জাকিরের যন্ত্রণায় জনজীবন অতিষ্ঠ, প্রশাসন নির্বিকার

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের সীমান্ত সংলগ্ন নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুর ইউনিয়নের (ইউপি)কুঁচড়া গ্রামে পুকুর সংস্কার এবং সেই মাটি অবৈধভাবে বিক্রি করে কাঁচাপাকা রাস্তা নস্ট ও পরিবেশ দুষণ করা হচ্ছে। গ্রামবাসী বলেন, মেম্বার জাকিরের যন্ত্রণায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও প্রশাসন নির্বিকার। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশাসনকে জানালে উল্টো বিপদে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে নিয়ামতপুর উপজেলা সীমান্তে পুকুর খনন করা হলেও তানোর উপজেলার চৌবাড়িয়া, কাদিপুরসহ বিভিন্ন ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারি পাকা-কাঁচা রাস্তা নষ্ট এবং ভেকুঁ ও ট্রাক্টরের বিকট শব্দের পাশাপাশি ধুলা-বালিতে পরিবেশ দুষণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে ফসলি জমি ভরাট বা মাটি বিক্রি দুটোই দন্ডনীয় অপরাধ।অথচ এই অপরাধমুলক কাজ করা হচ্ছে প্রকাশ্যে দিবালোকে ? কিন্ত্ত অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নিরব ?
স্থানীয়দের অভিযোগ,উপজেলা প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে এসব অবৈধ মাটি বাণিজ্য করা হচ্ছে। স্থানীয়রা
বলেন, ট্রাক্টরে কাঁদা মাটি পরিবহণ
করায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি কাঁচা-পাকা রাস্তা-ঘাট।মাটিবাহী অবৈধ গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে ধুলোবালিতে অতিষ্ঠ পথচারিরা। এছাড়া প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আবার এসব মাটি বাহী ট্রাক্টর গাড়ি চালাচ্ছেন অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর।

অভিযোগ উঠেছে,রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় একশ্রেণির এক্সেভেটর (ভেকু) ব্যবসায়ীরা চুক্তিভিত্তিক মাটি বাণিজ্যে করছে। আর সমাজের কিছু অসাধু ব্যক্তির পকেট ভরাতে গিয়ে রাস্তা-ঘাট নষ্ট হচ্ছে,এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা নিমিষেই বানের জলে ভেসে যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খোলা ট্রাক্টরে পুকুরের মাটি এনে বিভিন্ন জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।মাটিবাহী গাড়ির কাদামাটি পড়ে কাঁচাপাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। সেই কাদামাটি সরানোর কাজে শ্রমিকদের নিয়োজিত রেখেছেন ভেকু ব্যবসায়ীরা। কোদাল দিয়ে মাটি সরাতে গিয়ে পাকা সড়কের পাথর ও উপরের প্রলেপ বিটুমিন উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। মকবুল, কাদের ও মিজানুর বলেন, ভেকুর বিকট শব্দ ও ধুলাবালিতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা বলেন,বিষয়টি ইউএনও এবং বাহাদুর ইউপির বিট অফিসারকে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা প্রশাসক (ডিসি) বলেন, ইউএনও সাহেবকে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে। এবষিয়ে জানতে চাইলে পুকুর মালিক জাকির মেম্বার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনুমতি নিয়ে পুরাতন পুকুর পুনঃখনন করা হচ্ছে তাতে সমস্যা কি ? তিনি বলেন, অল্প কিছু মাটি ইট ভাটায় দেয়া হয়েছিল,কিছু মাটি এলাকায় দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রাস্তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, রাস্তার বিটুমিনের শত্রু হচ্ছে কাদামাটি। নিয়ম না মেনে মাটি পরিবহন করায় রাস্তায় কাদামাটি পড়ে রাস্তাঘাট দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। এবিষয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন, আমাকে ভিডিও ফুটেজ ও লোকেশান দেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে ভেকুঁ দালাল আলমগীর বলেন,তার গাড়ী জাকির মেম্বার ভাড়া নিয়েছে,সে সব কিছু ম্যানেজ করে পুকুর পুনঃখনন ও মাটি বিক্রি করছে।#

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *