রাঙ্গাবালীর জেলে পল্লীতে নেই কোরবানির আনন্দ, ঈদ এসেছে দুঃখ নিয়ে

রফিকুল ইসলাম, রাঙ্গাবালী পটুয়াখালীঃ
এক মাসের বেশি সময় মাছ ধরা বন্ধ। এখনো পৌছায়নি জেলেদের জন্য সরকারি সাহায্যের চাল। এর মাঝেই এসে হানা দিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, তছনছ করেছে বসতভিটা। তাই সম্পূর্ণ কর্মহীন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারী জেলেরা। বেকার এসব জেলেদের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। এ অবস্থায় এবারের ঈদ যেন জেলে পরিবারের কাছে এসেছে খুশির বদলে দুঃখ নিয়ে।

বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন রাঙ্গাবালীর জেলেরা। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘ এক মাস ধরে মাছ ধরা বন্ধ। এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে নিবন্ধিত জেলেদের কে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো দেয়া হয় নি, নিবন্ধন না থাকায় সরকারি কোন সহায়তাও পাননা উপজেলার কয়েক হাজার জেলে। তাদের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। এ অবস্থায় ঈদের আনন্দ নেই জেলে পল্লীতে। পকেটে টাকা না থাকায় দৈনন্দিন খরচ নির্বাহ করতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা। কর্মহীন জেলেদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সামান্য কিছু খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হলেও, নিবন্ধন না থাকায় তা থেকেও বঞ্চিত হন অনেক জেলে।

উপকূলের আলমগীর মাঝি জানান, সারাজীবন অন্যের নৌকায় মাছ ধরেছেন। ছেলেরাও ছোটবেলা থেকে জীবিকার অন্বেষণে অন্যের নৌকায় মাছ ধরছে; যা রোজগার হয় সেটাই খরচ হয়ে যায়। অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। বেশি মাছ পড়লে একটু ভালো খাই। কম মাছ পড়লে সমস্যা বেশি হয়। সাগরে অভিযানের কারণে মাছ ধরাই বন্ধ হয়ে গেছে। তার মতো অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে বহু জেলে পরিবার। অনেক জেলে এই কুরবানির ঈদে তার সন্তানদের মুখে এক টুকরো মাংসও তুলে দিতে না পেরে মুখ লুকিয়ে কাঁদবেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানের চাল দেয়ার কারনে জেলেদের চাল আসতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। শীঘ্রই প্রথম কিস্তির চাল জেলেদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।

ইলিশসহ সব ধরনের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০মে থেকে ২৩ জুলাই টানা ৬৫ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তের বঙ্গোপসাগরের সমগ্র এলাকা।

রফিকুল ইসলাম
রাঙ্গাবালী পটুয়াখালী সংবাদদাতা ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *