January 1, 2025, 11:25 am
ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
পাইকগাছায় ঘরের চালে চালে শোভা পাচ্ছে চুন সাদা চালকুমড়া। ঘরের চালে এ সবজি ফলানো হয় বলে এটি চাল কুমড়া নামে পরিচিত। তবে চাল কুমড়া শুধু চালে নয়, এই সবজি এখন মাচায় এবং জমিতেও চাষ করলে ফলন ভালো হয়। চাল কুমড়া সবজি হিসাবে আমাদের দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। সবুজ কচি চাল কুমড়া তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। শুধু চাল কুমড়াই নয় এর কচি পাতা ও ডগা খাওয়া যায়। বড়ো হলে চুনের মত সাদা চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি, মোরব্বা ও হালুড়া তৈরি করা যায়।
পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাড়ির ঘরের চালে চালে চুন সাদা চালকুমড়া শোভা পাচ্ছে। চাল কুমড়া চাষ করতে ঘরের কোনায় মাদায় গাছ তৈরী করা হয়। ঘরের চালে চাল কুমড়া লাগাতে জমিতে কোন চাষ করা লাগেনা। ঘরের কোনায় পতিত জায়গায় চালকুমড়া গাছ লাগিয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। উপজেলার সরল গ্রামের নিরাপদ মণ্ডল জানান, তার ঘরের কোনায় মাদা করে চারটি চালকুমড়ার বিজ বপন করেছিল। গাছ বড় হয়ে ঘরের চাল ঢেকে যায়। ছয়টি গাছে একশটির বেশি চালকুমড়া হয়েছিল। সবুজ চালকুমড়া ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে। আরও প্রায় ৩০টি চালকুমড়া ঘরের চালে সংরক্ষন করে রেখেছে। কুমড়া বড়ি তৈরির করার জন্য। কুমড়া বড়ি তৈরির চাল কুমড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ছয়টি গাছের কুমড়া থেকে প্রায় আট হাজার টাকার বেশি বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।
দেশে উন্নত ফলনশীল চালকুমড়ার জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। যা বরো মাস চাষ করা যায়।এর মধ্যে বারি চালকুমড়া-১ অন্যতম। হাইব্রিড জাতের বীজও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব জাতের মধ্যে জুপিটার, ভেনাস, নিরালা, বাসন্তি, পানডা, মাধবী অন্যতম। এসব জাতের বীজের গাছ থেকে বারো মাস চালকুমড়া পাওয়া যায়। তাছাড়া নার্সারি থেকে চালকুমড়ার চারা সংগ্রহ করা যায়। চারা লাগানোর দুই মাস পর থেকে গাছে ফলন ধরে।
কুমড়া বা কুমড়ো দুই রকমের হয়, যেমন মিষ্টিকুমড়ো এবং চালকুমড়ো। মিষ্টিকুমড়া ফলজাতীয় সবজি। মিষ্টিকুমড়ার আকার পেটমোটা গোল এবং পাকা অবস্থায় এর ভিতরের অংশ উজ্জ্বল কমলা বর্ণের হয়ে থাকে। জালিকুমড়া এটি সবুজ রঙের হয়। চালকুমড়া পুষ্টিকর একটি সবজি। এতে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার রয়েছে তাই চাল কুমড়ার উপকারিতা অনেক। যক্ষা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস্ট্রিকসহ বহু রোগের উপশম করে চাল কুমড়া। চাল কুমড়া তরকারি হিসেবে খাওয়া ছাড়াও মোরব্বা, হালুয়া, পায়েস এবং কুমড়া বড়ি তৈরী করেও খাওয়া হয়। শুধু চাল কুমড়াই নয় এর কচি পাতা ও ডগাও শাক হিসেবে খাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একরামুল ইসলাম বলেন, বিনা চাষে কম খরচে ঘরের চালে চাল কুমড়া ফলানো যায়। তাই গ্রামের বাড়ির চালে চালে কৃষকরা চালকুমড়ার আবাদ করছে। চালকুমড়া সবজি হিসাবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কৃষকরা চালকুমড়া লাগিয়ে লাভবান হচ্ছে। বাড়ি কোনার পতিত জমি ফেলে না রেখে চালকুমড়া বা মিষ্টি কুমড়া লাগাতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা, খুলনা।