খলিলুর রহমান খলিল- নিজস্ব প্রতিনিধি.
তারাগঞ্জ বাজার মাংস হাটিতে অন্যত্র জবাই করা অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে হাবিব নামের এক মাংস বিক্রেতার বিরুদ্ধে।
প্রথম জানা যায়, তারাগঞ্জ মাংস হাটিতে মৃত. গরু জবাই করে সেই মাংস বিক্রি হচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায় গরুটি মৃত. ছিলনা, গুরুতর অসুস্থ্য গরুটি খামার মালিক রাতুল সরকার নিজ বাড়ীতে জবাই করান। অসুস্থ্য গরু জবাই করা সেই মাংস অল্প দামে কিনে বেশি লাভের আশায় অভিযুক্ত কসাই রাত আনুমানিক ১২ ঘটিকায় বস্তা বন্দী করে তারাগঞ্জ বাজার নিয়ে আসে বিক্রির উদ্দেশ্যে। পরে স্থানীয়রা বুঝতে পেরে তারাগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মাংস জব্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন সিদ্ধান্তে খামারের মালিক রাতুল আহমেদ ও তার সঙ্গীয় লোকজনদের দাপটে পুলিশ ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান।
স্থানীয়দের দাবি- জবাই করা পশুর মাংসের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই হাট-বাজারে অবাধে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যত্র জবাই করা গরুর মাংস স্বাস্থ্য সম্মত কি-না, গরু রোগাক্রান্ত থাকায়, তাতে মানুষের ক্ষতিকারক জীবাণু আছে কি-না এমন কোনো কিছুই বোঝার উপায় নেই ক্রেতা সাধারণ।
এমন ঘটনায়, আইন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকা প্রাণীসম্পদ বিভাগের তৎপরতা না থাকায় এমন রোগাক্রান্ত গরুর মাংস খেয়ে প্রতারিত ও আতঙ্কে থাকছেন সাধারণ মানুষ।
উল্লেখ্য যে- চলতি বছরের জুন মাস থেকে শুরু হয় গরুর শরীরে লাম্পি স্কিন রোগ। এতে সারা দেশের ন্যায় এই রোগে গত দুই মাসের মধ্যে পার্শ্ববর্তী বদরগঞ্জ উপজেলায় ৫০০টি এবং তারাগঞ্জ উপজেলায় ৩৪টি গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন তারাগঞ্জ বাজারে ৩০টির বেশি গরু জবাই করে মাংস বিক্রি হয়। রোগজীবানু বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত কি না তার কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষাই হচ্ছে না। এতে আতঙ্কিত অনেক মাংস ক্রেতা।
উপজেলার মাংস ক্রেতা লিমন হোসেন বলেন, ‘আমরা জানি যেখানে পশু জবাই করা হবে সেই স্থানটা হতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং পশু জবাইয়ের আগে রোগজীবানুর পরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র দিয়ে মাংসে সিল দেওয়ার কথা। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে এভাবেই তারাগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী সৈয়দপুরের মানুষ অসুস্থ্য গরুর মাংস খাচ্ছেন কি-না তা বলা মুশকিল।
প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, পশু জবাই করার স্থান পরিষ্কার রাখা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের সাথে কোন কসাই যোগাযোগ করে না। অসুস্থ্য গরু জবাই করে বিক্রির অভিযোগ নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, অসুস্থ্য গরুটি জবাই করার ক্ষেত্রে আমরা কোন সনদ দেইনি। রংপুরের একজন রেজিস্টার প্রাণী সম্পদের ডাক্তার চিকিৎসা করতেন মর্মে জানি।
তিনি আরো বলেন, খামারি রাতুলের পাঠানো অসুস্থ্য গরুর ভিডিও দেখেছি। দেখে মনে হয়েছে গরুটিকে বাঁচানোর কোন উপায় নাই। খামারিকে বলেছি, গরুটির ব্যাপারে আপনি জবাই করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমি তবলীগ জামায়াতে থাকার কারনে সেখানে একজন অফিস স্টাফকেও পাঠিয়েছিলাম।
ওই বিষয়ে খামারি রাতুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গরুটি মৃত না গরুটি গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খামারে জবাই করা হয়, জবাই করার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন যুবদলের রাসেল মন্ডল ছাত্র সমন্বয়ক রাহাত, তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেই বুঝতে পারবেন।
Leave a Reply