সাভারে বহুল আলোচিত জামাল হত্যা মামলার তিন আসামী কারাগারে

হেলাল শেখঃ ঢাকার সাভারে ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদার হত্যা মামলায় ৩ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। 

মঙ্গলবার (২০ আগষ্ট) ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

আজ বিকেলে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হেলাল উদ্দিনের আদালতে হাজির হয়ে উচ্চ আদালতের ৬ সপ্তাহের দেওয়া জামিনের পর স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন ওই ৩ আসামি। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

মামলার আসামিরা হলেন, সাভার পৌরসভার দক্ষিণ রাজাসন এলাকার আব্দুল হামিদ মাওলানার ছেলে ফোরকান হাকিম (৪৮), লোকমান হাকিম (৫১) ও গোফরান হাকিম (৪৫)। প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত কাঞ্চন সিয়ালী ওরফে দ্বীন মোহাম্মদের সম্পৃক্ততা না থাকায় পুলিশের আবেদনের পেক্ষিতে তাকে অব্যাহতি দেন আদালত। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাসা থেকে বের হন নিহত জামাল হোসেন গোলদার।   দক্ষিণ রাজাসন সাইনবোর্ড এলাকার ফোরকান হাকিমের বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। পরে স্ট্রোকজনিত কারণে জামাল হোসেনের মৃত্যুর সংবাদ ছড়ায় আসামিরা। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই জোরপূর্বক জামাল হোসেনকে দাফন করতে বাধ্য করেন ফোরকান হাকিম ও তার লোকজন।

শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় ব্যবসায়ী জামাল হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে মামলার প্রস্তুতি নেয় নিহতের পরিবার। পরবর্তীতে নিহতের ভাই ইমরান হোসেন গোলদার বাদী হয়ে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সাভার মডেল থানাকে নির্দেশ দেন।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দাফনের ২২ দিন পর ৮ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে সাভার পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের আলবেদা বাইতুন নূর জামে মসজিদের সামাজিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে নিহতের ময়নাতদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। 

নিহত জামাল হোসেন দক্ষিণ রাজাসন ঘাসমহল কাইজ্জারটেক এলাকার মৃত ফরিদ আহমেদ গোলদারের ছেলে। তিনি ঢাকার গাবতলী এলাকায় ইঞ্জিন ওয়েলের ব্যাবসা করতেন এবং রাজাসন এলাকার রিয়াদ ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ছিলেন।

জামাল হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) আব্দুল্লা বিশ্বাস জানান, মামলাটির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন আসামির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। এ ঘটনায় আরো কেউ জড়িত  থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও লিগ্যাল সলিউশন চেম্বারের হেড অফ চেম্বারস ও বাদী পক্ষের আইনজীবী আল মামুন রাসেল বলেন- এই হত্যাকাণ্ডের পর আসামিদের ক্ষমতার কারণে থানায় মামলা গ্রহণ করেনি, আমরা আদালতে মামলা করলে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ২২দিন পর লাশ উত্তোলন করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও মেডিকেল রিপোর্টে প্রমাণিত হয় আঘাতের কারণে জামাল হোসেন গোলদার হত্যাকাণ্ডের শিকার। আজ আসামীরা আত্মসমর্পণ করলে আদালত সকল আসামীকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *