দত্তনগর কৃষি বীজ উৎপাদন খামারের যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে মাটি চুরির অভিযোগ

শহিদুল ইসলাম,
মহেশপুর সংবাদদাতাঃ-ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী উপজেলার মহেশপুরে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি শস্য বীজ উৎপাদন খামার দত্তনগর কৃষি ফার্ম। এই বৃহত্তম কৃষি বীজ উৎপাদন খামারে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জর্জরিত। যেমন ভূয়া বিল ভাউচার, হাইব্রিড বীজ প্রেরণে অনিয়ম, শ্রমিকের টাকা আত্মাসাৎ, নারী নির্যাতন সহ নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ থাকলেও এবার অভিযোগ উঠেছে দত্তনগর কৃষি বীজ উৎপাদন খামারের অতিরিক্ত দায়িত্ব্যরত যুগ্ম পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে। তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই খামারের মাটি অসৎ উদ্দেশ্যে ভেকু দিয়ে কেটে ট্রাক্টরে করে মাটি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে গত ১৬ই মে বুধবার সকালে গোকুলনগর খামারের অভ্যন্তরে ভেকু দিয়ে ট্রাক্টরে মাটি ভর্তিকরে বিক্রি করার সময় জনতার বাঁধার মুখে তা বন্ধ করে দেন। যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিনের বাড়ি উপজেলার দত্তনগরের পাশে কুশাডাংগা গ্রামে।

পাঁচটি বীজ উৎপাদন খামারের মধ্যে একটি খামার কুশাডাংগা বীজ উৎপাদন খামার্, খামারের ভিতরে বাড়ী হওয়ায় তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশি মতো খামার পরিচালনা করে থাকেন। গোকুলনগর গ্রামের হামিদ এ প্রতিবেদকে বলেন কামরুজ্জামান শাহিন এখানে যোগদানের পর থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়েছেন। তিনি গোকুল নগর ফার্ম থেকে প্রায় ১২০ গাড়ি মাটি বিক্রি করেছেন। যার প্রতি গাড়ি মাটির মুল্য ১৮০০ টাকা।

তিনি আরও বলেন এলাকার মানুষ বাঁধা দিলে তিনি হুমকি ধামকি দেন, পরে জনতার বাঁধার মুখে তিনি মাটি কাটা বন্ধ করেন। স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি বলেন উনি খামারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে খামার গুলিতে রামরাজত্ব কায়েম করেছেন। উনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে থাকেন, স্থানীয় হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উপ পরিচালক বলেন উনার কাছে সকল অনিয়মই নিয়ম। উনার গাড়ীতে প্রতি সপ্তাহে ৫০ লিটার তেল দিতে হবে , এছাড়া ইচ্ছা মতো শ্রমিক ছাটাই, শ্রমিকদের হাজিরা কর্তন, এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে থাকেন। শুধু হয়রানি নয় চরম ভাবে অপমান অপদস্তও করে থাকেন। তিনি শ্রমিকদের হাজিরা নিজের ইচ্ছা মতো ভূয়া মাস্টার রোল তৈরি করতে উপ পরিচালকদের বাধ্য করেন এবং নিজে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও খামার পাড়ায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শতভাগ শ্রমিকের হাজিরা ব্যাংক একাউন্টে দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তিনি বিভিন্ন অজুহাতে তা এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়ন হতে দেননি বলে জনশ্রুতি আছে। একটি পরিপত্রে যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিন কে বদলী করা হয় এবং দত্তনগর খামারের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। যশোর সারে দায়িত্ব প্রাপ্ত রোকনুজ্জামান কে অদৃশ্য শক্তির বলে তিনি রোকনুজ্জামান কে দায়িত্ব বুঝে না দিয়ে এখনো দায়িত্ব পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
যুগ্ম পরিচালক রোকনুজ্জামান এ প্রতিবেদনকে জানান তিনি দায়িত্ব নিতে গিয়েছিলেন উনাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এমনকি এখনো পর্যন্ত দত্তনগর খামারের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব আছেন উনাকে নতুন করে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি। এসব বিষয়ে অভিযুক্ত যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমি মাটি বিক্রি করেনি আমার বাগানে মাটি ভরাট করছিলাম পারলে নিউজ করেন। সরকারি মাটি নিজের বাগানে ভরাট করতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন নিউজ করে আমাকে কিছুই করতে পারবেন না।
তিনি খামারে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই দীর্ঘদিন অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে নিজস্ব বলাই তৈরী করে নিজের খেয়াল খুশি মতো কাজ চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে জিএম সীড দেবদাস শাহার সাথে কথা বললে তিনি বলেন বিষয়টি শুনলাম অভিযোগ পেলেই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *