নড়াইলে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শিশুসন্তান হত্যার দায়ে মা পুলিশের হাতে গ্রে*ফতার

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে//
নড়াইলে চাঞ্চল্যকর শিশু হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন এবং আসামি গ্রেফতার। গত ২৭ নভেম্বর (২০২৩) নড়াইল সদর থানাধীন ৪নং আউড়িয়া ইউপির লস্করপুর সাকিনের মোঃ মিলন মোল্যা ও মোসাঃ মৌসুমী খানম দম্পতির ১ মাস ২৭ দিন বয়সের শিশু সন্তান মোঃ আরাফ মোল্যা এর লাশ তাদের বসতবাড়ির উত্তর পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে ছোট পুকুরের পানিতে পাওয়া যায়।উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, এ বিষয়ে মৃত শিশু সন্তানের বাবা মোঃ মিলন মোল্যা বাদী হয়ে গত (২৯ নভেম্বর) নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হৃদয় বিদারক ও মর্মস্পর্শী এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান নির্দেশনায় জেলা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত তদারককারী অফিসার তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) এর তত্ত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাব্বিরুল আলমের নির্দেশনায় ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম মোসাঃ মৌসুমী খানম (২৪)কে গ্রেফতার করেন। অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিজ শিশুসন্তান হত্যার দায়ে নিজ মা গ্রেফতার হন। আসামি মোসাঃ মৌসুমী খানমকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
মামলার তদন্তে জানা যায় যে, শিশু আরাপ জন্মের পর থেকেই তার শ্বাসনালী ছোট হওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতো এবং দুধ খেতে গেলে বুকে দুধ বাঁধতো। মাঝেমাঝে বমিও করে দিতো। বাচ্চাটির অনেক ঠান্ডা জনিত সমস্যাও ছিল। যে কারণে তাকে সবসময় চিকিৎসকের চিকিৎসার মধ্যে রাখা হতো।ঘটনার দিন শিশু আরাপ তার মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার সময় হঠাৎ তার মুখ হা হয়ে যায়, শিশু টি চোখ বড় বড় করে তাকায় এবং কিছুক্ষণ পর তার শরীর নীল হয়ে যায়। তখন আরাপের মা মৌসুমী ভেবেছিল তার বুকে মনে হয় দুধ বাঁধছে। এরপর তিনি তার বাচ্চাকে সোজা করে ঝাকাঝাকি করতে থাকেন। তার মাথায় ফুঁ দেন। কিন্তু শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন তিনি শিশুটির পালস্ চেক করে দেখেন যে, শিশুটি মারা গেছে। শিশু আরাপের মা মোসাঃ মৌসুমী খানম কি করবে বুঝে উঠতে পারেন না। তার স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের কি বলবে এই ভেবে ভয় পেয়ে যায়। তারপর তিনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এবং স্বামীর ভয়ে তার মৃত শিশু সন্তানকে রাতের আঁধারে সকলের অগচরে বাড়ির পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে পুকুরের ভিতর নিজ শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে আসেন। এরপর বাড়িতে এসে সবাইকে বলেন যে, তার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জীন- পরী শিশুটিকে নিয়ে গেছে বলে গল্প সাজায়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *