বাহুবলে শাহজালাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী বহাল তবিয়তে

এস মশিউর,
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি। । হবিগঞ্জের
বাহুবল উপজেলার নতুন বাজার শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট বানিজ্য সহ ব্যাপক অনিয়ম- দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিগত সরকারের সময়ে দলীয় প্রভাব দেখিয়ে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আয়-ব্যয়ের অর্থকড়ি মনগড়াভাবে পকেটস্থ করেন। প্রধান শিক্ষক নিজেকে মন্ত্রী এমপির আত্মীয় পরিচয়ে একক আধিপত্য গড়ে তুলে বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন দূর্নীতি। অভিভাবক সহ এলাকাবাসীর মধ্যে তার অনিয়ম- দূর্নীতি এবং আত্মসাত নিয়ে প্রতিক্রিয়া থাকলেও পকেট কমিটির কারণে বরাবরই পার পেয়ে যান দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী। আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আইয়ুব আলী জুলাই বিল্পবের পর বেশ কিছু ছিলেন আড়ালে। ৫ আগস্ট নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটলেও দূর্নীতির মহানায়ক আইয়ুব আলী এখনো বহাল তবিয়তে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারী ও বেসরকারী অনুদান, ছাত্রী- ছাত্রীদের বেতন, পরিক্ষার ফি, উপবৃত্তি ও উপবৃত্তির ভর্তুকি টাকা এবং সার্টিফিকেট বিক্রি করে অর্জিত টাকার যথাযথ কোন হিসাব নেই। সবই চলছে প্রধান শিক্ষকের মর্জিমাফিক। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অষ্টম শ্রেণি পাশ জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করে তিনি আজ কোটিপতি। শুধু একটি সার্টিপিকেট বিক্রি করেই কামিয়েছেন ২০ হাজার টাকা। উৎকুচের এ টাকার একটি ভাগ পকেটস্থ হয়েছে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের। যাকে জাল সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে সে ওই সার্টিফিকেট দিয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে চাকরি নিয়েছে আরেকটি স্কুলে।
সূত্র মতে, সাবেক ওই ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় বিদ্যালয়ের ফান্ডের একটি অংশ তার নিয়মিত তার পকেটস্থ হতো।
চাকরির প্রাক্কালে প্রধান শিক্ষকের পরিবারে তার আর্থিক অবস্থা তেমন সচ্ছল না থাকলেও এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরির সুবাদে এখন তিনি কোটিপতি। ব্যাংক ব্যালেন্স ছাড়াও রয়েছে নিজস্ব বাসাবাড়ি। এখানে চাকুরী করে নিজের সন্তানকে উচ্চ শিক্ষার্থে পাঠিয়েছেন সুদুর ইউরোপে। বিলাসী জীবন যাপনে যা করার সবই করেন এই স্কুল শিক্ষক। অভিযোগ রয়েছে, ২০১৫ সালে সরকারিভাবে সারা দেশে বিদ্যুতায়নের কার্যক্রম শুরু হলে আইয়ুব আলী একটি সংবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রামের লোকজনকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এসময় তিনি নিজেকে তৎকালীন সমাজ কল্যান মন্ত্রী প্রয়াত এনামুল হক মোস্তফা শহীদ এমপির নিকটাত্মীয় পরিচয়ে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে অধিপত্য কায়েম করেন। এসময় তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে আবির্ভূত হন মোহাম্মদ আলী সরকার ওরফে আক্তার নামের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক ইলেক্ট্রশিয়ান।
এদিকে জুলাই বিপ্লবের পর প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী বেশ কিছু দিন বিদ্যালয় ছেড়ে নিজেকে আড়ালে রাখেন। জানা গেছে, স্থানীয় পর্যায়ে লবিং করার প্রায় সপ্তাহ তিনেক পর বিদ্যালয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেন। বিগত সময়ে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাদের হস্তক্ষেপে এসব অভিযোগের কোন সুরাহা হয়নি। বরং অভিযোগকারীদেরকেও উল্টো হেনস্তা করার ঘটনা সংঘটিত হয় তৎকালীন সময়ে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *