ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ধুড় পাচারকারীদের হাতে সোহাগ ও শাহিন নামে দুই গ্রামবাসি আহত হয়েছেন। তাদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। শুক্রবার রাতে উপজেলার কাজীরবেড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। আহতদের মধ্যে সোহাগ হোসেনকে মুমুর্ষ অবস্থায় শনিবার দুপুরে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চারজন ধুড় বিজিবির হাতে আটক হওয়ার পর বিজিবির সোর্স সন্দেহে পাচারকারীরা তাদের কুপিয়ে জখম করে বলে জানা গেছে। মহেশপুর ৫৮ বিজিবি সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে মহেশপুরের পলিয়ানপুর বিওপি’র সদস্যরা ভারতে পাচারের সময় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কুরুনদি গ্রামের প্রতিক সরকার, জয় বিশ^াস, সিলেটের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাদিয়ালিশ গ্রামের মাসুমা আক্তার হ্যাপী ও সিলেটের মাধরপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হালিমা খাতুন নামে ৪ জনকে আটক করে। খবর পেয়ে বিজিবি তাদের আটক করে। এসময় সীমান্তের কাছেই একটি খালে মাছ ধরছিলেন কাজীরবেড় গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে সোহাগ (৩০) ও সাহাবুউদ্দিনের ছেলে শাহিন (২৮)। পাচারকারীদের সন্দেহ এরাই বিজিবি দিয়ে চার ধুড়কে ধরিয়ে দিয়েছে। বিজিবি ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে বাঘাডাঙ্গা গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে মোবারক ও মোমিনের ছেলে মানিকসহ ৩/৪ জন পাচারকারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে সোহাগ ও শাহিনকে খাল পাড়েই কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে নিকটস্থ পলিয়ানপুর বিওপির বিজিবি সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে মহেশপুর হাসপাতালে পাঠায়। আহতদের অবস্থা গুরুত্ব হওয়ায় মহেশপুর থেকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরমধ্যে আহত সোহাগকে ঢাকায় রেফার্ডকরা হয়েছে। এবিষয়ে মহেশপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান কাজল শনিবার বিকালে জানান, বিজিবি সদস্যরা গোপন সংবাদ পেয়ে কাজীরবেড় গ্রামের ব্রিজ এলাকা থেকে চারজন ধুড়কে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরো জানান পাচারকারীদের হামলায় দু’জন আহত হয়েছেন বলেও তিনি জানতে পেরেছেন।
৭ বছর ধরে খেলাধুলা বন্ধ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামের সামনে হাটু পানি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের ক্রিড়াঙ্গন এখন ধ্বংসের পথে। ৭ বছর মাঠে বল গড়ায় না। নেই খেলার কোন প্রতিযোগিতা। ফুটবল, ভলিবল এমনকি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট দীর্ঘদিন বন্ধ। আ’লীগ নেতাদের পদ দখলের কামড়াকামড়িতে ঝিনাইদহ ক্রিড়া সংস্থার নির্বাচন ঝুলে আছে। মামলা জটিলতায় নির্বাচন না হওয়ায় ক্রিড়া সংস্থা এখন এডহক কমিটি দিয়ে চলছে। পেশাদার খেলোয়াড়দের যাতায়াত না থাকায় জেলার একমাত্র বৃহৎ খেলার মাঠ ঝিনাইদহ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামটি খাঁ খাঁ করছে। স্টেডিয়ামের সংস্কার নেই। মাঠের গ্যালারি, ড্রেসিং রুম আর ক্রিড়া সংস্থার অবকাঠামোগুলো রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে চাকচিক্য হারাচ্ছে। স্টেডিয়ামের সামনে এখন হাটু পানি। সেখানে জলকেলি করে হাঁসের দল। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, পেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে বেশ ভালই চলছি ঝিনাইদহ জেলা ক্রিড়া সংস্থা। কিন্তু ১৪ বছর আগে আওয়ামীলীগ নেতারা ক্রিড়া সংস্থা দখল করে নেওয়ায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে খেলার মান। ক্লাব ভিত্তিক খেলার প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালে ক্রিড়া সংস্থায় কাউন্সিলর বানানো নিয়ে যুবলীগ নেতা রাশিদুর রহমান রাসেল ও আ’লীগ নেতা জীবন কুমার বিশ^াসের মধ্যে দ্বন্দ বাঁধে। সেই দ্বন্দ গড়ায় উচ্চ আদালতে। মামলা হওয়ায় স্টেডিয়ামে সব ধরণের প্রতিযোগিতাসহ খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়। খেলেয়াড়দের পরিবর্তে আমলাদের নিয়ে গঠিত হয় ক্রিড়া সংস্থার এডহক কমিটি। এতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে খেলোয়াড়দের মাঝে। এদিকে খেলাধুলা বা বড় ধরণের কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন না থাকলেও ক্রিড়া সংস্থার খরচ থেমে নেই। ২০১৪ সালের ১০ মে থেকে ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত ক্রিড়া সংস্থার জনতা ব্যাংকে জমা হয় মোট ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত ব্যায় হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। অন্যদিকে ঝিনাইদহ সোনালী ব্যাংকে ক্রিড়া সংস্থার আরেকটা একাউন্টে জমা ছিল ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের ১০ জুন দুইটি চেকের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের ওই একাউন্ট থেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই টাকা কোন খাতে ব্যায় দেখিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে তার হিসাব জেলা ক্রিড়া সংস্থায় নেই। দীর্ঘদিন আভ্যন্তরীন অডিট না হওয়ায় ক্রিড়া খাতে বেশুমার লুটপাট হয়েছে এমন অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ। ঝিমিয়ে পড়া ঝিনাইদহের ক্রিড়াঙ্গন নিয়ে জেলার সাবেক ফুটবলার ও বিশিষ্ট ক্রিড়া সংগঠক আহসান উদ্দীন আফাঙ্গীর জানান, ক্রিড়া সংস্থার নেতৃত্ব পেশাদার খেলোয়াড়দের হাতে ফিরিয়ে না দিলে মাঠে প্রানবন্ত পরিবেশ ফিরে আসবে না। তিনি দ্রæত মামলা নিস্পত্তি করে ক্রিড়া সংস্থার নির্বাচন দাবী করেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, ক্রিড়া সংস্থার নতুন কমিটি গঠন হলে কেবল ক্রিড়ায় প্রাণ ফিরতে পারে। এ জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুম চলে গেলে আশা করা যায় বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়াম আবারো প্রানবন্ত হয়ে উঠবে।
আতিকুর রহমান
ঝিনাইদহ।।

Leave a Reply