January 10, 2025, 10:02 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
শীতার্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের বিত্তশালী ব্যাক্তিদের আহবান -মাইমুনুল ইসলাম মামুন গোদাগাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে রুগ্ন গরু বিতরণ রংপুরে বিএনসিসি’র এক্স ক্যাডেটস্ মিলনমেলা-২০২৫ অনুষ্ঠিত গৃহবধূ থেকে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বরূপকাঠি পৌরসভার সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম ফরিদ এর মেয়ে ফারজানা ইসলাম কলির ইন্তেকাল তানোরে হাজী সাহেবের বাসর রাতে বউ উধাও হামলা-মামলা-হয়রানি বন্ধের দাবিতে আগামীকাল রংপুরে বিভাগীয় সাংবাদিক সমাবেশ রাঙ্গাবালীতে মান্তা সম্প্রদায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ নুনখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা তাই ক্ষমতার দাপটে দুর্নীতি-লুটপাট ঘাটাইলে লিফলেট বিতরণ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি
গৃহবধূ থেকে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া

গৃহবধূ থেকে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জীবন্ত কিংবদন্তি নেতৃত্ব সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। দলের ভিতর এবং বাইরের নানা ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, প্রতিহিংসা ও গুজবের বহু অন্ধকার গলিতেও তিনি পথ হারাননি এবং গতানুগতিক রাজনীতির স্রোতে গা ভাসিয়ে দেননি।নিজস্ব, স্বকীয়তা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন অমায়িক ব্যবহার ও প্রচণ্ড সাহসী নেতৃত্বের লৌহমানব গৃহবধু থেকে তৃণমুলের রাজনীতির সীমানা অতিক্রম করে ধীরে ধীরে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার নেতৃত্ব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার প্রতি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার যে বহিঃপ্রকাশ তাতে তিনি না চাইলেও দেশের আমজনতা, দলের তৃণমুল নেতা ও কর্মী-সমর্থকগণ তাকেই তাদের নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কারণ সাধারণ মানুষের নিখাদ ভালবাসার চেয়ে বড় কোন শক্তি নাই।

জানা গেছে, সাধারণ গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আপোসহীন নেত্রীতে পরিণত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও দুইবারের বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ওয়ান-ইলেভেনের সময় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশ ছাড়ার জন্য চাপ থাকলেও দেশ ছাড়েননি তিনি।
এদিকে এরপর বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি। জেলও খাটতে হয়েছে তাকে। কিন্তু আপোস করেননি। কারাগারে থাকাবস্থায় খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিল বিএনপি নেতারা। তবুও তিনি নতিস্বীকার করেননি। আওয়ামী লীগ আমলে তাকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য বিএনপি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন জানানো হলেও তাতে সরকার সাড়া দেয়নি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে মুক্তি দেন। মুক্তি পাওয়ার পর পরিবার ও তার দল বিএনপি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে।
জানা গেছে, ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে যখন হত্যা করা হয় তখন বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন নিতান্তই একজন গৃহবধূ। দুই সন্তানকে নিয়ে তখন ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থান করছিলেন খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি তখন বিপর্যস্ত এবং দিশেহারা। জিয়াউর রহমানের পরে দলের হাল কে ধরবেন সেটি নিয়ে নানা আলোচনা চলতে থাকে।
এদিকে ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি খালেদা জিয়া বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে যোগ দেন। বছর খানেক যেতে না যেতেই নিজের রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় প্রশংসা অর্জন করেন। পরের বছর মার্চে তিনি দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদোন্নতি পান। এক মাস পর ১ এপ্রিল তিনি দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি আব্দুস সাত্তার অসুস্থ হলে তিনি ১৯৮৪ সালের ১২ জানুয়ারি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন এবং একই বছরের ১০ মে চেয়ারপার্সন পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে ১ সেপ্টেম্বর দলের চতুর্থ কাউন্সিলে দ্বিতীয়বার, ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তৃতীয়বার এবং ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলের দশম কাউন্সিলে চতুর্থবারের মতো বিএনপির চেয়ারপার্সন হন।
এদিকে বিএনপির দায়িত্ব নেওয়ার পরই নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া। দল ঐক্যবদ্ধ রেখে এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে কোনো রকম সমঝোতা না করেই আপোসহীন আন্দোলন করে গেছেন। ফলে এরশাদের পতন ত্বরান্বিত হয়। ১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া ‘এরশাদ হটাও’ এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। একটানা নিরলস ও আপোসহীন সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিএনপি। বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে প্রথমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বার ও ২০০১ সালে জোটগতভাবে নির্বাচন করে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
অন্যদিক বেগম খালেদা জিয়া দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থায় (সার্ক) দুবার চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনের ইতিহাসে খালেদা জিয়ার একটি অনন্য রেকর্ড হচ্ছে- পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে ২৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সব কটিতেই তিনিই জয়ী হয়েছেন।

সেনাসমর্থিত ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়াকে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর তিনি আইনি লড়াই করে সব কটি মামলায় জামিন নিয়ে মুক্তি পান। কারাগারে থাকাকালে তাকে বিদেশে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি যেতে অস্বীকার করেন।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হন। তার অভিযোগ, বলপ্রয়োগে তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। তিনি ওই বাড়িটিতে ২৮ বছর ছিলেন। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার সেনানিবাসের বাড়িটি তার নামে বরাদ্দ দিয়েছিলেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা হয়েছিল। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার সাজা হয়েছিল। গত ৬ আগস্ট সরকারের নির্বাহী আদেশে তার সাজা মওকুফ করা হয়। একই সঙ্গে গত ২৭ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তিনি খালাস পান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিলের ওপর শুনানি চলছে। সাজা মওকুফের পরও কেন আপিলের উদ্যোগ এমন প্রশ্নে তার আইনজীবীরা বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি এসব মামলা আইনিভাবে মোকাবিলা করে খালাস পেতে চান।

এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে পরের বছর ১১ সেপ্টেম্বর তিনি হাইকোর্টের আদেশে মুক্তি পান। দেশের রাজনীতির ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া একমাত্র নেতা যিনি কখানো কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার না করে আপোষহীন থেকে আপোষহীন নেতার স্বীকৃতি অর্জন করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD