জাকিরুল ইসলাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৬ আসনের বিভিন্ন এলাকার চায়ের আড্ডার সঙ্গে জমে উঠেছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা। ভোটারদের আলোচনায় উঠে আসছে শিবলী সাদিকের নাম। বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট উপজেলা নিয়ে এ আসন গঠিত। এবারের নির্বাচনে এ আসনে আ’লীগের মনোনয়ন পেয়েছে বর্তমান এমপি শিবলী সাদিক।
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও শিবলী সাদিককে দিনাজপুর-৬ আসনে আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। সংসদ নির্বাচনে সে সময় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অনেকে নির্বাচিত হলেও শিবলী সাদিক জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে এমপি নির্বাচিত হন।
সরেজমিনে এ আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বলেছেন এ প্রতিবেদক। তারা জানান, নির্বাচিত হবার পর শিবলী সাদিক তার নির্বাচনী ৪টি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। শুধু তাই নয় মসজিদ, কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ, ব্রীজ, কালভার্ট রেকর্ড পরিমাণ নির্মাণ করেছেন। অনেক স্কুল কলেজের নতুন ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও পুরাতন ভবনের বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া ৪টি উপজেলায় ৪ টি সরকারি কলেজ, ৪ টি উচ্চ বিদ্যালয়’কে সরকারি করণ, ৪টি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, মডেল মসজিদ নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণ, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ ও ৪টি ৩১ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নতি করণ করেছেন। এছাড়াও ৪ উপজেলায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবা, স্বামী নিগৃহীত ও প্রতিবন্ধীদের শতভাগ ভাতার আওতায় এনেছেন। ৮৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ১০৬ কিলোমিটার দূরত্বের দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ কাজটিও তারই অবদান।
উন্নয়নের পাশাপাশি তিনি বন্ধ করেছেন অনিয়ম-দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ বাণিজ্য। নিশ্চিত করেছেন কাজের জবাবদিহিতা। করেছেন সরকারি বরাদ্দের সুষম বণ্টন। আর এসব কারণেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা নৌকায়, ভোটারদের আস্থায় শিবলী সাদিক।
ষাটোর্ধ্ব কৃষক বিনয় কুমার সরকার জানান, দিনাজপুর-৬ আসনে ইতোপূর্বে অনেক এমপি ছিলেন। কিন্তু সবাই বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিলেও অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। তবে শিবলী সাদিক এমপি হয়েই অভাবনীয় উন্নয়নের মাধ্যমে সত্যিই দৃশ্যপট পরিবর্তন করে দিয়েছেন। করোনাকালেও তিনি জনগণের পাশে ছিলেন। গত ১০ বছরে তিনি যে উন্নয়ন করেছেন আমার ৬০ বছর বয়সে তা দেখিনি। তাই আবার নৌকায় ভোট দেবো।
অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সামছুল মন্ডল বলেন, আমাদের এলাকায় পাকা রাস্তা হবে বা এতো উন্নয়ন হবে, আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি। কিন্তু শিবলী সাদিক এমপি হওয়ার পর আমরা আশাবাদী হয়ে উঠেছি। এখানেই অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে তার পার্থক্য। কারণ এলাকার মানুষ যে সব বিষয় নিয়ে ভাবে তার সবই তো তিনি পূরণ করে দিচ্ছেন।
পঞ্চাশোর্ধ্ব সমাজসেবক ফজলুল হক বলেন, ‘একটা সময় এদিকে উন্নয়ন বলতে কিছুই ছিল না। রাস্তাঘাটের জন্য কেউ পাকা বাড়ি করার সাহস করতো না। শিবলী সাহেব এমপি হওয়ার পর রাস্তাঘাট উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের জীবনধারাও পাল্টে গেছে। গ্রামে বসবাস করে আমরা পাচ্ছি শহরের সুযোগ-সুবিধা।
নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। জরিপ চালিয়ে এলাকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় লোকটিকে তিনি মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আগেই বলেছেন, কারো চেহারা দেখে মনোনয়ন মিলবে না। জনপ্রিয়তা দেখে মনোনয়ন দেয়া হবে। নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমার জনপ্রিয়তার প্রমাণ পেয়েছেন বলেই নেত্রী আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন। আমরা নির্বাচন করছি মানুষের উন্নয়নের জন্য। বিগত দিনে আমার নির্বাচনি এলাকায় উন্নয়ন করেছি বলেই জনগণ কাজ দেখে নৌকায় ভোট দেবেন।’
ভোটারদের উদ্দেশে শিবলী সাদিক বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। দেশের উন্নয়ন চাই। দেশকে একটা শক্তিশালী অর্থনৈতিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই উন্নয়ন দেখে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন আপনারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আ’লীগকে বিজয়ী করবেন। গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ নৌকায় আস্থা রেখেছে। আগামীতেও আস্থা রাখবে বলে আশা করছি।
এদিকে, আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক এমপি আজিজুল হক চৌধুরী, জাসদ থেকে শাহ আলম বিশ্বাস, তৃণমূল বিএনপি থেকে মোফাজ্জল হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনেওয়াজ ফিরোজ শুভ শাহ।
জাকিরুল ইসলাম জাকির
বিরামপুর, দিনাজপুর।

Leave a Reply