এম এ আলিম রিপনঃ সুজানগরে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পেলেন ছাত্র আন্দোলনে আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র দীপ মাহবুবের মা চায়না খাতুন। জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় তিনি পাবনার সুজানগর উপজেলার সফল জননী ক্যাটাগরীতে এ সম্মাননা লাভ করেন।সোমবার উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে তার হাতে সম্মাননা স্মারক ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ । বিশেষ অতিথি ছিলেন সুজানগর থানা অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জিল্লুর রহমান, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান, নাজিরগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাদের হোসেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন, সুজানগর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তরের উপজেলা প্রতিনিধি এম এ আলিম রিপন, ছাত্র প্রতিনিধি দীপ মাহমুদ, শেখ রাফি, তাসফিয়া, আশিক ও মানিক প্রমুখ।জানা গেছে, চায়না খাতুনের পড়ালেখার প্রতি ছিল প্রবল অনুরাগ। তিনি পড়ালেখা করার সুযোগ না পাওয়ায় সন্তানদের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে নিজের স্বপ্নপূরণ করার চেষ্টা করেছেন। নিজের লুকানো স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সন্তানদের নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। সন্তানদের পড়ালেখায় উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি যাবতীয় খরচ যুগিয়েছেন। সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের কামারদুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাই এর স্ত্রী চায়না খাতুন ব্যক্তি জীবনে ছয় পুত্র সন্তানের জননী। সন্তানদের মধ্যে শাহীন আলম ও নাহিদ সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। দীপ মাহবুব ও তাওহীদ ইসলাম বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত, সুমন প্রবাসী এবং সুজন নামের অপর ছেলে কৃষি উদ্যোক্তা। জীবন সংগ্রামের গল্প শুনতে চাইলে চায়না খাতুন বলেন, অল্প বয়সে আমার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর সংসারে এসে নানা প্রতিকূলতা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে খুবই চিন্তিত হতাম। কিন্তু কোনদিন হতাশ হইনি। স্বামীর কৃষি কাজের আয় দিয়ে অনেক কষ্টে সংসার পরিচালনা করেছি। এর মধ্যে ২০১৯ সালে আমার স্বামী মারা যান। সন্তানদের সব সময় বুঝিয়েছি শুধু অর্থ উপার্জন করে প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না। লেখাপড়া হচ্ছে স্থায়ী সম্পদ। লেখাপড়া শিখে নিজে আলোকিত হয়ে সমাজকে আলোকিত করা যায়।সন্তানদের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চাই সন্তানরা সমাজ ও দেশের কাজে এসে মানুষের কল্যাণে নিবেদিত থাকুক। নিজের আলোয় সমাজকে আলোকিত করুক। এছাড়া আমার সন্তান ও পুত্রবধূরা নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর নেন। তারা সবসময় ভাল থাকুক এ কামনা করি।
এম এ আলিম রিপন
সুজানগর প্রতিনিধি।

Leave a Reply