December 29, 2024, 1:58 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
রংপুর ও নীলফামারী জেলায় বিএসটিআই’র সার্ভিল্যান্স অভিযান পরিচালনা কুড়িগ্রাম জেলায় বিএসটিআই’র মোবাইল কোর্ট অভিযানে ১টি প্রতিষ্ঠান সীলগালা পাইকগাছায় ঘরের চালে চালে শোভা পাচ্ছে চাল কুমড়া বাঙ্গালপাড়ায় তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনী পরিচালিত যৌথ অভিযানে খুলনায়  দেশীয় অস্ত্রসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী আটক সাদুল্লাপুরের ইদিলপুর ইউনিয়নের কৃষক দলের আহবায়ক কমিটি গঠন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আখতারুজ্জামান (সিআইপি) এর পক্ষ থেকে জীবননগরে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ উজিরপুরে গভীর রাতে শীতার্থদের মাঝে ইউএনওর কম্বল বিতরন সুজানগরে খাজা স্মৃতি সংঘের উদ্যোগে ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছিল – শেখ ফরিদুল ইসলাম
সুজানগরে জমজমাট শ্রম বেচাকেনার হাট

সুজানগরে জমজমাট শ্রম বেচাকেনার হাট

এম এ আলিম রিপন,সুজানগরঃ পৌষের কাকডাকা ভোর থেকে শ্রমজীবী মানুষের হঁাকডাক। নাটোর,বগুড়া,রংপুর, সিরাজগঞ্জ,কুষ্টিয়া,গাইবান্ধা ও অন্য বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলা থেকে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ এসেছেন পাবনার সুজানগর উপজেলা বিভিন্ন স্থানের শ্রম বেচাকেনার হাটে। সারিবদ্ধভাবে বসে আছেন সড়কের পাশে । এরা প্রত্যেকেই সাথে নিয়ে এসেছেন ব্যাগ অথবা প্লাস্টিকের বস্তায় করে নিজের ব্যবহারের পোষাকসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। প্রতি বছরের মতো এ বছরও পেঁয়াজের চারা রোপনের এ মৌসুমে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুজানগর উপজেলার বোনকোলা,পোড়াডাঙ্গা,দুলাই, মধুপুর, রাণীনগরসহ উপজেলা বিভিন্ন স্থানে বসে এ হাট। অভাবী এসব পুরুষ ও যুবক শ্রমিকদের মজুরিতে বনিবনা হলে মহাজন বা অন্য কাজের জন্য নিতে আসা লোকের পিছু পিছু চলে যাচ্ছেন তাদের বাড়ি। তবে শ্রম বিক্রির হাটে শ্রমিক বেচাকেনার বিষয়ে দরদাম নির্ভর করে বয়সের ওপর। শারীরিকভাবে দুর্বল ও বয়স্কদের দাম যুবকদের তুলনায় কিছুটা কম। স্থানীয়বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২যুগেরও অধিক সময় থেকে পেঁয়াজের চারা রেপনের এই মৌসুমে সুজানগরে শ্রমিক বেচাকেনা হয়ে আসছে। শ্রম বেচতে আসা এসব শ্রমজীবী মানুষ যেদিন শ্রম বিক্রি করতে পারবেনা,সেদিন তাদের রাত কাটে মসজিদ,মাদ্রাসা কিংবা স্কুলঘরের বারান্দায়। কখনো আধপেট বা কখনো উপোষ করে রাত কেটে যায় তাদের। সকাল হতেই আবার শ্রম বিক্রির আশায় ছুটে যান হাটে। কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থেকে সুজানগরের বোনকোলা হাটে শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব আলতাব শেখ। তিনি জানান প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি শ্রম বিক্রির জন্য এ অঞ্চলে আসেন । এ সময় তিনি বললেন তার দুঃখের কথা। মানুষ কিনে নিয়ে গতর খাটিয়ে কাজ করায়, কঠোর পরিশ্রম করার পরও বেশিরভাগ সময়েই খিচুড়ি ও ডাউল দিয়ে খেতে হয়। শোয়ার জন্য যেখানে রাখে সেখানে বৃষ্টির পানি ও কুয়াশা পড়ে। এসব বলতে বলতে আলতাবের দু’চোখের কোণে পানি জমতে থাকে এবং বলেন তারপরও পরিবারের জন্য কিছু টাকা রোজগার করে দিতে পারছেন এটাই শান্তি। এ সময় তিনি বলেন ভাই গরিব হয়ে জন্মাইলে কষ্টের শেষ নাই। নাটোর জেলার লালপুর  থেকে আসা কমল উদ্দিন নামে অপর একজন বলেন নিজ এলাকায় তেমন কোন কাম নেই,তাই আইছি কামে। কিছু টাকা আয় করে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবো এই আশায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করেজ শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই বাড়তি কিছু টাকা রোজগার করে সংসারে সচ্ছলতার আনার জন্য তিনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে থাকেন। তার মত আরো অনেক ছাত্রই দিনপ্রতি ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা করে এবং দিনে দুইবেলা খাবার খাওয়ার মাধ্যমে দিনমজুর হিসেবে এই পেঁয়াজের চারা রোপন করে থাকেন।  এ সময় তিনি আরো বলেন, গত বছর পেঁয়াজ রোপনের মৌসুমে ১৬হাজার টাকা রোজগার করেছিলেন আর এবারের মৌসুমেও ২৪ থেকে ২৮ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবেন বলে জানান । আর এই রোজগারকৃত টাকা দিয়ে এবারে একটি ভাল মোবাইল ফোন,বই ও জামা কাপড় কিনবেন বলেও জানান। শনিবার উপজেলার হাটখালী গ্রামের মধু নামে এক পেঁয়াজ চাষী বলেন, এবারে আমার প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপন করতে মধুপুর হাটে শ্রমিক নিতে এসেছি। এসে দেখি শ্রমিকেরা আগের বছরের মতো দামটা একটু বেশি চায়। অনেকের সঙ্গে কথা বলে তাদের সব খরচসহ প্রতিদিন ৭০০ টাকা করে শ্রমিক নিয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বিল হিসেবে পরিচিত সুজানগর উপজেলার গাজনার বিল সহ এই উপজেলার বেশিরভাগ ফসলি জমিতে নতুন চারা পেঁয়াজ রোপন শুরু করেছেন কৃষকেরা । দেশে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী উপজেলার মধ্যে সুজানগর উপজেলা অন্যতম। এ অঞ্চলের কৃষকদের কাছে এই পেঁয়াজই অন্যতম প্রধান অর্থকারী ফসল এবং এটি তারা জমিতে রোপন করবে আগামী জানুয়ারী মাস জুড়ে । এবারে এই উপজেলায় ১৭হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে নতুন এ পেঁয়াজের চারা রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে । তবে এবারে কৃষকেরা বেশি পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপন করায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা করা হচ্ছে। এবং প্রতি বিঘা জমিতে এই পেঁয়াজের চারা রোপন করতে অন্তত ১২-১৫ জন শ্রমিক প্রয়োজন হবে।

এম এ আলিম রিপন

সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD