গোদাগাড়ীতে পাটের বেশী দাম পেয়ে কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক

রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ কয়েক বছর আগে সোনালী আঁশ কৃষকের গলার ফাঁস বলা হলেও নতুন বাংলাদেশ জন্মের পর সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাওয়ায় পাটের সুদিন ফিরে এসেছে। পাটের নায্য মূল্য পেয়ে কৃষকদের চোখে মুখে শুধু হাসির ঝিলিক।
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পাট কেটে পানিতে জাগ দেওয়ার পর পাটের সোনালী আঁশ ছড়ানোর কাজ চলছে পুরোদমে। রোদে শুকানোর পর পাট কৃষকরা আড়তে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছেন।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে গোদাগাড়ীতে পাটের আবাদ হয়েছে ৮ শ’ ৭০ হেক্টর। গত বছর পাট চাষ হয়েছিল ৮শ” ৬০ হেক্টর জমিতে। পাট কাটা প্রায় শেষের পথে। জাগ দেয়ার পর পাটের আঁশ আলাদা করে শুকিয়ে বাড়ীতে রাখছেন কেউ বিক্রিও করছেন। গোদাগাড়ী উপজেলায় পদ্মা নদীর ওই পাড় চরআষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নে এবার বেশী পাটের আবাদ হয়েছে। এ ইউনিয়নে প্রায় ৬শ’ হেক্টোর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এছাড়াও দেওপাড়া, মাটিকাটা, গোগ্রাম ইউনিয়ন, গোদাগাড়ীসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এবার পাটের ভাল আবাদ হয়েছে।
কৃষি অফিস বলছেন গড়ে এবার বিঘা প্রতি ৯ মণ করে পাঠের ফলন হচ্ছে। গোদাগাড়ীর মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের জন্য উপযোগি। এতে করে পাটচাষীরা পাট চাষ করে লাভবান হচ্ছে।
কৃষকরা বলছেন এবার আগাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কোন বিড়ম্বনায় পরতে হয়নি। বৃষ্টিপাত হওয়ায় খাল-বিল, নদী নালা পানিতে ভরপুর রয়েছে। এতে করে ক্ষেত থেকে পাট কাটার পর পাট জাগ দেওয়ার জন্য পরিবহন ব্যয় হচ্ছে না।

পিরিজপুর প্রামের পাটচাষী শামিম জানান, এবার সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে সে পাট চাষ করেছেন। জমির পাট কেটে জাগ দিয়েছেন। তার পাট চাষ করতে বিঘা প্রতি প্রায় ৮ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি তার পাট ৮ থেকে ১০ মন করে ফলন আশা করছেন। এবার লাভবান হওয়ার কারন হিসাবে সে জানায়, শুরুতেই পাটের দাম ভালো, বর্তমানে পাট প্রতি মণ ২ হাজার ৫শ” টাকা থেকে আরো বেশী দরে বিক্রি হচ্ছে।

পাট চাষী সামসুল জানায়, এবার বৃষ্টি হওয়ায় খালে-বিলে পানির অভাব নেই। খালে পানি থাকায় পাট জাগ দিতে তেমন কোন সমস্যা হয়নি। পাট জাগ থেকে তুলে ছড়ানোর পর আঁশের মান ভাল হয়েছে। শুরুতেই পাট ২ হাজার ৮শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। দাম ভাল পাওয়ায় এবার পাটে লাভ হয়েছে। আরো পাট জাগ দেওয়া আছে কয়েক দিনের মধ্যে জাগ থেকে তুলে আঁশ ছড়াবো।
আড়তদার আলমগীর কবির তোতা বলেন, প্রথম থেকেই এবার পাটের দাম রয়েছে। বর্তমানে ২ হাজার ৫শ’ টাকা মণ দরে পাট কিনছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ বলেন, এবার আবহাওয়া পাট চাষর অনুকুলে ছিল। পাটের ফলনও বেশী। প্রথম থেকে কৃষকেরা পাটের দাম ভাল পাচ্ছেন। এতে করে চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। আগামীতে এ উপজেলায় আরো বেশী পাট চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *