তানোরে হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কৃষক সমাবেশ ও স্বারকলিপি প্রদান

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের (কোল্ড স্টোর) হিমাগারগুলোতে অযৌক্তিকভাবে আলুর ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কৃষক সমাবেশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তানোর উপজেলা আলু চাষী কল্যান সমিতির উদ্যোগে এবং সমিতির সভাপতি আলহাজ নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক এম রায়হান আলীর সঞ্চালনায় গোল্লাপাড়া বাজার ফুটবল মাঠে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তানোর পৌর বিএনপির আহবায়ক একরাম আলী মোল্লা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সম্পাদক আব্দুল মতিন ও কোষাধ্যক্ষ রাশিদুল ইসলাম কারী।অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন তানোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও আলু চাষী আবু সাইদ বাবু, তানোর পৌর সভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান, আজাহার আলী, তানোর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জুল হোসেন তোফা,আব্দুল মালেক মন্ডল,গোলাম মোর্তুজা, ব্যবসায়ী ও আলু চাষি লিমন,আলহাজ্ব সালাউদ্দিন শাহ্, গোলাম রাব্বানী, হাবিবুর রহমান হাবিব,আফজাল হোসেন ও আহসান হাবিব প্রমুখ। এছাড়াও কৃষক সমাবেশে কয়েকশ’ ব্যবসায়ী ও আলু চাষিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিন কৃষক সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, হিমাগার কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট ও আলু চাষীদের জিম্মি করে অযৌক্তিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। গত বছর হিমাগার গুলোতে প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ছিলো ২৫৫ টাকা। অথচ কোনো পুর্ব ঘোষণা ছাড়াই এবছর অগ্রিম বুকিং স্লিপ কাটার সময় প্রতি বস্তার রেট ধরা হয়েছে ২৮৫ টাকা। তারপরও কৃষকরা কোন প্রতিবাদ করেননি। কিন্তু এখন হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে আলুর ভাড়া দিতে হবে প্রতি কেজি ৮ টাকা। যা চাষি ও ব্যবসায়ীদের প্রতি জুলুম-নির্যাতন-অবিচার। এসময় আলু চাষি কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলেন, স্রিপ কাটার সময় যে রেট ধরা হয়েছে তার বেশী হলে তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।তারা বলেন,ছাত্ররা আন্দোলন করে যদি শেখ হাসিনাকে তাড়াতে পারে,তাহলে আমরা কৃষকেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে হিমাগার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো ইনশাল্লাহ্।
প্রয়োজনে হিমাগার অবরোধ করা হবে।তারা বলেন,আগামী ১৫ জানুয়ারীর মধ্যে হিমাগার মালিকগণ দাবি না মানলে তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন। তারা কৃষক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে আলু ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান।এদিকে সমাবেশ শেষে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও)কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত বছর হিমাগারগুলোতে ৭০ কেজির প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ছিলো ২৫৫ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া পড়ে ৩ টাকা ৬৫ পয়সা। এবছর বুকিং শ্লীপ কাটার সময় রেট ধরা হয়েছে ২৮৫ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া পড়বে ৪ টাকা। কিন্তু এখন হঠাৎ করেই হিমাগার কর্তৃপক্ষ বুকিং শ্লীপ কাটা ব্যবসায়ী ও চাষীদের জানিয়েছেন এবছর আলুর ভাড়া দিতে হবে প্রতি কেজি ৮ টাকা। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন। এটাতো ইংরেজদের নীল চাষের গল্পকেও হার মানায়। তারা এবিষয়ে বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে হিমাগার কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষনার পর পরই আলু চাষী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে,বিরাজ করছে উত্তেজনা। এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোরের আমান (কোল্ড স্টোর) হিমাগারের ম্যানেজার জালাল উদ্দীন বলেন, গত বছর প্রতি ৫০ কেজির বস্তার ভাড়া ছিলো ৩০০ টাকা এবং লেবার খবচ ১৫ টাকা। কিন্তু আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা ৫০ কেজি আলুর পরিবর্তে ৭০ কেজি থেকে ৮০ কেজি করে আলু রেখেছিল। যা সরকারী নিয়ম বহির্ভূত। এবছর সরকার কর্তৃক এবং বাংলাদেশ কোল্ড স্টোর এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আলুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে (৫০কেজির বস্তা) প্রতি কেজি ৮ টাকা। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।#

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *