December 29, 2024, 2:25 pm
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে বিএনপি নেতা এ্যাডঃ সুলতানুল ইসলাম তারেকের গাড়ী বহরে হামলার ঘটনার ৮ দিন পর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তানোর থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা করা হয়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের (ইউপি) এক নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সম্পাদক সেলিম রেজা বাদি হয়ে মামলটি করেন। কিন্ত্ত মামলা করার ৭ দিন অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে মামলায় এক নম্বর আসামী করা হয়েছে তানোর পৌরসভার হরিদেবপুর মহল্লার সোহেল রানা (৪২)। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়াও তানোর পৌর যুবলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, আওয়ামী লীগ কর্মী
তৌহিদুল ইসলাম, কামারগাঁ ইউপি যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য তোফায়েল হোসেন এবং কামারগাঁ ইউপি আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টুসহ প্রায় ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-১ (তানোর গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি শিল্পপতি অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের কেন্দ্রীয় বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তানোর থানা মোড়, মুণ্ডুমালা বাজার ও বাধাইড় ইউপিসহ বিভিন্ন এলাকায় পথসভা করার কথা ছিল। সেইমতে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রায় ১৪টি মাইক্রোবাসের শোডাউন নিয়ে তিনি তানোর উপজেলা সদরে আসেন। এদিকে শোডাউনে যোগদিতে যাবার জন্য দুটি মাইক্রোবাস উপজেলা পরিষদ ও ডাকবাংলো চত্বরে দেয়াল ঘেঁষে রাখা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ খবর পেয়ে মাইক্রোবাসে হামলা, ভাংচুর ও মারপিট শুরু করে অজ্ঞাতনামা উশৃংখল কিছু যুবক। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী চলে মারপিট, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ। এতে জনদুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। এঘটনায় দু’পক্ষেরই প্রায় ১০ জন আহত হয়। পরে উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে থানা মোড়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য লিফলেট বিতরণ ও পথসভা করেন অ্যাডভোকেট তারেক।
এ ঘটনায় গত ১৭ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরীর অলোকার মোড়ের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনও করেন তারেকের অনুসারী নেতাকর্মীরা। তারা এই ঘটনার জন্য তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজানকে দায়ী করে মিজান ও তার অনুসারীদের বহিষ্কার দাবি করেন।তবে ঘটনার দিন মিজানুর রহমান মিজান ব্যবসার কাজে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।এদিকে গত ১৮ ডিসেম্বর তানোর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা, তানোর ও মুন্ডুমালা পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে এ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেককে দল থেকে বহিঃস্কারের দাবি করেন।
এবিষয়ে মামলার বাদি সেলিম রেজা বলেন, আসলে তেমনভাবে মামলার আসামীদের কাউকে চেনেন না তিনি। তানোরে তাদের অনুসারী নেতাকর্মীরা যাদের নাম পরিচয় দিয়েছেন, কেবল তাদেরকে আসামী করা হয়েছে। তবে, মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত বলে প্রমান পাবে তাদের বিরুদ্ধেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। এনিয়ে কামারগাঁ ইউপি আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও চেয়ারম্যান সুফি কামাল মিন্টু বলেন, শোনেছি বেশ কয়েকদিন আগে শোডাউন নিয়ে বিএনপির মিজান গ্রুপ আর তারেক গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করি, কিন্তু বিএনপির মাইক্রোবাস শোডাউনে যাবার প্রশ্নই আসেনা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তিনিসহ শুধু আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৫ জন নামধারী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ঘটনার প্রায় সপ্তা খানেক পর বাদির অভিযোগ পেয়ে থানায় মামলা রুজু করা করা হয়েছে। তিনি বলেন, অধিকতর তদন্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।