নেছারাবাদে শেখর শিকদার হত্যার প্রধান আসামী চেয়ারম্যান মিঠু সহ গ্রেফতার-৮

আনোয়ার হোসেন,
নেছারাবাদ উপজেলা প্রতিনিধি//

নেছারাবাদে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদার-কে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার সহ পনের জনকে নামীয় আসামী করে থানায় মামলা করা হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি(বুধবার) নিহতের স্ত্রী মালা রানী মন্ডল ইউপি চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারকে প্রধান আসামী করে থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় মামলার দুই নম্বর আসামী শংকর সরকার সহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত বাকি আসামীরা হলেন, বাবুল হাওলাদার,তাপশ মজুমদার,স্বাধীন হালদার। তারা সবাই কুড়িয়ানা গ্রামের বাসিন্দা। এদিকে জেলা পুলিশ সূত্রে আরো জনা যায় সাতক্ষীরা এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি মিঠুন চেয়ারম্যান সহ আরো চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপ। বাকি আসামীদের অতি শ্রীগ্রই গ্রেফতার করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন পিরোজপুর পুলিশ সুপার মো. শরিফুল ইসলাম(পিপিএম)।

বুধবার সকালে নেছারাবাদ থানা কম্পাউন্ডে এক প্রেস ব্রিফিং করে তিনি এসব তথ্য জানান। পুলিশ বলেছেন নিহতের ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসা না পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারন বলা যাবেনা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শেখর কুমার সিকদার ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্য ইউপি নির্বাচন সহ পূর্ব বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন ৩০ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকালে শেখর কুমার সিকদার কুড়িয়ানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্রীড়ানুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করতে কুড়িায়ানা বাজারে পৌছান। এসময় পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার সহ নামীয় আসামীরা শেখরকে ঘিরে মারতে থাকে। একপর্যায়ে মিঠুনের সাথে থাকা শংকর তার স্বামীকে কাঠ দিয়ে পিছন থেকে আঘাত করে। এসময়, মিঠুনের সাথে থাকা জহির মেম্বর শেখরকে কিল ঘুষি মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়। এরপর প্রধান আসামী মিঠুন হালদার সহ সাথে থাকা আসামীরা শেখরকে লাথি কিল ঘুষি মেরে নিস্তেজ করে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। শেখরকে উদ্ধার করে নেছারাবাদ হাসপাতালে নিয়ে আসলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

পিরোজপুর পুলিশ সুপার প্রেসব্রিফিং এ জানান, ক্রীড়ানুষ্ঠানে দাওয়াত কার্ডে নাম রাখা নিয়ে সাবেক ও বর্তমান দুই ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্য কুড়িয়ানা বাজারে বসে বাকবিতন্ডতা হয়। এক পর্যায়ে উভয়েরম মধ্য হাতাহাতি শুরু হয়। অভিযোগে জানতে পেরেছি, এসময় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদারের মাথার নিচের দিকে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারের সাথে থাকা শংকর সরকার শেখর সিকদারকে পিটান দেয়। এরপর পূনরায় শেখর সিকদারকে কিল ঘুষি মারে। শেখর সিকদারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। বিষয়টি জানার সাথে সাথে ওই দিনই প্রাথমিক অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার নিহত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদারের স্ত্রী মালা রানী মন্ডল বাদী হয়ে ১৫ জন নামীয় আসামী সহ আরো ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় মামলা করেছেন। ইতোমধ্য চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্য মামলার বাকীদের গ্রেফতার করা হবে। গ্রেফতার অভিযান চলমান। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসা না পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারন বলা যাবেনা।

সকালে পিরাজপুরের পুলিশ সুপার মুোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করন। এসময় এলাকাবাসীর এক সমাবশে আইন হাতে তুলে না নেয়া এবং পুলিশক সহযাগীতা করার আহান জানিয় বক্ততা করন তিনি। বিকালে পিরাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. জায়েদুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগর সম্পাদক কানাইল লাল বিশ্বাস, উপজলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক সহ জলা-উপজলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করন।

এদিকে ময়না তদন্ত শেষে শেখর সিকদার এর মরদেহ কুড়িয়ানায় নিয়ে আসা হয়। এবং হাজার হাজার লোকের উপস্থিত প্রর্থনা শেষে তার নীজ বাড়িতে সমাহিত করা হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *