খ্রিষ্টান নারীকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ের নামে প্রতারণা, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

বাবুল হোসেন,
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে খ্রিষ্টান নারীকে ধর্মান্তরিত করার পর বিয়ের নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠেছে পঞ্চগড়ের এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
নজরুল ইসলাম প্রধান নামের ওই অভিযুক্ত বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে পঞ্চগড় আমলী আদালত-২ এ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগি নারী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগি নারী খ্রিষ্টানধর্মের অনুসারী ছিলেন। স্বামী-সন্তানও ছিলো তার। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহ হলে সুযোগ নেয় অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম। আ. লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার আশ্বাসে ঘনিষ্টতা বাড়ান তিনি। এক পর্যায়ে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে নিজের প্রেমের ফাঁদে ফেলেন এই ইউপি চেয়ারম্যান। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করানো হয় ভুক্তভোগিকে। এরপর বিয়ে করে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দেবীগঞ্জে ভাড়া বাসায় থাকতে শুরু করেন।
ভুক্তভোগি মামলায় উল্লেখ করেছেন, গত ১৫ মে রাতে তাদের পারিবারিক কলহ হলে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম তাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করেন এবং বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমি তোর বৈধ স্বামী নই, আমাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েনি, যেখানে নিয়ে গেছিলাম সেটি কোন কাজী অফিস ছিল না। সেটি ওমরাহ হজ, এয়ার ট্রাভেলস এবং ভিসা প্রসেসিং এর অফিস ছিল। বিয়ের কোন ডকুমেন্ট নেই।’ এই প্রতারণার কারণ জানতে চাওয়ায় ভুক্তভোগিকে মারধর করা হয় বলেও মামলায় উল্লেখ রয়েছে।
ভুক্তভোগি ওই নারী বলেন, আমাকে প্ররোচণা দিয়ে পূর্বের স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে নজরুল চেয়ারম্যান। পরে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে দিনাজপুরে নিয়ে যান, সেখানে আরাফাত নামক হুজুরের মাধ্যমে আমাদের বিয়ে হয়। এরপর থেকেই দেবীগঞ্জে ভাড়া বাসায় আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকতে শুরু করি। তারসঙ্গে বিভিন্ন সময় বিভিন্নখানে তার স্ত্রী হিসেবে গিয়েছি। একসঙ্গে রাতযাপন করেছি। কিন্তু এখন আমাকে অস্বীকার করছে, ভাড়া বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি তার স্ত্রী হিসেবে থাকতে চাই, তারসঙ্গে ঘর সংসার করতে চাই। ন্যায় বিচার পেতে আদালতে মামলা করেছি, এখন বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে আমাকে। আমার কিছু হলে নজরুল চেয়ারম্যান দায়ি থাকবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনের নম্বরে (01717527019) একাধিকবার কল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগির পক্ষে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবির ওসি অথবা পুলিশের পরিদর্শক পদের একজনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভুক্তভোগি ন্যায় বিচার পাবেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *