November 21, 2024, 4:29 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সুজানগরে দুদকের উদ্যোগে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ নড়াইলে অতিরিক্ত মদ্যপানে দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রীর মৃ-ত্যু পাইকগাছায় তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিপক্ষের মারপিটে নির্মাণ শ্রমিক আহত পাইকগাছার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিএনপির সভাপতি ডাঃ আব্দুল মজিদের মতবিনিময় মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা পাইকগাছায় ঘুঘু দিয়ে ঘুঘু শিকার পীরগঞ্জে ফেসবুকে অপপ্রচার চালিয়ে ব্যবসায় ক্ষতি করার অভিযোগ নেছারাবাদে গলায় ওড়না পেচিয়ে স্কুল শিক্ষার্থীর আত্মহ-ত্যা। ঝিনাইদহে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন ও মানববন্ধন কর্মসূচি নড়াইলের কৃতি সন্তান ডা: মোস্তফা আজিজ সুমন জিয়া ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর নির্বাচিত
পাইকগাছায় ঘুঘু দিয়ে ঘুঘু শিকার

পাইকগাছায় ঘুঘু দিয়ে ঘুঘু শিকার

ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
পাইকগাছায় ঘুঘু দিয়ে ঘুঘু শিকার করছে এক দল শিকারীরা। ঘুঘুর ডাক অধিকাংশ মানুষই পছন্দ করেন। শুধু তাই নয়, এই পাখি দেখতেও বেশ সুন্দর। অথচ এই পাখি শিকারের মতো অপরাধে করতে মানুষ নিষ্ঠুর হয়ে উঠছে। ঘুঘু দেখেছো; ঘুঘুর ফাঁদ দেখনি, এমন প্রবাদ বাক্য আমরা প্রায়ই বলতে শুনি। এবার দেখা মিললো ঘুঘু ও ঘুঘু ধরা খাচার ফাঁদ।
মাংস খাওয়ার জন্য ঘুঘু শিকারের প্রবণতা বেশি। শরীরের শক্তিবৃদ্ধিতে বা দুর্বল পুরুষের সবল হতে ঘুঘুর মাংস খাওয়ার অদ্ভুত এক ধারণা প্রচলিত আছে এ অঞ্চলের কিছু মানুষের মধ্যে। যার কারণে পরিযায়ী পাখির বাইরে মাংস খাওয়ার জন্য ঘুঘু পাখিকেই বেশি শিকার করা হয়।
উপকূলের পাইকগাছাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুঘু দিয়ে ঘুঘু ধারা শিকারিদের তৎপরতা বেড়েছে। সম্প্রতি পাইকগাছায় উপজেলার কপিলমুনি ও গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে শিকারির কাছে ঘুঘু ও ঘুঘু ধরার ফাঁদ দুইয়েরই দেখা মিলেছে।
ঘুঘু ধরার ফাঁদ ও পদ্ধতি বেশ অভিনব। বাঁশের একটি খাঁচার ভিতরে জীবন্ত ঘুঘু পাখি রেখে দেওয়া হয় খাবার। খাঁচাটি জাল ও লতাপাতা দিয়ে জড়িয়ে রাখা হয় যাতে সহজে দৃষ্টিতে গোচর না হয়। যেখানে ঘুঘু পাখির বেশী আনাগোনা বা আবাসস্থল আছে এমন বাঁশঝাড় ও উচু গাছ সংলগ্ন ধান বা সবজি ক্ষেতে পাখির আনাগোনা দেখে লম্বা বাঁশ জোড়া দিয়ে খাঁচাটি পেতে রাখা হয়। শিকারি নিরাপদ দূরত্ব থেকে পর্যবেক্ষণ করে খাঁচাটি। খাচার ভিতর বন্দী ঘুঘু পাখি ডাকাডাকি শুরু করে। সেই ডাকে আশেপাশে বিচরণ করা পাখিরা আকৃষ্ট হয়ে খাঁচার কাছে আসে খাবারের লোভে অথবা বন্দী ঘুঘুকে মুক্ত করতে কিংবা দেখতে। খাঁচার খুব কাছে গিয়ে খাঁচায় পা অথবা ঠোঁট বাড়িয়ে দিলেই জালে জড়িয়ে আটকে যায় ঘুঘু। দূর থেকে শিকারী ছুটে এসে খচার ফাদটি নামিয়ে ঘুঘুটি ধরে ফেলে।
সম্প্রতি উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের সানু ও শহিদুল গাজী, গদাইপুর ইউনিয়নের চেচুয়া গ্রামের করিম গাজীকে ঘুঘু ও ঘুঘু ধরার ফাঁদ নিয়ে শিকারে যেতে দেখা গেছে। কপিলমুনি ইউনিয়ানের শ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক সানু (৬০) কে দেখা যায় শীতের ভোর বেলায় একটি খাঁচায় বন্দী ঘুঘু পাখি নিয়ে ঘুঘু ধরার জন্য যাচ্ছেন। বাঁশঝাড় ও উচুগাছের কাছে ধান ও সবজি ক্ষেতে ঘুঘু ধরার জন্য ফাঁদ পাতবেন। খাঁচাবন্দী ঘুঘু পাখি নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, খাঁচায় বন্দী এই ঘুঘু পাখি দিয়েই ঘুঘু পাখি ধরি। শখের বসে এভাবে পাখি ধরে রান্না করে খান সানু। পাখি শিকার করা অন্যায় জানালে তিনি বলেন, শুনেছি,পাখি পরিবেশের উপকার করে। তবে শখ করে মাঝে মাঝে পাখি ধরি। আর পাকি শিকার করবেন না বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
উপজেলার পরিবেশবাদী সংগঠণ বনবিবি’র সভাপতি সাংবাদিক ও কলামিস্ট প্রকাশ ঘোষ বিধান বলেন,পাখি সহ সকল বন্যপ্রাণী শিকার, হত্যা, লালন-পালন, ক্রয়-বিক্রয় বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন- ২০১২, অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে,শিকারী ও অসাধুদের সতর্ক করতে উপজেলার বিভিন্ন গাছে পাখির বাসার জন্য কাঠের তৈরি বাস্ক, মাটির পাত্র, প্রচার পত্র ও বিল বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। আগে এলাকায় দেখতাম প্রচুর পাখি শিকার হতো। বনবিবি’র বিভিন্ন প্রচার প্রচারণায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন পাখি শিকারের সংখ্যা কমে গেছে। তবে এখনো লুকিয়ে লুকিয়ে গ্রামের কিছু মানুষ মাঝে মাঝে ফাঁদ পেতে ঘুঘু, বক, মাছরাঙ্গা শিকার করেছে। শীতের সময় শিকারিদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। তিনি আরো জানান, পাখি শিকার বন্ধে ও প্রকৃতিতে এর উপকারিতা এবং বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন, এর লঙ্ঘনে যে শাস্তির বিধান আছে সে বিষয়েগুলো নিয়ে প্রচারণা এবং সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে পাখি শিকার পুরোপুরি বন্ধ হবে।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির গুরুত্ব অপরিসীম। পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভা বর্ধনই করে না,পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা করে। পোকামাকড় খেয়ে এরা কৃষকের উপকার করে। উপজেলা প্রসাশন পাখি শিকার বন্ধে সবসময় তৎপর রয়েছে। পাখি শিকার করলে তার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি পাখি শিকার বন্ধে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য সচেতন এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা, খুলনা।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD