এবতেদায়ি শাখায় শিক্ষক ৪ ও শিক্ষার্থী নেই

 মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মুসলিমপুর দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ি শাখায় চার জন শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারে শূন্য। ফলে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তালাবদ্ধ থাকছে শ্রেণিকক্ষগুলোও। স্থানীয়রা বলছেন, শিক্ষার মান ভালো না হওয়ায় মাদ্রাসাটিতে শিক্ষার্থী আসছে না।

ঘড়িতে রোববার (৯ জুন) দুপুর ১২ টা। মাদ্রাসার অফিসকক্ষে কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী বসে আছেন। ২-৩ জন ছিলেন দাখিল স্তরের পাঠদানে। তখনও বন্ধ এবতেদায়ি শাখার শ্রেণি কক্ষগুলো। সংবাদকর্মীদের দেখে তড়িঘড়ি করে কক্ষের তালা খোলা হয়। তবে কক্ষের ভেতরে বেঞ্চ ও টেবিল নেই। চোখে পড়েনি ব্লাক বোর্ড। কক্ষের ভেতরের অবস্থা একেবারে বেহাল।

বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের মুসলিমপুর দাখিল মাদ্রাসায় গেলে এমন চিত্র দেখা যায়। এ দিন পুরো মাদ্রাসার উপস্থিতি ছিল মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থী। ২৫ জনই দাখিল স্তরের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির। 

এবতেদায়ি শাখায় কোনো শিক্ষার্থী না এলেও হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দেখানো হচ্ছে ঠিকই। শিক্ষার্থী শূণ্য মাদ্রাসার হাজিরা খাতায় গড় উপস্থিতি ৭০ শতাংশের বেশি। 

জানতে চাইলে মাদ্রাসার এবতেদায়ি শাখার প্রধান আশরাফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান কৃষি কাজের মৌসুম এ জন্য শিক্ষার্থীরা আসছে না। আর আশপাশে অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, সেগুলোতে উপবৃত্তি সুবিধা থাকায় শিক্ষার্থীরা সেদিকে যাচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসে, কিছু দিন ধরে কম আসছে। তবে হাজিরা খাতায় উপস্থিতির বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার এবতেদায়ি শাখায় শিক্ষার্থী নেই। হাজিরা খাতায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের অনেকে অন্যত্র পড়াশোনা করছে। মাদ্রাসা থেকে এ বছর ২৪ জন দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাস করেছে মাত্র ১১ জন। মাদ্রাসায় শিক্ষার মান খারাপ হওয়ায় স্থানীয় শিক্ষার্থীরা এখানে আসতে অনাগ্রহী। শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসামুখী করতে কোনো উদ্যোগও নেই শিক্ষকদের। ফলে পাঠদান ছাড়াই এবতেদায়ি শাখার চার জন শিক্ষক বেতনভাতা তুলছেন। পাচ্ছেন সব সুযোগ সুবিধা।

মাদ্রাসার সহ-সুপার সামছুল আলম পাঠদান করছিলেন দাখিল স্তরের একটি শ্রেণিতে। এবতেদায়ি শাখার এমন বেহাল অবস্থা কেন জানতে চাইলে সবকিছু ঠিকঠাক আছে দাবি করেন। তিনি বলেন, তাদের ছুটি হয়ে গেছে, এজন্য কোনো শিক্ষার্থী নেই। পরে বলেন, মাদ্রাসার সুপার সাহেব ট্রেনিংয়ে আছেন। দুই দিন পরে আসবেন। উনার সঙ্গে কথা বলবেন।

মাদ্রাসার সুপার মকবুল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসামুখী করতে তাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

বোদা উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আবু ওয়ারেশ বলেন, মুসলিমপুর দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ি শাখায় শিক্ষার্থী না থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, শিক্ষার্থী ছাড়া প্রতিষ্ঠান তারা (শিক্ষকরা) কীভাবে চালাচ্ছেন। যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট করা হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *