আশুলিয়া থানায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক দুই এমপিসহ ১২০ জনের বিরুদ্ধে হ*ত্যা মামলা

বিশেষ প্রতিনিধিঃ কোটা নিয়ে ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যার দায়ে ঢাকা-১৯ আসন (সাভার-আশুলিয়া)-এর সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও তৌহিদ জং মুরাদসহ ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরো অনেককে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামলাটি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আশুলিয়ার বাইপাইলে নিহত আস-সাবুরের চাচাতো ভাই সাহিদ হাসান ওরফে মিঠু। নিহত আস-সাবুর (১৬) নওগাঁর মহাদেবপুর থানাধীন মহাদেবপুর গ্রামের এনাফ নায়েদ ওরফে জাকিরের ছেলে। সে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া এলাকায় পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতো। স্থানীয় শাহীন স্কুলের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো।

উক্ত মামলায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাবেক আরেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো: তৌহিদ জং মুরাদ, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন মাদবর, ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ সুমন ভূঁইয়া, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার, যুগ্ম-আহবায়ক মঈনুল ইসলাম ভু‌ঁইয়াসহ ১২০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়, মামলা (নং ০৭)।

এ মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে আস-সাবুর নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করার জন্য তাদের ভাড়া বাসা জামগড়ার শিমুলতলা থেকে বাইপাইলে যায়। দুপুর ২টার দিকে মামলার বাদী খবর পান তার ভাই আস-সাবুর মৃত অবস্থায় বাইপাইল মোড়ে পড়ে আছে। এমন খবরে লোকজন নিয়ে বাইপাইল মোড়ে গিয়ে তার ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে ও গুলি করপ হত্যা করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই মামলার বাদী সাহিদ হাসান ওরফে মিঠু বলেন, সাবুরের লাশ উদ্ধারের পর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি এ ঘটনার দিন এক থেকে দেড় হাজার বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারী বাইপাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরাসহ অজ্ঞাতনামা আরো আসামীরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীসহ যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে ও গুলি বর্ষণ করেছে। আসামিদের মারপিট ও গুলিতে আস সাবু ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আসামিরা পরস্পরের যোগাযোগসাজশে তার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে গণহারে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। পরে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে গ্রামের বাড়ি মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.এফ.এম সায়েদ জানান, শুক্রবার রাতে ১২০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে গত ৪ ও ৫ আগস্ট ২০২৪ইং আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলায় ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত ও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে আরো অনেকেই, তবে আওয়ামী লীগ থেকে যারা নব্য বিএনপি হয়েছে তারা মিলে গেছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীর সাথে এমন তথ্য জানায় সূত্র। তারা বিভিন্ন বাড়ি ঘর, জমি ও ব্যবসা দখল করছে, এ বিষয়ে আরও তথ্য রয়েছে, ধারাবাহিক পর্ব-১।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *