমা বলেন, আমারতো মা নেই, কে আমাকে কিডনি দিবে? বাবা দিতে চাইলেও তার সঙ্গে আমার রক্তের গ্রুপের মিল নেই।
ফাতেমার বাবা হাচেন আলী বলেন, একসময় ভ্যান চালিয়ে আয়রোজগার করতাম। খুব কষ্ট করে সন্তাদের বড় করেছি। এই মেয়েটির স্বপ্ন ছিলো একটি ভালো চাকরি করবে। পরে নিজের খরচে বিএসএসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে। সব স্বপ্নইতো শেষ হয়ে গেলো। মেয়ের চিকিৎসা ব্যয় বহন করাও আমার পক্ষে কঠিন হয়ে গেছে। আমি বিত্তবানদের সহযোগিতা চাই।
ফাতেমাকে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন যে কেউ। 01305139770 (নগদ) এবং 01580793368 (বিকাশ)।