পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে যৌতুকের দাবিতে খাদিজা আক্তার রিয়া (২১) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় আদালতে তার স্বামীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা হয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট খাদিজা আক্তার রিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন: আবু বক্কর সিদ্দীক (২৮), নফিজুল ইসলাম (৫২), রহিমা খাতুন (৫০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২৭ জুলাই ২০২১ সালে সদর উপজেলার ডুডুমারী এলাকার নফিজুল ইসলামের ছেলে আবু বক্করের সাথে হাড়িভাসা ইউনিয়নের পাইকানীপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে খাদিজা আক্তার রিয়ার সাথে ইসলামী শরীয়াত মোতাবেক বিয়ে হয়। এসময় মেয়ের ভবিষ্যত সুখের কথা চিন্তা করে সাধ্য মতে উপহার সমগ্রী ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে রিয়ার বাবা।
দাম্পত্য জীবন প্রতিপালন কালে তাদের একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। রিয়ার বাবা বর্তমানে মালয়েশিয়ার প্রবাসী শ্রমিক হিসাবে কর্মরত।
আবু বক্কর পঞ্চগড় সদর উপজেলার মোলানীপাড়ায় রুহুল আমিনের বাসায় বসবাস করাকালীন অবস্থায় রিয়া এবং তাদের মেয়ের সঠিক ভাবে কোন খোঁজ-খবর রাখতো না। সংসারের খরচ দেওয়ার জন্য বললে কোন গুরুত্ব দিত না এবং সংসারের প্রতি অনিহা প্রকাশ করতো।
রিয়ার মা রওশনারা বেগম এসব কথা জানতে পেরে রিয়ার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে জানালে আবু বক্কর রিয়াকে জানিয়ে দেয় তোমার বাবা মালয়েশিয়ায় প্রচুর অন উপার্জন করে আমাকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিলে আমি সংসার করবো।
রিয়া তার বাবার প্রবাস জীবনে কষ্টের টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে আবু বক্করের বাবা মায়ের
প্ররোচনায় ও উস্কানিতে পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক আদায়ের জন্য নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়ায়। কিছুদিন পরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে রিয়ার মুখে ও নাকে কিলঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে সন্তানসহ ভাড়া বাসা হতে বের করে দেয়।
পরবর্তীতে ২৪ আগস্ট রিয়ার বাবার বাড়িতে আপোষের জন্য বৈঠক বসলে আবু বক্কর জানিয়ে দেয় পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক ছাড়া আলোচনা করে লাভ নাই। এসময় আবু বক্করের বাবা বলে উঠে রিয়াকে মেরে হাসপাতালে ভর্তি করিলে যৌতুকের টাকা আদায় হইবে। তাদের এসব কথার প্রতিবাদ করলে আবু বক্কর এবং তার মা যৌতুকের দাবীতে এলোপাথারী মারপিট করে। এসময় রিয়ার মা বোন তাদের কাছ হইতে রিয়াকে রক্ষা করে। পরবর্তীতে রিয়ার অবস্থা বেগতিক দেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করিয়া চলে যায়। এসময় রিয়ার চিকিৎসার জন্য তার মা, বোন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
রিয়া জানান, বিয়ের পর থেকেই আবু বক্কর, তার বাবা ও মাসহ যৌতুকের জন্য প্রতিনিয়তই তার ওপর শারীরিক নির্যাতন করে আসছিলেন। ৫ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে।তিনি এর সুষ্ঠু বিচার চান।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আবু বক্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোন ধরেননি
এ বিষয়ে রিয়ার আইনজীবী এডভোকেট রাশেদ জানান, গত ২৭ আগস্ট ভিকটিম রিয়া নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল আদালতে তার স্বামীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আশা করা হচ্ছে, আদালতের মাধ্যমে ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পাবেন।
মো. বাবুল হোসেন, পঞ্চগড়।
Leave a Reply